Economic Survey

খাদ্যের দাম বাড়লেও সরকার দায়ী নয়, দাবি অর্থনৈতিক সমীক্ষায়

জাতীয়

দামে উঁচু হারের জন্য নাকি সরকারের দায় নেই। অর্থনৈতিক সমীক্ষা রিপোর্ট পেশ করে এমনই দাবি করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
ফৌজদারি অপরাধের দায় থেকে কর্পোরেটকে ছাড়েও কৃতিত্ব দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রীর। ৬৩টি আইনের বিলোপ এবং দণ্ডনীয় অপরাধের আওতা থেকে বাদ দেওয়ায় নাকি বিনিয়োগকারীদের ভরসা বেড়েছে। 
প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা সরকারের ঘরে জমা না দিলে কড়া শাস্তির সংস্থান বাতিল করেছে কেন্দ্র। ফৌজদারি অপরাধের আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে শ্রমিকবিরোধী এই কার্যকলাপকে। তাকেই ‘সহজে ব্যবসা’-র পক্ষে ইতিবাচক পদক্ষেপ বলছেন অর্থমন্ত্রী। 
সংসদের বাদল অধিবেশনে এই অর্থনৈতিক সমীক্ষা রিপোর্ট সোমবার পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। মঙ্গলবার পেশ করবেন বাজেট। 
সরকারের হিসেবে দেখা গিয়েছে খাদ্যে দাম বৃদ্ধির হার টানা ১০ শতাংশের কাছে। সমীক্ষার ব্যাখ্যা, বিশ্ব উষ্ণায়ন বা দেরিতে বর্ষার মতো বিষয়ের জন্য শস্য উৎপাদন কমছে। তার জন্য বাড়ছে দাম।
সরকারের এমন ব্যাখ্যায় যদিও বিভিন্ন অংশের তীব্র ক্ষোভ রয়েছে। ক্রেতা মূল্য সূচকের নিরিখে জনসাধারণের রোজকার কেনাকাটার বাজারে খাদ্যসামগ্রীর দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে। ২০২২ অর্থবর্ষে এই সূচকের নিরিখে খাদ্যদ্রব্যে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৩.৮ শতাংশ। ২০২৩ অর্থবর্ষে এই হার হয় ৬.৬ শতাংশ। ২০২৪ অর্থবর্ষে এই হার হয়েছে ৭.৫ শতাংশ। খাদ্যদ্রব্যে মূল্যবৃদ্ধির হারের পরিবর্তন হয়েছে ৯৭ শতাংশ কেবল গত দু’বছরে।
বাজারেও দেখা গিয়েছে তরিতরকারি বা সবজির দাম চড়া। চাল, ডাল, গমের মতো দানাশস্যে দামের হার বেড়েই চলেছে। বাজারে চালের গড় দাম কেজি-তে ৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। রান্নার তেলের দাম কেজি-তে ১০০ টাকার ওপরেই। খাদ্যের বাজারে বড় ব্যবসায়ীদের অবাধ ঘোরাফেরাকে দায়ী করছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। এই ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য মজুতের ঊর্ধ্বসীমা আইন কার্যত তুলে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
কিন্তু অর্থনৈতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, সমানে তাপপ্রবাহ, অসময়ে বর্ষা, অকাল বর্ষণ, শিলাবৃষ্টি, শুষ্কতার কারণে ফলন মার খেয়েছে। ফলে দাম বাড়ছে। বলা হয়েছে, সবজি এবং ডালের উৎপাদন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টমাটোর দাম ২০২৩’র জুলাইয়ে বেড়েছে আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে। উত্তর ভারতে সময়ের আগে বর্ষা চলে আসায় ফলন মার খেয়েছে। 
পেঁয়াজের দাম বৃদ্দির জন্যও দায়ী করা হয়েছে অকাল বর্ষণকে। বলা হয়েছে, মাঠ থেকে ফসল তোলার সময়েই বর্ষা চলে আসে। শীতকালীন পেঁয়াজ চাষ মার খায়। আবার খরিফ মরশুমে বর্মার খামখেয়ালিপনায় বীজ রোপনে দেরি হয়েছে। ডালের উৎপাদন কমে যাওয়ার জন্যও জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছে সমীক্ষা। 
সমীক্ষা রিপোর্টে স্বীকার করা হয়েছে যে দুধের দামও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। তার জন্য গৃহপালিত জন্তুর কৃত্রিম প্রজননে ঘাটতিকে দায়ী করা হয়েছে।     

Comments :0

Login to leave a comment