নতুনপাতা | বইকথা
টার্জানের কথা
প্রদোষকুমার বাগচী
আজ তোমাদের টার্জানের কথা বলব। টার্জানের কথা তোমরা সকলেই শুনে থাকবে। এক হাতে একটি চাকু নিয়েই ভয়ঙ্কর বন্য জন্তুকে তিনি খতম করে দিতে পারেন। লম্বা দোহারা চেহারা। অত্যন্ত সাহসী। আফ্রিকার জঙ্গলেই থাকে টার্জান। বনমানুষের মতো তার স্বভাব। গাছে গাছে ডালে ডালে বনমানুষের মতই দোল খেতে পারে। তোমরা কেউ আবার ভেবে ফেলো না যে সত্যি সত্যিই টারজান আফ্রিকার জঙ্গলের মানুষ। টার্জান আসলে একটি কাল্পনিক চরিত্র। যার অর্থ ‘সাদা চামড়া’। এডগার রাইজ বরোজ এই চরিত্রটির রচয়িতা। পৃথিবীর প্রায় সবদেশেই টারজানের গল্পের অনুবাদ রয়েছে। ছোটদের মনোহারী বইগুলির মধ্যে টার্জান অ্যাডভেঞ্চার খুবই জনপ্রিয়।
অনেকদিন আগের কথা। টারজানের পিতা ডাক্তার উইলসন ছিলেন খ্রিস্টান মিশনারী। তিনি আফ্রিকায় খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের জন্য গিয়েছিলেন। ছেলেবেলা থেকেই তিনি ম্যাপ খুলে দেখেছিলেন যে পৃথিবীর বহু জায়গা আছে যেখানে সভ্যতার আলো পৌঁছায়নি। তখন তিনি সঙ্কল্প করলেন যাবেন অন্ধকার মহাদেশ আফ্রিকায়। কালো কাফ্রিদের সেই দেশে বহু গ্রাম আছে যেখানে পৃথিবীর কোনও সংবাদই পৌঁছায় না। তিনি স্থির করলেন তিনি আফ্রিকায় খ্রিষ্টধর্ম প্রচারে যাবেন। তাঁর স্ত্রী তখন গর্ভবতী। তিনিও বললেন তিনিও ডাক্তারের সঙ্গে জঙ্গল সফর করবেন।
সুতরাং, তিনি ও তাঁর স্ত্রী তো আফ্রিকায় চলে গেলেন। বহু বিপদ-আপদের মধ্যে দিন কাটল। তিনি চলে এলেন বান্টুদের দেশে। এই সময় তিনি শুনলেন যে সানি নামে একজন কাফ্রিকে ডাইনি ধরে তার লিভার খেয়ে ফেলেছে। সানি রাস্তার পাশে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে ছিল। ডাক্তার সানিকে সারিয়ে তুললেন। তার পর থেকে সানি হয়ে উঠলেন ডাক্তারের পরিবারের বন্ধু। কিছুদিনের মধ্যে ডাক্তারের একটি পুত্র সন্তান হলো।সকলের খুব আনন্দ হলো। কিন্তু একদিন দেখা গেল খোকা নেই। ওকে ওরাংওটাং এসে চুরি করে নিয়ে গেছে। সেই থেকে সারা জঙ্গল চষে ফেললেন ডাক্তার। কিন্তু তাঁর ছেলেকে তিনি পেলেন না। ওদিকে এক বনমানুষীর বুকের দুধ খেয়ে মানুষ ছানাটি বড় হলো। উলঙ্গ অবস্থায় সেও ঘোরাঘুর করতে লাগলো। সে বনমানুষ আর বনমানুষীকে তার বাবা মা বলে ভাবতে লাগল। ওদের ভাষাতেই কথা বলতে পারত। প্রথমে তার নাম ছিল বুনো।পরে এই বুনোই একদিন টার্জান নামে সমস্ত মধ্য-আফ্রকার জঙ্গলে পরিচিত হয়ে উঠল। কিভাবে তার নাম বুনো থেকে টার্জান হলো, জঙ্গলের পশুদের সঙ্গে ভাব হল, মানুষের সঙ্গে প্রথম কবে তার দেখা হলো, কীভাবে তার মনে মানুষের মতো বুদ্ধির জাগরণ ঘটল, কীভাবে নোরা নামে একটি মেয়ের সঙ্গে তার ভাব হলো, কেন নোরা তাকে মানুষের মধ্যে ফিরিয়ে নিতে চেয়েছিল জানতে হলে এই বইটি পড়তেই হবে। কিন্তু টার্জানের কি ফেরা হলো মনুষ্য সমাজে? তারও উত্তর রয়েছে ‘অ্যাডভেঞ্চার অব টার্জান’ বইটিতে।
অ্যাডভেঞ্চার অব টার্জান
নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়। দেব সাহিত্য কুটীর।২১ ঝামাপুকুর লেন, কলকাতা—৭০০০০৯।
Comments :0