Nandakumar Police Atrocity Protest

নির্যাতনের নন্দকুমারেই মিছিল ৩ জানুয়ারি

রাজ্য জেলা

Nandakumar Police Atrocity Protest শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী এবং নিরঞ্জন সিহি

আবাস যোজনায় ঘরের দাবিতে জানিয়ে বিডিও’কে ডেপুটেশন দিতে গিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। বিডিও ডেপুটেশন নেননি। উলটে নৃশংস আক্রমণ চালিয়েছে পুলিশ। ঘরে দাবিতে মিছিলে যাওয়ায় চুলের মুঠি ধরে মারা হয়েছে মহিলাকে, কাপড় টেনে নেওয়া হয়েছে, পাঠানো হয়েছে জেলে। সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদককে পার্টি দপ্তর থেকে মারতে মারতে টেনে-হিঁচড়ে নেওয়া হয়েছে থানায়। তাতেও প্রতিবাদ দমবে না। ৩ জানুয়ারি ফের মিছিল হবে নন্দকুমারে। 

শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা করেছেন সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ। এদিন কলকাতায় মুজফ্‌ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। সবিস্তারে পুলিশের নির্যাতনের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি। 

শনিবারই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে সারা রাজ্যে। সেলিম বলেছেন, ‘‘নতুন বছরেও চলবে লড়াই। মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলবে লড়াই। দুর্নীতি লুকাতে পুলিশকে নামানো হয়েছে সর্বত্র। আদালত ভুয়ো নাম বাদ দিচ্ছে, তবু নির্লজ্জ সরকার। তবে লাঠি, জেল, ভুয়ো মামলা দিয়ে ঠেকানো যাবে না।’’ চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘রাস্তাতেই দেখা হবে। আমরা তৈরি। শাসক যেন তৈরি থাকে।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘সিহিকে যেভাবে তুলে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ, অপরাধীর সঙ্গেও তা করা যায় না। মানবাধিকার, আইন কোনও কিছুরই পরোয়া করতে নারাজ পুলিশ। এ চলতে পারে না।’’ 

শুক্রবার নন্দকুমার ব্লকের মানুষকে নিয়ে আবাসে নামের দাবিতে সিপিআই(এম) মিছিল করে বিডিও দপ্তর অভিমুখে। বিডিও , জয়েন্ট বিডিও ডেপুটেশন নেননি। অথচ কর্মসূচি আগে থেকে জানানো হয়েছিল। সারাদিন মানুষ ডেপুটেশন দেওয়ার জন্য বসে ছিলেন দপ্তরে। সন্ধ্যে নামলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে পুলিশ বাহিনী। লাঠি, চুলের মুঠি, মহিলাদের বিবস্ত্র করার চেষ্টা সবই চালিয়েছে পুলিশ। দূরে পার্টি দপ্তরে ঢুকে লাঠি চালায় পুলিশ, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। জেলা পরিষদের দু’বারের সভাধিপতি সিহিকে মারতে মারতে বাইরে আনা হয়। তারপর ধাক্কা দিতে দিতে নেওয়া হয় থানায়। বিক্ষোভকারীদের অনেককেই জেলে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের মারে আহত হয়েছেন অনেকে।  

 

পার্টি নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, দোষী পুলিশদের শাস্তির জন্য আদালতেও যাওয়া হবে। সিহি জানিয়েছেন, ৩ জানুয়ারি মিছিল ফের যাবে বিডিও দপ্তরে। যাওয়া হবে থানাতেও। থাকবেন আইনজীবীরা। মিছিলে যোগ দেবেন সুজন চক্রবর্তী, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনাদি সাউ, আইনজীবী এবং সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্যও। সিহি বলেছেন, ‘‘কত মারতে পারে আমরা দেখব। কত গ্রেপ্তার করতে পারে আমরা দেখব। আবাস যোজনার কারচুপিতে জবাবদিহি করতে হবে প্রশাসনকে। স্বচ্ছ তালিকা প্রকাশ করতেই হবে। গরিবকে দিতেই হবে ঘর।’’ 

সেলিম বলেছেন, ‘‘কোন আদালতের নির্দেশে, কোন পরোয়ানা নিয়ে পুলিশ ঢুকেছিল পার্টি দপ্তরে জবাব দিতে হবে। দোষী পুলিশদের শাস্তি চাই। আদালতে জবাবদিহি করতে হবে প্রশাসনকে।’’ 

এদিন খুঁড়িয়ে কোনোক্রমে চলছিলেন নিরঞ্জন সিহি। কাল পুলিশের নির্যাতনের পর শরীরের একদিক অবশ হয়ে যায়। কলকাতায় তাঁকে আনা হয়েছে চিকিৎসার জন্য। তিনি বলেছেন, ‘‘পুলিশ জেনেশুনে এই হামলা চালিয়েছে। কলার ধরে, ঘাড় ধরে পিটানো হয়েছে। এ ঘটনা বর্বরোচিত।’’ প্রশাসনিক কাজে দীর্ঘদিন, পার্টির জেলা সম্পাদক এবং পার্টিনেতারা পুলিশের কাছে অজানা নন। তা উল্লেখ করে সিহি ওসি মনোজ ঝা সহ তিন পুলিশকর্মীর নাম করে বলেন, এরাও থাকবে, আমরাও থাকব। বেলাগাম দুর্নীতি বিরোধী লড়াই চলবে। জেলায় বাড়ি বাড়ি প্রচার হবে।’’

Comments :0

Login to leave a comment