NATUNPATA | STORY — SOURISH MISHRA — 31 MARCH 2024

নতুনপাতা | গল্প — উপস্থিত বুদ্ধি | সৌরীশ মিশ্র — ৩১ মার্চ ২০২৪

ছোটদের বিভাগ

NATUNPATA  STORY  SOURISH MISHRA  31 MARCH 2024

নতুনপাতা

গল্প

উপস্থিত বুদ্ধি

সৌরীশ মিশ্র


"রাতুল, ঝড়-বৃষ্টিটা ধরে গেছে। আমাকে ক'টা জিনিস এনে দিবি রে মুদি দোকান থেকে? না হলে, তোর বাবা কখন অফিস থেকে বাড়ি আসবে তার অপেক্ষা করে বসে থাকতে হবে।"
"কি কি লাগবে একটা লিস্ট করে দাও মা। আমি এক্ষুনি এনে দিচ্ছি।" বলতে বলতেই হাতে ধরা গল্পের বইটা বন্ধ করে বিছানা থেকে উঠে পড়ে রাতুল।

মিনিট দশেকের মধ্যেই সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল রাতুল। এই সাইকেলটা এ বছর সেকেন্ড হয়ে ক্লাস এইটে ওঠায় গিফ্ট করেছেন ওকে ওর বাবা-মা।
আজ এই মরশুমের প্রথম কালবৈশাখী হয়েছে এই অঞ্চলে। এখনও সন্ধ্যে সাতটা বাজেনি। তবু, ঐ ঝড়-বৃষ্টি সবে-সবে হয়ে যাওয়ার জন্যই হয়তো রাস্তা প্রায় জনশূণ্য।
মুদি দোকানটা সামনের মোড়টা ঘুরে মিনিট পাঁচেক গেলেই। কিন্তু মোড়টা ঘোরার আগেই কি একটা রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখে তড়িঘড়ি সাইকেলে ব্রেক কষল রাতুল। তারপর সাইকেল থেকে নেমে কাছে যেতেই বুঝল যা ভেবেছে সে ঠিক তাই। একটা ওভারহেড ইলেকট্রিক তার ছিঁড়ে রাস্তার এদিক থেকে ওদিক ছড়িয়ে পড়ে আছে। নির্ঘাত ঝড়ে ছিঁড়ে গিয়েছে তারটা। রাতুল জানে, এই ধরনের তারে অনেক সময়ই বিদ্যুৎ থাকে। তাই, ছুঁতে নেই। কিন্তু রাস্তায় এই ভাবে তারটা পড়ে আছে যে, সেটা তো জানানো উচিত পাড়ায় বড়দের। মনে মনে এই সবই ভাবতে থাকে রাতুল।
এই মুহূর্তে এই রাস্তায় একজনও লোক নেই যে তাকে ব্যাপারটা বলবে সে। সে কি করবে, কি করা উচিত, তাই-ই শুধু চিন্তা করতে থাকে রাতুল। আর ভাবতে ভাবতেই একটা বুদ্ধি মাথায় আসে তার। সে দ্রুত পায়ে পিছিয়ে যায় কয়েকটা বাড়ি। তারপর এই পাড়ার প্রেসিডেন্ট মিলন রায়, রাতুলের মিলন জ্যেঠুর বাড়ির সামনে এসে ডাকতে থাকে তাঁকে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে। আর তারই সাথে ওখান থেকেই এও সতর্ক নজর রাখতে থাকে সে, এই রাস্তা ধরে এসে কেউ যাতে ঐ পড়ে থাকা ছেঁড়া তারটা ছুঁয়ে না ফেলে। 
কয়েকবার ডাকতেই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসেন মিলন রায়। জিজ্ঞেস করেন রাতুলকে কি হয়েছে। রাতুল বলে সব। রাতুলের মুখে সব কথা শুনে তিনি আর এক মুহূর্তও দেরী করেন না। চলে আসেন রাতুলকে নিয়ে সেই জায়গাটায় যেখানে তারটা পড়ে আছে। সেখানের ব্যাপার-স্যাপার সব দেখে কয়েকটা ফোন করেন কাদের যেন একের পর এক ব্যস্ত-সমস্ত হয়ে। ফোনে কথাবার্তা শেষ হলে তিনি তারপর রাতুলকে বললেন, "পাশের পাড়ার ভিতর দিয়ে মুদি দোকানে যাওয়ার রাস্তাটা চিনিস তো?"
"হ্যাঁ চিনি জ্যেঠু।"
"তাহলে তুই ঐ রাস্তাটা দিয়েই যা, কেমন। ফিরিসও ঐ রাস্তা দিয়েই। আমি এখানেই আছি। তুই নিশ্চিন্তে যা।"
সাইকেলে ফের উঠে প্যাডেলে চাপ দেয় রাতুল।

(আগামী সংখ্যায় সমাপ্ত)

Comments :0

Login to leave a comment