বইকথা
নতুনপাতা
ডাকাতের ঢুলি
প্রদোষকুমার বাগচী
তোমাদের জন্য মজাদার বই —
প্রতিবারের মতো এবারেও তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি নতুন একটা গল্পে বই। বইয়ের নাম ডাকাতের ডুলি। বুঝতেই পারছ এই বইটাতে বড় বড় ডাকাতের হাড় হিম করা গল্প রয়েছে। নানা ধরণের ডাকাত। একটা গল্পের নাম ডাকাতে বামুন। ডাকাতে বামুন গল্পটাও বেশ মজার আর কৌতূহলের। এখানে চক্রবর্তী বামুন যে কি করে ডাকাত হলো তার গল্প এটি। তবে চক্রবর্তী বামুন আজ আর নেই। তিনি বহুদিন আগেই মারা গেছেন। সেখানে এখন যারা থাকেন তারা সকলে সেই বামুনকে না চিনলেও নাম শুনেছেন। এটা পড়া শেষ হলে তোমরা আরও গল্প এই বইতে পাবে। যেমন ধর ধর্মের কল। অন্য আর একটি গল্পের নাম পিছুডাকের ফল। পিছু ডাকতে গিয়ে কি সর্বনাশই না হয়েছিল একবার। এমনিতে কথায় আছে পিছু ডাকতে নেই। পিছু ডাকা খারাপ। এই বইতে পিছু ডাকের ফল নামে যে গল্পটি লেখা হয়েছে সেটিও তোমাদের সকলের ভালো লাগবে—এটা আমার বিশ্বাস। এখানেই শেষ নয়, আরও আছে, একটার নাম আলেয়া, অপরটির নাম রমেশের আক্কেল সেলামী। নামেই বুঝতে পারছো গল্পগুলি বেশ মজাদার হবে।
আমি ডাকাতের ডুলি গল্পটির কথা বলছি। ওটাই প্রথম গল্প। এখানে একজন ডাক্তার, তার নাম হরি, তিনি চালদাপুরের জঙ্গলে যাচ্ছেন পাল্কি করে এক অসুস্থ রোগীকে দেখতে। পাল্কি করে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। সন্ধের পর ভয়ে পালকি বাহকরা যেতে চাইছেন না জঙ্গলের মধ্য দিয়ে আর। এই সময় এক ডাকাত তার সাকরেদ নিয়ে হাজির। ডাক্তার বাবুর কাছ থেকে ডাকাতি করে সব টাকা পয়সা তারা কেরে নেবে বলে ঠিক করে তারা এসেছিল। কিন্তু ডাক্তারবাবুই বা কম যান কি। তিনি বেশ মেজাজ দেখিয়ে একটা ডাকাতকে দিয়ে তাঁর ওসুধের বাক্স বইয়েছিলেন। শেষে ডাকাত ও তার সাকরেদগুলোকে বোকা বানিয়ে বলেছিলেন যে তাঁকে এভাবে ডাকাতি করার মানে হয়না। তিনি তার কাছে যা আছে সব দেবেন। যদি রোগী দেখতে তিনি পারেন। ডাকাতরাই সেই কথা শুনে তারাই রোগীর কাছে ডাক্তারবাবুকে নিয়ে যাবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেন।এই সময় তারা একটা ডুলিতে বসিয়ে ডাক্তারবাবুকে নিয়ে এগোচ্ছিলেন। হঠাৎ একদল পুলিশ তাদের পথ আটকে দাঁড়িয়ে পড়েছিল। পুলিশের অফিসার ডাক্তারবাবুকে চিনতে পেরে খুব খুশি হয়েছিলেন। বললেন একজন নামকরা ডাকাত তিনি ধরতে এসেছেন। সেই ডাকাতরা তাঁকে পাল্কি করে নিয়ে আসছিলেন। তাদের মধ্যে যে দলের মাথা তাকেই তিনি ধরতে এসেছেন। ডাক্তারবাবু সেটা বুঝতে পেরেও পুলিশের হাতে তুলে দেননি। এই ঘটনায় ডাকাতরা অবাক হয়ে গিয়েছিল। তার ডাক্তার বাবুর বাড়িতে গিয়ে ঋণ শোধ করে এসেছিল উঠানের মধ্যে বিরাট মাছ রেখে দিয়ে এসে। তারপর সেই ডাক্তারের কথাও এখন কেউ জানেনা। ডাকাতরাও সব মারা গেছে। তাহলেও ডাকাতের ডুলির কথাটা আজও সেই এলাকার মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে।
বইটির নাম ডাকাতের ডুলি।
লেখক— খগেন্দ্রনাথ মিত্র।কল্লোল। ৫৭ এ কারবালা ট্যাঙ্ক লেন, কলকাতা ৭০০ ০০৬।কুড়ি টাকা।
Comments :0