নতুনপাতা | গল্প
গল্প
পাখিদের জন্য
সৌরীশ মিশ্র
আজ রবিবার। এখন দুপুর দুটো। একটা বড় মাটির ভাড়ে জল ভরে, সিঁড়ি দিয়ে ওদের একতলা বাড়ির ছাদে উঠে এল দশ বছরের বিল্টু।
ঠা ঠা রোদ্দুরে চারদিক যেন জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে পুরো। বিল্টু ছাদের যে কোনটায় সারাটাদিন ওদের বাগানের বিশাল ঝাকরা আম গাছটার ছায়া পড়ে, সেখানে জল ভরা ভাড়টা রেখে দিয়ে চিলেকোঠার ঘরটায় চলে এল।
আসলে হয়েছে কি, গতকাল ওদের স্কুলের লাইফ সায়েন্স টিচার সুদীপ্তা ম্যাম ক্লাস চলাকালীন বলেছেন বিল্টুদের, সারা গরমকালটায় ওরা যেন ওদের বাড়ির ছাদে, বাগানে কিংবা ব্যালকনিতে বাটিতে করে জল রেখে দেয় পাখিদের জন্য, যাতে পাখিরা জল তেষ্টা পেলেই ওখান থেকে জল খেতে পারে।
চিলেকোঠার ঘরটা থেকে পরিস্কার দেখতে পাচ্ছে বিল্টু ছাদে রাখা ভাড়টা। চিলেকোঠাতেই ঠায় বসে আছে বিল্টু এতক্ষণ, আদৌ কোনো পাখি আসে কি না জল খেতে, তাই দেখতে। এরই মধ্যে কেটে গেছে প্রায় মিনিট পনেরো। কিন্তু এখনো কোনও পাখিই আসে নি। আরো কিছুক্ষণ সময় কেটে যায়। বিল্টু বেশ হতাশই হয়ে পড়েছে ততক্ষণে। ঠিক তখুনি, কি আশ্চর্য, বিল্টু হঠাৎই দেখল, কোথা থেকে যেন দুটো কাক উড়ে এসে বসল ওদের ছাদে। তারপর পায়ে পায়ে দুটো কাকই এগিয়ে গেল জলের ভাড়টার দিকে। ঠোঁট ডুবিয়ে ভাড়টা থেকে জল খেতে থাকল ওরা। বিল্টুর কি যে আনন্দ লাগল ওর রাখা ভাড় থেকে কাক দুটোকে জল খেতে দেখে! আর ঐ দৃশ্য অপলকে দেখতে দেখতেই বিল্টু মনে মনে ঠিক করে ফেলল, সারা গ্রীষ্মকালটাই এই ভাবেই প্রতিদিন ফ্রেশ্ জল ভাড়টায় ভরে রেখে দেবে সে পাখিদের জন্য।
Comments :0