দীপশুভ্র সান্যাল
গত বছরের সিকিমের বন্যায় তিস্তার জলে ভেসে গিয়েছিল বহু পাহাড়ি গ্রাম, ভেসে গিয়েছিল সেনা বাহিনীর আস্ত ক্যাম্প। তিস্তার জলে মিশেছিল রাসায়নিক তরল। নদী থেকে হারিয়ে গিয়েছিল বাঙালির সাধের বোরোলি মাছ। নদীর চরে মিলছিল মর্টার, সেল, বোমা। শোনা যায় খোঁজ মেলেনি বহু যুদ্ধাস্ত্রের। গত বছর চরে বড় বিপদ এড়াতে চাষে নিষেধাজ্ঞা ছিল। নিষিদ্ধ ছিল ট্রাক্টর নামানো।
তবে এবছর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি। জলপাইগুড়ি জেলার ক্রান্তি, ময়নাগুড়ি ব্লক থেকে শুরু করে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ, হলদিবাড়ির বাংলাদেশের সীমানা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ তিস্তার চরে জমিতে শুরু হয়েছে চাষ। সংখ্যায় কম হলেও তিস্তায় ফিরেছে বোরোলি।
তিস্তা নদীর নতুন পলি যুক্ত জমিতে শীতের চাষে আগ্রহী হয়ে নতুন দিশা দেখছেন কয়েক হাজার কৃষক।
চাষ শুরু করে দিয়েছেন বেগুন থেকে বটবটি, মটরশুঁটি, টমেটো, বালিয়া আলু, কাঁচা লঙ্কা,করলা,পালং শাক, বাঁধা কপি সহ বিভিন্ন শীতের সবজির।কিছুটা বড়ো হওয়া গাছগুলিতে যত্ন করে ওষুধ স্প্রে সহ অন্যান্য কাজ করছেন কৃষকরা। কয়েকশো বিঘা জমিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছে।
এখানেই নিজের জমি হারিয়ে অন্যের জমিতে চাষ শুরু করেছেন ক্রান্তির এক যুবক। তিনি জানান, বর্ষায় তিস্তা নদীর ধারে অসংখ্য জমিতে চাষ শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেই জমি নদী ভাঙনের পর নষ্ট হয়ে যায়। কোনও উপায় না পেয়ে জলপাইগুড়ি সুকান্ত নগর এলাকার তিস্তা নদীর পাড়ে জমি ভাড়া নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেছেন। শীতকালীন সবজি চাষ করা কমবয়সী কৃষক জানান, যেখানে থাকতেন সেখানে নদী ভাঙনের পর সব শেষ হয়েছে। নিরাশ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তিস্তা নদীতে ফের জমি পেয়ে আবার আশায় দিন গুনছেন তিনি। তাই এবার এখানে এসে ছয় মাস বিভিন্ন সবজি চাষ করে এখানেই থাকবেন তিনি। তবে তিনি একা নন, দক্ষিণবঙ্গের বহু কৃষক এসেছেন চরের জমিতে ফসল ফলাতে।
Teesta Farming
ছিল রাসায়নিক, বন্ধ ছিল চাষ, ফের স্বাভাবিক হচ্ছে তিস্তার চর
×
Comments :0