স্কুলে দুষ্টুমি করায় প্রাথমিক শ্রেণির ছাত্রদের মেরে কান দিয়ে রক্ত বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষককে নাম সজল দেব। এর আগেও এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষক নেশাগ্রস্থ অবস্থায় ছিলেন বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। ঘটনার পূর্নাঙ্গ তদন্তের জন্য এসআই কে নির্দেশ দিলেন ডি আই। জানা গেছে জলপাইগুড়ির জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের ভোটপট্টির আর আর প্রাথমিক বিদ্যালয়। মঙ্গলবার দুপুরে স্কুল চলাকালীন কয়েকজন ছাত্র দুষ্টুমি করছিল। তাদেরকে দুষ্টুমি করতে দেখে বেধড়ক মার দেয় স্কুলের শিক্ষক সজল দেব বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।
মারের ফলে আঘাত লাগে বাচ্চাদের কান ও ঘাড়ে। আর এতেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে দুই ছাত্র। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তড়িঘড়ি দুই ছাত্রকে নিয়ে আসা হয় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। চিকিৎসক দেখার পর হাসপাতালে ভর্তি করে নিয়েছে।
জানা গেছে এক ছাত্রের নাম রাজু রায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। অপর এক ছাত্রের নাম অনিমেষ বসাক সে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। অভিযুক্ত শিক্ষক তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন শিক্ষা সেলের সাথে যুক্ত হওয়ায় তার এই ধরনের বেপরোয়া মনোভাব বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
ছাত্রের মা জ্যোৎস্না রায় বলেন, এই শিক্ষক প্রায়শই বাচ্চাদের মারধোর করে। ভয়ে স্কুলে আসতে চায়না বাচ্চারা। আমরা বুঝিয়ে শুনিয়ে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাই। আজ আমার ছেলে সামান্য দুষ্টুমি করেছিল। শিক্ষক মারে। আঘাত লাগে কানে। রক্ত বেরিয়ে যায়। খবর পেয়ে আমি স্কুলে গিয়ে বাচ্চাকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে এলাম। আমি শিক্ষকের শাস্তি চাই। বাচ্চা সুস্থ হোক পরে লিখিত অভিযোগ করবো।
অপর ছাত্রের কাকা উত্তম বসাক বলেন এই শিক্ষক বাচ্চাদের খুব মারে। উনি স্কুলে নেশা করে আসেন। আজ আমার ভাইপোকে বেধরক মেরেছে। ভাইপো স্কুলে অসুস্থ হয়ে যায়। আমরা জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে এলাম। ডাক্তার দেখে ভর্তি করে নিয়েছেন। আমি শিক্ষকের শাস্তি চাই।
খবর পেয়ে ঘটনার পূর্নাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিলেন ডি আই প্রাইমারি শ্যামল চন্দ্র রায়। এই প্রসঙ্গে এবিপিটিএ’র জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক বিপ্লব ঝা বলেন, ‘আমরা শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীরা আমাদের সন্তানসম। তারা দোষ করলে যেমন অভিভাবকরা শাসন করেন যেমন অস্বাভাবিক নয়। ছাত্র-ছাত্রীরা দোষ করলে খুব শিক্ষিকারা শাসন করবেন এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু মেরে কান ফাটিয়ে দেওয়া এটা অমানবিক ঘটনা। শিক্ষকদের এ ধরনের অমানবিক আচরণ করা যুক্তিযুক্ত নয়। শুনেছি অভিযুক্ত শিক্ষক এর বিরুদ্ধে এর আগেও এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে আমরা চাই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক। ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকদের সুসম্পর্কের মধ্য দিয়ে স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসুক’।
এই ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের না হলেও, অসুস্থ ছাত্রদের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে চিকিৎসার পর অভিযোগ দায়ের করবেন তারা।
Comments :0