Probandha — SOURAV DUTTA / MUKTADHARA - 18 October

প্রবন্ধ — বিস্মৃত বাঙালির জীবনচরিত: রাজনারায়ণ এবং 'সেকাল-একাল' সম্পর্ক / মুক্তধারা - ১৮ অক্টোবর

সাহিত্যের পাতা

Probandha   SOURAV DUTTA   MUKTADHARA - 18 October

প্রবন্ধ  / মুক্তধারা

বিস্মৃত বাঙালির জীবনচরিত: রাজনারায়ণ এবং 'সেকাল-একাল' সম্পর্ক

সৌ র ভ  দ ত্ত

স্কুল ছুটির পর হেয়ার সাহেব নিজে স্কুলের মূল গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতেন।স্কুলে আগত প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে নিরীক্ষণ করতেন।এবং তোয়ালে দিয়ে ঘষে ঘষে তাদের গায়ের নোংরা,ময়লা সাফ করতে উদ্যত হতেন।কারোর গা থেকে যদি বিন্দুমাত্র ময়লার বেরোত তার কপালে জুটত হেয়ার সাহেব কর্তৃক বেত্রাঘাত।ভারতীয় ছাত্রদের তিনি শুধুই শাস্তি দিয়েই ক্ষান্ত হতেন না।ছাত্রদের দেহ থেকে নোংরা সাফসুতরো জন্য গায়ে মাখা সাবানও কিনে দিতেন।

হেয়ার সাহেবের স্কুলে প্রতি শনিবার হস্তলিপি অনুশীলন করানো হত।তিনি শিক্ষার্থীদের হাতের লেখার মান উন্নয়ন বিষয়ক একাধিক পরামর্শ দিতেন।দুটি অক্ষরের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকলে ছাত্রদের বেত মারা হত।স্কুল জীবনে হেয়ার সাহেবের থেকে বেত্রাঘাত জোটেনি এরকম ছাত্রের সন্ধান পাওয়া বেশ দুষ্কর।রাজনারায়ণ সেদিক থেকে সৌভাগ্যবান।হেয়ার সাহেবের কড়া শাস্তিবিধি এড়ানোর জন্য  তিনি এক অদ্ভুত কৌশল অবলম্বন করেছিলেন।রাজানারায়ণের বর্ণনায় থেকে জানা যায়–"আমি তাঁহার বেত্রচালনৈষণা নিবারণ করিবার জন্য বেত খাইয়া একটি ছাত্রের আত্মহত্যার গল্প আমার তখনকার ইংরাজীতে লিখিয়া তাঁহার হস্তে অর্পণ করিয়াছিলাম!" তৎকালীন এগারো বছর বয়সী বালক রাজনারায়ণ ভেবেছিলেন যে তাঁর গল্পটি পড়ে হেয়ার সাহেব বেত্রাঘাত থেকে নিরস্ত্র হবেন।যদিও কার্যক্ষেত্রে তা ঘটেনি।হেয়ার সাহেবকে  লেখা গল্প প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন–"এই কার্য্য জন্য আমি নিজে বেত খাই নাই,এক্ষণে আমার পরম সৌভাগ্য জ্ঞান করি।আমার চোদ্দ বছর বয়স পর্যন্ত আমি হেয়ার সাহেবের স্কুলে পড়ি।"

(চলবে)

Comments :0

Login to leave a comment