Story / NATUNPATA — KAKTOPE TUHIN / SOUJANYA DAS / NEW FRIEND — 28 January 2024

গল্প / নতুনপাতা — কালাটপে তুহিন / সৌজন্য দাস / নতুন বন্ধু — ২৮ জানুয়ারি ২০২৪

ছোটদের বিভাগ

Story  NATUNPATA  KAKTOPE TUHIN  SOUJANYA DAS  NEW FRIEND   28 January 2024

গল্প  

নতুনপাতা
কালাটপে তুহিন                                                                                                 
সৌজন্য   দাস

নতুন বন্ধু 
 
এক
                          
সময়টা ছিল শীতকালের বিকেল। হিমাচল প্রদেশের এক প্রসিদ্ধ স্থান কালাটপের পঞ্চপুলা জলপ্রপাতের অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তুহিনরা তখন ধীরে ধীরে নিচে নামছিল।ত্রিশান বলল কালাটপ যে এত সুন্দর জায়গা জানতাম না। তুহিন বলল- যা বলেছিস তবে ডালহৌসি ও খুব খারাপ নয়। ডালহৌসির ডাল লেক অতুলনীয়,ওর তুলনা নেই।ক্যামেরায় ছবি দেখতে দেখতে মুখ না তুলেই বললো রূপম ।ওরা তখন গল্প করতে করতে নাম ছিল এভাবেই। তবে হঠাৎ করে একটা বড় পাথর ধসে পড়ল হোটেলের রাস্তার ধারে। হঠাৎ রুপম বলে উঠল, আরে কে যেন যাচ্ছে? সেই বিখ্যাত গম্ভীর প্রকৃতিবিদ মিস্টার সুশান্ত বোস না?দেখ তুহিন। তুহিন তখন মোবাইলে তোলা ছবি গুলো দেখছিল ও মাথা তুলে বললো কই মিষ্টার বোস?কি ফালতু বকছিস।রুপম বলল, তাইতো। তাহলে কি ভুল দেখলাম। ত্রিশান বলল, নির্ঘাত তুই উনার মত কাউকে দেখে মিস্টার বোস ভাবছিস। রূপম উত্তর না দিয়ে হাঁটতে লাগলো।


সময়টা ছিল সন্ধ্যে সাতটার মত তুহিন বসে গেল গেম খেলতে। রুপম ছিল রিসেপশনে, আর ত্রিশান জলের বোতলের খোঁজে বেরিয়ে ছিল। হঠাৎ দরজায় কেউ টোকা দিল। তুহিন ভাবল বোধহয় হোটেলের বয়।ও বলে ওঠে,কাম ইন।কিন্তু না কেউ এলো না বরং দরজাটা একটু ফাঁক হলো ও গুড়ুম করে একটা শব্দ হলো।তুহিন দরজার দিকে তাকালো ও একটা দ্রুত বেগে পালানোর শব্দ পেল। তুহিন দৌড়ে বাইরে এল। কিন্তু না কেউ ছিলনা তখন বাইরে। ইতিমধ্যে গুলির শব্দে রুপম ও ম্যানেজার সহ অনেকে এসে পড়েছে।তুহিনের ঘাড়ে রক্ত দেখে ম্যানেজার ভদ্রলোক বেজায় আতঙ্কিত হয়ে পরল। তুহিন গুলি খাওয়ার ব্যাপারটা নিয়ে মোটেই চিন্তিত ছিলনা। ও সবাইকে বিদায় দিয়ে ম্যানেজারকে আড়ালে বলল,আচ্ছা আপনাদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে পারবেন।ম্যানেজার বলল স্যার একচুয়ালি, ও যে অপারেটর থা আজ জলদি ছুট্টি লেকে চালা গায়া।ইসলিয়ে সিসিটিভি আজ বন্ধ হে আসল মে অর লোগ নেহি মিলা হে। তুহিন কিছুক্ষণ চুপ থাকল। ম্যানেজার চলে গেলে ত্রিশান ঘরে ঢুকলো। তুহিন ওকে সব গুছিয়ে বলল আর সতর্ক হতে বলল। রূপম বলে কিন্তু এখানে গুলিকে চালাবে কে? তুহিন বলে সেটা নিয়ে আইডিয়া নেই তবে চল একবার বেরোতে হবে কিছু জিনিস কেনার আছে।
     সকাল ন'টার সময় তখন তুহিনদের গাড়ি কালাটপ থেকে অল্প উচ্চতায় অবস্থিত চাম্বার চামেরা লেকের উদ্দেশ্যে ছুটে চলল। ওদের প্ল্যান ছিল চামেরা লেক সহ চাম্বার আপেল বন দেখে সেন্ট ক্যাথলিক চার্চ ঘুরে চাম্বার চামুণ্ডেশ্বরী মন্দির দেখে কালা টপে রাত্রি বাস করবে কিন্তু আসলে তা হলোনা। ক্যাথলিক চার্চ থেকে ফেরার পথে বিকেল বেলায় হঠাৎ আচমকা বাঁকের মুখে একটা লরি সজোরে এসে ধাক্কা মারল ওদের গাড়িতে।তুহিন ছিটকে পড়ল পাশে।
  তুহিন আবছা দেখতে পেল একটা বাইকে করে দুজন দুষ্কৃতী রুপমকে নিয়ে পালাচ্ছে।তুহিন শেষ মুহূর্তে দেখতে পেল গাড়ির নেমপ্লেট RJ 2782

আচমকা গাড়ি দুর্ঘটনার পর তুহিন কয়েক মিনিট নির্জীব হয়ে পড়েছিল। তারপর ধীরে ধীরে উঠে পড়ল। ভাগ্যিস মাথায় লাগেনি হাত পায়ে সামান্য আঘাত লেগেছে। জ্ঞান ফেরার পর তুহিন দেখল গাড়ির ইঞ্জিন থেকে সামান্য ধোঁয়া বেরোচ্ছে। কাচ গুলো সব গুড়ো গুড়ো হয়ে গেছে। ত্রিশানের মাথায় চোট লেগে রক্ত পড়ছে,ড্রাইভার এর পায়ে বেশ আঘাত। তুহিন প্রত্যেককে জাগিয়ে দিল। ড্রাইভার পায়ে ওষুধ লাগিয়ে বলল স্যার আভি সাম হোগেয়া হে। ওর অভি উইন্টার কা মোসাম চাল রাহা হে। বারফ গির সাকতি হে। হামারা গাড়ি  ভি খারাপ হো গেয়া হে। স্যার হামে পেদাল জানা পাড়েগা। ওর তিন কিলোমিটার কি আন্দার মে কালাটপ সিটি। তুহিন দেখল উপায় নেই হাঁটতেই হবে।ওরা তখন হাঁটা দিল বাধ্য হয়ে।
     তুহিন রা হোটেলে পৌঁছালো রাত আট টায়। ওরা থানাতে রূপমের ব্যাপারে একটা মিসিং কেস জমা দিয়ে তবে হোটেলে ফিরেছে।রুপম এর ব্যাপারটা ওদের বেশ চিন্তিত করেছে।হঠাৎ ত্রিশান বলল আচ্ছা তুহিন RTO এর লোকেরা ওই গাড়িটা কেন চিহ্নিত করতে পারল না?
মনে হচ্ছে ওটা ভুয়া নাম্বার প্লেট।বলে তুহিন।
মানে? কৌতূহলী ভাবে বলে ত্রিশান।
" দেখ হিমাচল থেকে রাজস্থান প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরত্ব।গুন্ডারা কেন অতো দূর থেকে গাড়ি আনবে আর এইসব কেসে নেমপ্লেট দেখে কাজ হবে না",বেশ সুর চড়িয়ে বলে তুহিন।
"ও,তার মানে গুন্ডারা RJ, UP, jk, WB এরকম বহু রাজ্যের নেমপ্লেট ব্যবহার করে"?বলল ত্রিশান।
"হ্যাঁ। আর এখন আমাদের শুধু খোঁজ করতে হবে"।
কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথে ফোন বাজলো, মিস্টার সিং ফোন করেছেন, কালা টপের ওসি। তুহিন   ওঠে - ইয়েস মিস্টার  সিং,বলুন ।
আমরা আপনাদের কথামতো চাম্বা কালা টপের মধ্যে যে চেক পয়েন্ট গুলো আছে তাতে খোঁজ নিয়েছিলাম তবে সবাই বলে নাম্বার প্লেটের নম্বর না মিললেও গাড়ির চেহারা মিলেছে। তবে ইনফর্ম করতে দেরি হতে স্বাভাবিক টুরিস্ট ভেবে ছেড়ে দিয়েছে।
   - কি? তা চাম্বা ছাড়িয়ে যে চেকপোস্ট গুলো আছে তাতে খোঁজ নেননি?
- নিয়েছিলাম তবে তারা বলে চাম্বার পর ওই রাস্তা দু'ভাগে ভাগ হয়ে একটা চলেগেছে ধরমশালার দিকে আর অন্যটা মাউনটেনের রাস্তায়। তাছাড়া দুঃখের বিষয় এই দুই রাস্তার মাঝে কোন চেকপোস্ট নেই আর দ্বিতীয় রাস্তাটা চায়না-ইন্ডিয়া বর্ডার। ওই খানটা বেশ বিপদজনক।

চলবে

গ্রাম +পোষ্ট -অকালপৌষ /জেলা -পূর্ব বর্ধমান /পিন -৭১৩১২২ /ফোন - ৯৪৭৪৬০১৬৩৬

Comments :0

Login to leave a comment