নতুনপাতা
জানা অজানা
বিবেকানন্দের কুস্তি শিক্ষক
তপন কুমার বৈরাগ্য
স্বামী বিবেকানন্দ দেহচর্চার উপর বেশি গুরুত্ব
দিয়েছিলেন।যুবকেরা দেহচর্চার মাধ্যমে সুঠাম
দেহের অধিকারী হবেন এটায় তিনি মনে প্রাণে
চেয়েছিলেন। তাই তাঁর জন্মদিনকে আমরা যুব
দিবস হিসাবে পালন করি। বিবেকানন্দ প্রাথমিক
শিক্ষা শেষ করে ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে ভর্তি হলেন
কলকাতার মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশনে।
খুব ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন খুবই সাহসী
ও চঞ্চল। কলকাতার মসজিদ বাড়ির লেনে
শুনলেন একটা কুস্তির আখড়া আছে।যার শিক্ষক
ছিলেন গোবর গুহের পিতামহ অম্বিকাচরণ গুহ।
যাকে অম্বুবাবু বা রাজাবাবু বলে ডাকা হতো।
যিনি ছিলেন বাংলা আখড়া সংস্কৃতির পথ প্রবর্তক।
তাঁর আখড়া ছিলো উদীয়মান কুস্তিগীরদের তীর্থস্থান।
এখানে কুস্তির সাথে সাথে ভারোত্তলেনেরও শিক্ষা
দেওয়া হতো।
স্বামী বিবেকানন্দ শুনলেন এই প্রতিষ্ঠানের নাম।
একদিন স্কুল শেষে চলে এলেন এই আখড়ায়।
অম্বুবাবুর স্বামী বিবেকানন্দকে দেখে খুবই পছন্দ
হলো।তিনি মনে প্রাণে তাকে কাছে টেনে নিলেন।
স্বামী বিবেকানন্দও অম্বুবাবুর অমায়িক ব্যবহারে
খুবই মুগ্ধ হলেন। প্রতিদিন বিকালে তিনি এই
আখড়ায় আসতে লাগলেন। অম্বুবাবু তাঁকে শিক্ষাদিলেন
ক্লিঞ্চ লড়াইথ্রো এবং চেকডাউন ,জয়েন্ট লোক,
পিন এবং গ্র্যাপলিং হোল্ড।উপযুক্ত গুরুর পরশে
স্বামী বিবেকানন্দ হয়ে উঠলেন একজন শ্রেষ্ঠ
কুস্তিগির। গুরু তাঁকে শিক্ষা দিয়েছিলেন যে কোনো
কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হতে ভয় পেয়ো না।
১৮৭৯সালে স্বামী বিবেকানন্দ প্রবেশিকা পরীক্ষায়
কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন।
সালটা ১৮৮৭। স্বামী বিবেকানন্দ বারাণসীর রাস্তা
দিয়ে যাচ্ছেন।কতকগুলো বানর তাঁর দিকে তেড়ে
এলো। তিনি তাদের মুখোমুখি হলেন। বানরেরা একসময়
রণে ভঙ্গ দিয়ে পালালো।সেদিন গুরুর সেই আপ্ত বাক্য--
কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে ভয় পেয়ো না।
স্বামী বিবেকানন্দ তাই তো বলতে পেরেছিলেন -- ওঠো জাগো
এবং লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না। বাঘা যতীনেরও
গুরু ছিলেন অম্বিকাচরণ গুহ। স্বামী বিবেকানন্দের জীবনে অম্বুবাবুর অবদান আজও ভুলবার নয়।
১৯০০খ্রিস্টাব্দে অম্বুবাবু মারা যান এর দু'বছর পরে
১৯০২ খ্রিস্টাব্দে স্বামী বিবেকানন্দ পরলোক গমন করেন।
Comments :0