নতুনপাতা
বইকথা
ল এ লিমেরিক
প্রদোষকুমার বাগচী
এবারও তোমাদের জন্য রইল লিমেরিকের মজা
লিমেরিক যে কি জিনিস সেকথা তোমাদের আগেরবার বলেছি। লিমেরিক হলো পঞ্চপদী ছড়া। প্রথম দুলাইন একই রকম, পরের দুলাইন অপেক্ষাকৃত ছোট আর শেষ লাইনটি অপেক্ষাকৃত বড়। অবশ্য শুধু এভাবে বললেই যে লিমেরিক কি জিনিস তা বুঝিয়ে দেওয়া যায়, ব্যাপার অত সহজ নয়। তবে লিমেরিকে যে মজা আছে, বক্রোক্তি আছে, ব্যঙ্গ আছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কত বড় বড় মানুষ যে লিমেরিকের ছন্দে মেতে উঠেছেন তার হিসাব দেওয়া ভার। এই বইটিও একটি লিমেরিকের বই। নামটাও বেশ বেশ সুন্দর, ‘ল এ লিমেরিক’। হ্যাঁ এটাই বইটির নাম। অর্থাৎ আমরা যেমন অ এ অজগর, আ এ আম বলি, এই বইটিও তেমনি। বইটির নাম লিমেরিকের সঙ্গে বেশ মানানসই। আর ছবিও বেশ মজাদার ও নজরকাড়া। একসঙ্গে পঞ্চাশোর্ধ বিখ্যাত কিছু ছড়াকার ও কবির লেখা লিমেরিক সংকলিত হয়েছে এতে। জানতে চাও কারা লিখেছেন লিমেরিকগুলি? তাহলে বলছি শোন— শঙ্খ ঘোষ, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, পবিত্র সরকার, ভবানীপ্রসাদ মজুমদার, দীপ মুখোপাধ্যায়, সুখেন্দু মজুমদার, মৃণালকান্তি দাশ, পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ। শঙ্খ ঘোষের মতো মানুষ তোমাদের জন্য কি লিখে রেখেছেন দেখো—
মা বলেছে আমার নাকি অঙ্কে তেমন মাথা নেই
পড়তে বসলে গরম মাথা ঢাকব তেমন কাঁথা নেই
এমন কেন হয় বলোতো
তোমারও কি এসব হতো?
আমার তো মাথার মধ্যে আস্ত একটা পাঁঠা নেই।
কি বেশ মজা পেলে তো। সঙ্গে রয়েছে একটি সুন্দর ছবি। এই বইয়ের অন্য লেখাগুলি দেখলেও তোমাদের যে ভালো লাগবে আমি তা হলফ করে বলতে পারি। প্রতিটি ছড়ার সঙ্গে রয়েছে মজাদার ছবি। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী লিখেছেন—
লোকটার ভয় ছিল পুলিশের ডাক্তার
কাশীর ষণ্ড আর মথুরার পান্ডার
ঘরে খিল দিয়ে ভাবে
নিরাপদে থাকা যাবে
অথচ গিন্নিটিও অতিশয় থান্ডার।
শেষে এই বইয়ের সংকলক সৈকত কুণ্ডু কি লিখেছে যাক দেখা
দেখছি বসে কত কিছুই কান্না-হাসির ঘুলঘুলি
আমার ভিটের ধান খেয়েছে আমার পোষা বুলবুলি
দ্বেষপ্রেমে জ্বলছে কী
চোখটি বুজে দেখছোনি
টাকলু রাজার সিংহাসনে তুলছে ফণা চুলখুলি।
সবশেষে বলি অপূর্ব এই সব লেখা গুলি তোমাদের হাতে তুলে দেওয়া দরকার। তোমরা এই লিমেরিকগুলি পড়ে দেখো তোমরা আনন্দ পাও কিনা। বইটির অপূর্ব প্রচ্ছটি করেছেন তৌসিফ হক। অলঙ্করণ করেছেন পার্থ মৈত্র।
এবার তোমাদের বইটির নাম ঠিকানা বলে দিচ্ছি—
ল এ লিমেরিক
সম্পাদনা সৈকত কুণ্ডু। সত্যার্থী প্রকাশনী, দীনেশ সরণি, উত্তর দুর্গানগর, কলকাতা— ৬৫। ৪৫ টাকা।
Comments :0