MAMATA BANERJEE 21 JULY

সব জেলা, সব ব্লকে জয়, মমতার ভাষণে ইঙ্গিত ডায়মন্ড মডেলের

রাজ্য

রবিবার ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে তৃণমূলের নেতা ও মন্ত্রীদের সঙ্গে মমতা ব্যানার্জি।

অনিন্দ্য হাজরা
ধর্মতলার সভা থেকে বিধানসভার প্রস্তুতি শুরু করার নির্দেশ দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। মমতা বলেছেন, ‘‘আমাদের সব জেলা, সব ব্লক চাই। যেখানে জিতিনি, মানুষের কাছে গিয়ে ক্ষমা চান। আগামীদিনে সেখানেও জিততে হবে।’’
মমতার এই নির্দেশে ‘ক্ষমা চাওয়ার’ কথা থাকলেও, কোথাও তৃণমূলকে তা করতে দেখা যায়নি। চোপড়া বা আড়িয়াদহেও নয়। ফলে, নিজের কায়দাতেই ভোটের ‘প্রস্তুতি’ নেবে তৃণমূল, নিশ্চিত সংশ্লিষ্ট সব অংশ। 
লোকসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে বিধানসভার উপনির্বাচনে একাধিক বুথে তৃণমূলের ভোটের হার ৮০ থেকে ৯০ শতাংশে ঘোরাফেরা করেছে। দেখা যাচ্ছে, ভোট জেতানোর জন্য তৈরি দুষ্কৃতীচক্রই জনতার ওপর অত্যাচারে জড়িত। ফলে সব জেলা বা গ্রাম চাওয়ার লক্ষ্যেও অংশকে বাদ রেখে পৌঁছানো অসম্ভব বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।  
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছেন, ‘‘আমরা চাই মানুষের সামাজিক বন্ধু হতে চাই। নিজে গিয়ে মানুষের দরখাস্ত লিখে দেব। কারোর বিরুদ্ধে যেন দল কোনও অভিযোগ না পায়। আমি চাই দল গরিব থাকুক। আমরা লোভী হতে চাই না। এই কাজ করে গেলে কেউ সরাতে পারবে না।’’
মমতার ভাষণে আবার ‘সারে জাঁহাসে আচ্ছা’ গান নজরুল ইসলামের বলে উল্লেখ করেছেন মমতা ব্যানার্জি। এ গান মহম্মদ ইকবালের। মঞ্চ থেকে সংশোধনের চেষ্টা করলে ধমকও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মঞ্চে ছিলেন দলের অন্যতম নেতা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জিও। তাঁর ‘ডায়মন্ড হারবার মডেল’ বারবারই আলোচিত হয়েছে রাজ্যে। আলোচিত শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর নামও। ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’ নামে সংস্থার সিইও’র আয় এবং তার উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আদালতেও। 
লোকসভা নির্বাচনে ব্যাখ্যায় মমতা বলেছেন, ‘‘মিডিয়ার একমুখী ভূমিকা, এজেন্সি, তার পরেও বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএমকে হারিয়েছি। মানুষ ছাড়া কেউ নয়। ইডি-সিবিআই’র থেকে বেশি শক্তি মানুষের।’’ তিনি বলেন, ‘‘যত জিতব, তত নরম হতে হবে। তৃণমুল মানে সেবার কর্মী। আমি বিত্তবান নয়, আবেগসম্পন্ন, বিবেকবান কর্মী চাই।’’ 
নির্বাচন প্রসঙ্গেই মমতা বলেছেন, ‘‘মালদায় আম এবং আমসত্ত্ব আমরা ’২৬ সালে পাব।’’ উল্লেখ করেছেন, লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ জেলায় জয়ের। মুর্শিদাবাদে ভোটের আগে রামনবমী নিয়ে উত্তেজনা এবং বিজেপি-তৃণমূল যৌথ প্রয়াসে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের অভিযোগে সরব বিরোধীরা।
ভোটে ‘সব জেতার’ ভাষণ বিরোধীশূন্য রাজনীতির বার্তাকেই স্পষ্ট করেছে বলে মত বিভিন্ন অংশের। বিরোধীদের, বিশেষ করে, বাম এবং কংগ্রেস জয়ী হলে কাজ করতে না দেওয়া, হেরে যাওয়া পঞ্চায়েতে দল ভাঙিয়ে বা ভয় দেখিয়ে জয়ী হওয়া বা প্রশাসনিক বৈঠকে তাহেরপুর পৌরসভার প্রধানকে না ডাকার মতো উদাহরণও উঠে আসছে আলোচনায়। 
ডায়মন্ড হারবারেই পৌরসভা বা পঞ্চায়েতে বিরোধীশূন্য করার একাধিক উদাহরণ দিয়েছে বামফ্রন্ট। বিধানসভায় সর্বত্র এই মডেল অনুসরণের ডাক শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে।

Comments :0

Login to leave a comment