পরাধীন ভারতে জন্মেছিলেন কমরেড জ্যোতি বসু। স্বাধীনতার জন্য লড়েছিলেন। ইংরেজ শাসনে দুর্ভিক্ষ দেখেছিলেন। কমিউনিস্ট পার্টি তখন ছোট। কিন্তু সব শক্তি নিয়ে আর্ত, দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল পার্টি। কঠিন সময়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল সেই চ্যালেঞ্জ তিনি গ্রহণ করেছিলেন। অবস্থার পরিবর্তন করেছিলেন। জ্যোতি বসুর জীবন থেকে এই শিক্ষা নিতে হবে আমাদের।
সোমবার জননেতা কমরেড জ্যোতি বসুর ১১১তম জন্মবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানে নিউ টাউনে আলোচনা সভায় এই কথাতেই কিংবদন্তী কমিউনিস্ট নেতাক স্মরণ করেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এদিন কমরেড জ্যোতি বসুকে স্মরণ করে রাজ্যের নানা প্রান্তে হবেছে অনুষ্ঠান।
নিউ টাউনে জ্যোতি বসু সেন্টার ফর সোশাল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ প্রাঙ্গণে ‘প্রসঙ্গ জ্যোতি বসু’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়। সভাপতিত্ব করেন এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা বিমান বসু। বক্তব্য রাখেন চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ। তিনি জ্যোতি বসুকে নিয়ে তথ্যচিত্রেরও নির্মাতা। সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন শ্রোতাদের কাছে। ছিলেন প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক এবং সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব।
অনুষ্ঠানে যোগ দেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র ডোম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, শমীক লাহিড়ী, সিপিআই(এম) নেতা গৌতম দেব, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী, পার্টি রাজ্য কমিটির সদস্য দেবাশিস চক্রবর্তী, অতনু সাহা।
সেলিম বলেন, ‘‘সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশ নিয়েছেন জ্যোতি বসু। সেই পরাধীন ভারত আর নেই। যে উত্তাল গণআন্দোলনের তরঙ্গশীর্ষে জননেতা হয়েছিলেন আজ তা নেই। আজ বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যে আসীন নয়। এটি বাস্তবতা কমরেড জ্যোতি বসুকে স্মরণ করা মানে এই বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়া।’’
সেলিম বলেন, ‘‘তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়েই নিজেদের অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করতে হবে। বাধা কাটিয়ে উত্তরণ যাতে ঘটাতে পারি তার জন্য নিজেদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।’’
গৌতম ঘোষ জানিয়েছেন যে জ্যোতি বসুর কাছে তথ্যচিত্রে প্রস্তাব নিয়ে গেলে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর এই কাজে সহায়তা করতে পারবেন। গোড়ায় নিজেকে নিয়ে তথ্যচিত্রেই আপত্তি ছিল।
ঘোষ বলেন, ‘‘বারবার আলোচনায় দেখেছিলাম তাঁর কথায় ব্যাখ্যায় দ্বান্দ্বিকতা সব সময় রয়েছে। একজন মার্কসবাদীর থেকে আমরা সেই প্রত্যাশাই করি।’’
তথ্যচিত্রের কাজে বাংলাদেশে জ্যোতি বসুর সঙ্গে পারিবারিক বাসস্থানে গিয়েছিলেন চিত্র পরিচালক। তাঁর স্মৃতিচারণ, ‘‘বাংলাদেশে গিয়ে যেন একেবারে ছেলেমানুষ হয়ে গিয়েছিলেন জ্যোতি বসু। ছোটবেলার গল্প শোনাতেন।’’
জ্যোতি বসুর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা শ্রোতাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন দুই বক্তাই। সেলিম যেমন বলেছেন বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার পর হায়দরাবাদের অভিজ্ঞতা। তখন কারফিউ জারি রয়েছে। সেনা নামানো হয়েছে। পরিস্থিতি দেখতে এক সেনাকর্তার সঙ্গে কথা বলেছিলেন তখন। তিনি ছিলেন পাঞ্জাবের লোক। সেলিমকে সেই সেনাকর্তা বলেছিলেন, অন্য সবাই আগুন লাগায়। ‘জ্যোতি বাসু কা পার্টি আগ বুঝাতা হ্যায় (আগুন নেভায়)।’
JYOTI BASU BIRTH ANNIVERSARY
‘কঠিন সময়ের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, অবস্থা বদলে ছিলেন’
×
Comments :0