PALWAL MAHAPANCHAYAT HATE SPEECH

হাত কেটে নেওয়ার হুঙ্কার হিন্দুত্ববাদীদের মহাপঞ্চায়েতে, মোদী নীরবই

জাতীয়

পুলিশি ঘেরাটোপে দাঁড়িয়েই অস্ত্র হাতে নেওয়ার স্লোগান তুলল হরিয়ানায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী জমায়েত। সাম্প্রদায়িক হিংসায় দীর্ণ নুহ লাগোয়া পালওয়ালে এই জমায়েত থেকে খেলাখুলি ঘৃণা ভাষণ ছড়ানো হলো সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা উড়িয়ে। হরিয়ানায় বিজেপি সরকারের পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা ছাড়া আর কিছু করেনি। 

সম্পূর্ণ আশঙ্কা সত্ত্বেও আরএসএস’র শাখা সংগঠন বজরঙ দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিল থেকে হিংসা ছড়িয়েছিল বুহতে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে দিল্লি লাগোয়া গুরগাঁওয়েও। হিংসার তীব্রতা কিছু কমলেও সরকার নিজেই মুসলিম সংখ্যালঘু এলাকায় বুলডোজার নামিয়ে ভাঙছে গরিবের ঝুপড়ি, হাসপাতাল লাগোয়া ওষুধের দোকান। সাম্প্রদায়িক বিভাজন এবং হিংসায় পূর্ণ মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধেই। 

এদিন পালওয়ালের জমায়েতে পালা করে বক্তারা বলেছেন মুসলিম সংখ্যালঘুদের সরাসরি আক্রমণের হুঁশিয়ারি দিয়ে। সুপ্রিম কোর্টে এ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতিরা রাজ্য প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন ঘৃণা ভাষণ সম্পর্কেই। তবু এদিন বক্তারা কেউ বলেছেন, নুহ জেলাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। অন্য জেলার সঙ্গে মিশয়ে দিতে হবে মুসলিম প্রধান এই জেলাকে। পালওয়ালের মহাপঞ্চায়েতে নেওয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে পুরো এলাকাকে ‘গোহত্যা মুক্ত’ করতে হবে। মুসলিম সংখ্যালঘুদের উদ্দেশ্য করে বক্তারা বলেছেন, ‘আমাদের দিকে আঙুল তুললে পুরো হাতই কেটে নেব’। 

গোরক্ষার নাম করেই নুহ এবং রাজস্থান সংলগ্ন হরিয়ানার মেওয়াত এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে রেখেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরঙ দল। একাধিক মুসলিম যুবককে কখনও পিটিয়ে কখনও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে গোরু পাচারকারী অভিযোগ তুলে। স্বঘোষিত গোরক্ষকদের বাহিনী তৈরি হয়েছে। প্রকাশ্যে সমাজমাধ্যমে তারা ছবি দিয়ে হুমকি দিলেও রাজ্য প্রশাসন নীরব থেকেছে। 

হরিয়ানায় যদিও একেবারে উলটো অভিমুখে গণজমায়েত হচ্ছে। বিভিন্ন খাপ পঞ্চায়েত এবং কৃষক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ সংযুক্ত কিষান মোর্চা জিন্দ, হিসারের মতো জেলা মহা পঞ্চায়েত করেছে। সেখানে দাবি উঠেছে, হিংসায় যে জড়িত তাকেই গ্রেপ্তার করতে হবে। ধর্মের বাছবিচার চলবে না। প্রশাসনকে কাজ করতে হবে সংবিধান এবং আইন মেনে। বিভাজন এবং সাম্প্রদায়িক হিংসায় উসকানি চলবে না। 

ঠিক উলটো কথা বলেছে পলওয়ালে হিন্দুত্ববাদী জমায়েত। বলা হয়েছে, ‘গোহত্যাকারীদের সঙ্গে লড়তে মানুষের হাতে অস্ত্র তুলে দিতে হবে।’  জমায়েতের জায়গাও বাছা হয়েছে একেবারে নুহ জেলা লাগোয়া পোন্ড্রি গ্রামে।

৩১ জুলাই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরঙ দলের ওই মিছিলের সূচনা করেছিলেন বিজেপি’র গুরগাঁও জেলা সভাপতি। তারপর শুরু হয় হিংসা। প্রাণ যায় ৬ জনের। 

মণিপুরের পাশাপাশি হরিয়ানা নিয়েও নীরব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্বাধীনতা দিবসের আগে ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ প্রচারে ব্যস্ত তিনি। বার্তাও দিয়েছেন দেশবাসীকে। প্রশ্ন উঠেছে, জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষায় তৎপর মোদী নাগরিকদের প্রাণ রক্ষায়, শান্তি রক্ষায় নিরুদ্বিগ্ন কেন। 

Comments :0

Login to leave a comment