প্রবন্ধ
নজর ঘোরানোর নয়া ফিকির
বাসব বসাক
নজর ঘোরানোর আরও একটা ফিকির হল পুনর্নবীকৃত প্লাস্টিক বা রিসাইকেলড্ প্লাস্টিক। এই মুহূর্তে কোকাকোলা কোম্পানি বছরে ১০০ বিলিয়ন অর্থাৎ ১০০০০ কোটি একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতল উৎপাদন ক’রে চলেছে যা কিনা ইউনিলিভার, প্রোক্টর এ্যান্ড গ্যাম্বেল, ইউনিলিভার, নেসলের মত নরম পানীয় প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির সম্মিলিত উৎপাদনের (৪৭০ বিলিয়ন) এক-চতুর্থাংশেরও বেশি। কোকাকোলা যদিও ২০২০-র মধ্যে বোতল তৈরিতে অন্ততঃ ৫০% পুনর্নবীকৃত প্লাস্টিক ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তবু ২০২২ এর শেষেও তারা তাএর ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারে নি। রিসাইক্লিং-এর পরিবর্তে বরং বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক-বর্জ্য গরীব দেশগুলোতে পাঠিয়ে দেওয়াতেই তাদের আগ্রহ থাকে বেশি। নিনা শ্রাঙ্ক ‘দ্য মিথ অব রিসাইক্লিং’ নিবন্ধে দেখিয়েছেন ২০২০ সালে ইংল্যান্ডে পুননর্বীকৃত হিসাবে দেখানো হয়েছে সেই সব প্লাস্টিক বর্জ্য কে য তারা আসলে পাঠিয়েছে ভিন দেশে এবং ২০২০ তে ও দেশের মোট প্লাস্টিক বর্জ্যের অর্ধেকই এই বাবে গরীব দেশে পাঠিয়ে দিয়ে দেখানো হয়েছে পুননর্নবীকৃত হিসাবে।
ভারতেও ৬০% পুনর্নবীকৃত প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয় বলে যতই দাবি করুক সরকার, সম্প্রতি সেন্টার ফর সায়েন্স এ্যন্ড এনভায়রনমেন্ট কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য বিশ্লেষণ করেই দেখিয়েছে এদেশে পুনর্নবীকৃত হয় বড়জোর ১২% প্লাস্টিক। এই প্রসঙ্গে ২০১৭-র আগস্টে খাদ্য-অপচয় রোধী প্রচার সংস্থা ফিডব্যাকের অধিকর্তা শ্রীমতী ক্যারিনা মিলস্টোন যথার্থই বলেছেন, ‘কোকাকোলার মতো সম্পদ শোষণকারী ভোগনির্ভর বহুজাতিক ব্যবসার মডেল মূলগতভাবেই এই গ্রহের প্রয়োজনের সঙ্গে খাপ খেতে পারে না’। একবার ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে আনার উদ্যোগের পাশাপাশি লেইজের আলুভাজা থেকে বোতলবন্দী ঠান্ডা পানীয়ের হাতছানিকে উপেক্ষা করতে শেখানোর সংস্কৃতিকেও রপ্ত করতে হবে আমাদের। বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়া যাবে না আমাদের চেতনার বিনির্মানের ভার।
Comments :0