JANA AJANA — TAPAN KUMAR BIRAGYA / NATUNPATA - 20 October

জানা অজানা — ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রথম শিক্ষাগুরু / নতুনপাতা

ছোটদের বিভাগ

JANA AJANA  TAPAN KUMAR BIRAGYA  NATUNPATA - 20 October

জানা অজানা / নতুনপাতা

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রথম শিক্ষাগুরু
তপন কুমার বৈরাগ্য

ঈশ্বরচন্দ্রের বয়স তখন মাত্র পাঁচ বছর।
বড্ড দূরন্ত হয়েছেন।কারো বাগানে আম, কারো
বাগানে পেয়ারা ,কারো বাগানে কলা চুরী করতে
সে ওস্তাদ।পাঁচ বছর বয়সে এরকম দূরন্ত বালক
পৃথিবীতে কোথাও খুঁজে একটাও পাওয়া যাবে না।
আর হবেই বা না কেন?নবজাতক বিদ্যাসাগরকে
দেখে গণৎকার বলেছিলেন' এই ছেলে ষাঁড়ের
মতন একগুঁয়ে হবে। তবে সত্যবাদী,সৎ,যশস্বী 
হবেন।
ছেলের বয়স পাঁচ বছর হলো।ছেলে গ্রামের
পাঠশালায় পড়তে যেতে চায় না।কারণ গুরুমশায়
খুব রাগী। রাগী গুরুমহাশয় ঈশ্বরচন্দ্রের একদম
পছন্দ নয়। ছেলের একটা গুণ ছিলো উল্টো
কথা বললে সে সোজা কথা ধরতো আর সোজা
কথা বললে সে উল্টো কথা ধরতো।বাবা ঠাকুরদাস একজন রাগী গুরুমহাশয় ঠিক করলেন।যিনি
ঈশ্বরকে জব্দ করতে পারবেন।


যিনি ছিলেন কুলীন ব্রাহ্মণ।নাম কালীকান্ত
চট্টোপাধ্যায়। কালীকান্ত কিন্তু এই দুধের বাচ্চার
ভয়ানক দুষ্টুমির কথা শুনেছেন।কখন কি করে
বসেন--তাই ঈশ্বরকে পড়াতে কিছুতেই রাজী
হলেন না।ঠাকুরদাসও ছাড়ার পাত্র নয়।
একপ্রকার জোর করেই তিনি তাকে রাজী করালেন।
গুরুমহাশয় ঠাকুরদাসের বাড়িতেই পড়াতে আসতেন।
প্রথমদিনেই ঈশ্বরের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পেলেন।
তিনি বুঝলেন এই ছেলে বাঙলার মুখ একদিন
উজ্জ্বল করবেন।তাঁর নাম ইতিহাসের পাতায়
স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।দেখতে দেখতে তিন
বছর কেটে গেল। যে বয়সে ছেলেমেয়েদের
সাধারণতঃ হাতে খড়ি হয় সেই বয়সে ঈশ্বর 
পাঠশালার সব পাঠ শেষ করে ফেললেন।


কালীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ঈশ্বরকে নিজের জীবনের
চেয়েও বেশী ভালোবাসতেন। তাইতো কালীকান্ত
একদিন ঠাকুরদাসকে বললেন--এই বালককে
আমার সব শিক্ষা দেওয়া হয়ে গেছে ।এবার
একে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে কোনো ভালো
প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে দিন।ঠাকুরদাস কালীকান্ত
বাবুকে খুবই শ্রদ্ধা করতেন।তাই তাঁর কথা মতো
১৮২৮ সালের নভেম্বর মাসের এক শুভদিনে
কালীকান্তবাবু,ঠাকুরদাস,একজন ভৃত্য ও ঈশ্বর
কলকাতার উদ্দেশ্যে হেঁটে পাড়ি দেন ঈশ্বরের
পরবর্তী শিক্ষাজীবনে প্রবেশের জন্য। 

Comments :0

Login to leave a comment