আর জি কর হাসপাতালের নৃশংস ঘটনায় ন্যায়বিচার পেতে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে চিকিৎসক মহল ও বিভিন্ন গণসংগঠনগুলি। অপরাধ ধামাচাপা দিতে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলের গোপন সেটিংয়ের বিরুদ্ধে আরও তীব্রভাবে সোচ্চার হবেন তাঁরা, চলছে সেই প্রস্তুতিও। ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলে এএইচএসডি সহ জয়েন্ট প্ল্যাটফরম অব ডক্টরস (জেপিডি) ও অভয়া মঞ্চ’-র ডাকে-এর টানা ধরনা অবস্থান চলছে। সোমবার এই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিকে সংহতি জানিয়ে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করবে জনচেতনা মঞ্চ। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মিছিল শুরু হয়ে শেষ হবে অবস্থান মঞ্চে। মিছিলে শামিল থাকবেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সমাজকর্মী থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রমজীবী, পেশাজীবী, ছাত্র-যুব মহিলা, শিক্ষাবিদ, শিল্পী মহল। শুধু তাই নয়, মঙ্গলবার ২৪ ডিসেম্বর রাতে ধর্মতলায় প্রতিবাদের বড়দিন পালিত হবে অভয়া মঞ্চ ও জেপিডি’র ডাকে। এছাড়াও রানি রাসমণি রোডে প্রতিবাদী সমাবেশ হবে ২৬ ডিসেম্বর।
মুখ্যমন্ত্রী মাত্র দু’দিন আগেই বড়দিনের উৎসবের ঘোষণা করে উদ্বোধনও করে দিয়েছেন। এই উৎসবের অজুহাতেই ধর্মতলায় মেট্রো চ্যনেলে চিকিৎসকদের মঞ্চ গড়তে বাধা দিয়েছিল পুলিশ ও প্রশাসন। শেষে হাইকোর্টের নির্দেশ ও শর্ত মেনে গড়া হয়েছে মঞ্চ। সেই মঞ্চের সামনে বড়দিনের প্রাক্কালে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর উৎসব প্রীতিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দ্রোহের বড়দিন পালন করবে জয়েন্ট প্ল্যাটফরম অব ডক্টরস ও অভয়া মঞ্চ। চিকিৎসক ও গণসংগঠনগুলির বক্তব্য, আমরা কোনো উৎসবেরই বিপক্ষে নই। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন যেভাবে ন্যায় বিচারের অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে, যেভাবে আন্দোলনকে উৎসবের দোহাই দিয়ে দমিয়ে দিতে চাইছে-আমরা তার বিপক্ষে। রাজ্যের সাধারণ মানুষ আমাদের আন্দোলনকে সংহতি জানিয়ে পাশে আছেন। বড়দিনের উৎসবের সাথে সাথে তাই মোমবাতি জালিয়ে আমাদের দ্রোহের উৎসবও প্রত্যক্ষ করবে সরকার, দ্রোহের উৎসবে শামিল হবেন মানুষ, কারণ মানুষ ন্যায় বিচার চান। সবটাই হবে আদালতের শর্ত মেনে। এছাড়াও ধর্না অবস্থানের শেষ দিন ২৬ ডিসেম্বর রানি রাসমণি রোডে বৃহৎ সমাবেশ হবে বলেও জানানো হয়েছে দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে।
এই নিয়ে তৃতীয় দিনে পড়লো ধর্মতলার অবস্থান মঞ্চ। সকাল থেকেই স্লোগান তুলে হাইকোর্ট কর্তৃক নির্ধারিত সংখ্যায় জমায়েত করেন অভয়া মঞ্চ ও জেপিডি’র প্রতিনিধিরা। ডাঃ উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়, ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামী, ডাঃ তমোনাশ চৌধুরি, ডাঃ তাপস ভট্টাচার্য, ডাঃ সুবীর গাঙ্গুলি, ডাঃ সুরজিৎ ঘোষ, ডাঃ ইন্দ্রজিৎ রায় সহ অন্যান্য চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন। চিকিৎসকদের বক্তব্য, কেন্দ্র ও রাজ্যের একটা বিরাট ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে অভয়া’র পরিবার। একইভাবে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন অভয়া’র সহকর্মী থেকে চিকিৎসক মহল, গোটা রাজ্যের মানুষ। প্রথম দিন থেকে তদন্তের নামে নাটক হয়েছে প্রায় পুরোটাই। বিচার প্রক্রিয়া শ্লথ হয়েছে দিশাহীন তদন্তের কারণে। পুলিশের তদন্তে প্রভাব খাটানো হয়েছে। আড়াল করা হয়েছে মূল অভিযুক্তদের। কার অঙ্গুলি হেলনে এসব হয়েছে জানতে চায় রাজ্যের মানুষ। সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট পেশে কেন রাজ্য সরকার নো অবজেকশন দিল না-এটা একটা বড় প্রশ্ন। দাবি, সিবিআই-কে অবিলম্বে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিতে হবে। এছাড়াও প্রমাণ লোপাটকারীদের তদন্তের আওতায় এনে তদন্তের গতি বাড়াতে হবে।
"Droher baradina"
কাল ধর্মতলায়‘দ্রোহের বড়দিন’
×
Comments :0