PINARAI VIJAYAN CAA

স্বাধীনতার লড়াইয়ের ঐতিহ্যের বিরোধী সিএএ, বলছেন বিজয়ন

জাতীয়

উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে ভারতের গৌরবজনক লড়াইয়ে অংশ নিয়েছিলেন সব ধর্মে বিশ্বাসী মানুষ। এমনকি যাঁরা কোনও ধর্মেই বিশ্বাসী নন, তাঁরাও যোগ দিয়েছিলেন। তাঁরা লড়াই করেছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের জন্য। ফলে ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে কারও নাগরিকত্বের আবেদন খারিজ হতে পারে না। স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহ্য সিএএ-কে অনুমোদন করে না। নির্বাচনের জন্য নয়, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা, বামপন্থীদের কাছে, দেশের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র বজায় রাখার জন্য। 
সংবাদ প্রতিষ্ঠান ‘দ্যা হিন্দু’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এভাবেই সিপিআই(এম)’র অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। কেরালায় সর্বত্র সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ’র বিরুদ্ধে সমাবেশ করছে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট। সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য বিজয়ন বলেছেন, ‘‘বিজেপি-কে নরম হিন্দুত্বের নীতি নিয়ে পরাজিত করা যায় না। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থান নিতে পারলে বিজেপি-কে পরাজিত করা সম্ভব।’’
পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছে বিজেপি। সিএএ’র বিরোধিতায় নেমে আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বিজয়ন বলেছেন, ‘‘কোনও সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়ের বীজ বপন আমরা করছি না। বরং, আরএসএস এবং বিজেপি তাদের হিংসা এবং ঘৃণা ছড়ানোর নীতিতে ভারতীয় সমাজের বিভিন্ন অংশে ত্রাস তৈরি করছে। সিএএ চালু করে শঙ্কা তৈরি করছে বিজেপি-আরএসএস। এক অংশকে অন্য অংশের থেকে আলাদা করতে চাইছে, বিভাজন তৈরি করছে সমাজে।’’ 
কেরালায় বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের বিরোধী কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ জোটও। বিজেপি রাজ্যে ২০২১’র বিধানসভা ভোটে কোনও আসন পায়নি। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি’র প্রচারেরও কেন্দ্রে রয়েছে বিজয়নকে ঘিরে আক্রমণ। কেরালায় একাধিক জনসভাও করছেন প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদী। 
এক প্রশ্নে বিজয়ন মনে করিয়েছেন যে সিএএ’র বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন দায়ের করেছে কেরালা সরকার। মূল নাগরিকত্ব আইনকে বদলাতে আনা সংশোধনীকে অসাংবিধানিক ঘোষণার আবেদন জানানো হয়েছে। 
বিজয়ন বলেছেন, ‘‘সিএএ সংবিধানের মূল কাঠামোর পরিপন্থী। সেই কারণেই এই আইনকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে আদালতে। বিচারবিভাগের মতামতের অপেক্ষা করা হচ্ছে।’’
কেরালা সরকার ঘোষণা করেছে যে সিএএ রাজ্যে প্রয়োগ করা হবে না। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে বিজয়ন বলেছেন, ‘‘আদালতকে জানানো হয়েছে। কোনও আইন, অসাংবিধানিক তো বটেই সংবিধান বিরোধীও, তাকে প্রয়োগ করা সম্ভব কিভাবে।’’
কেরালায় প্রচারে জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতি গড়ে তোলার ওপর জোর দিচ্ছেন বামপন্থীরা। শিক্ষা এবং তথ্য প্রযুক্তির বিকাশে বাম গণতান্ত্রিক সরকারের ভূমিকার উল্লেখ করা হচ্ছে। বিজয়ন বলেছেন, ‘‘শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের মাপকাঠিতে কেরালা সারা দেশের মধ্যে এগিয়ে। একাধিক মানবোন্নয়ন সূচকে কেরালা উন্নত দেশগুলির সঙ্গে পাল্লা দেয়। আমাদের রাজ্যে দেশের বহু জায়গা থেকে অতিথি শ্রমিকরা কাজে আসেন। তাঁরাও তুলনা করে দেখছেন যে নিজের রাজ্যের তুলনায় ভালো শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা পাচ্ছেন তাঁরা এবং তাঁদের পরিবার। আয়ও এখানে বেশি হচ্ছে তাঁদের। আমরা জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতি এবং উদ্ভাবনী সমাজের দিকেই এগোচ্ছি।’’

Comments :0

Login to leave a comment