একদিকে রাজ্যজুড়ে সব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে পর্যালোচনার জন্য শনিবার দুপুর বারোটা থেকে জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। অন্যদিকে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে নার্সদের উপর চড়াও হচ্ছেন শাসক দলের নেতা কর্মীরা। এমনই ঘটনা সামনে এসেছে শুক্রবার।
ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে নার্সদের উপর চড়াও হন তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি তথা ইসলামপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল আগারওয়াল। ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়।
মৃত রোগীর নাম প্রণব দত্ত(৫৫)। বাড়ি ইসলামপুর শহরের ক্ষুদিরামপল্লি এলাকায়। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে বমি ও বুক জ্বালা নিয়ে তাঁকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার পর বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়। কিন্তু একই রাতেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুরে রোগীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করলে একাধিকবার কর্তব্যরত নার্সদের জানানো হলেও তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেননি। অভিযোগ চিকিৎসা না পেয়েই মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাসপাতালে পৌঁছান তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল। তিনি নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তীব্র ভর্ৎসনা করার পাশাপাশি একপর্যায়ে তুই-তোকারি পর্যন্ত শুরু করেন। শাসক দলের নেতার এই আচরণে হাসপাতালে উত্তেজনা চরমে ওঠে। খবর পেয়ে ইসলামপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পৌরসভার চেয়ারম্যান আগরওয়াল হুমকির শুরে বলেন, ‘‘রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় যদি সত্যিই অবহেলা থেকে থাকে, তবে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে আমি ইতিমধ্যেই ঊর্ধ্বতন স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাচ্ছি।’’
অন্যদিকে, বিরোধী শিবিরের তীব্র প্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে। সিপিআই(এম) উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক আনোয়ারুল হক বলেন, ‘‘যেকোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। চিকিৎসায় গাফিলতি থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে কিন্তু এইভাবে হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর চড়াও হওয়ার তো কিছু নেই। এর ফলে চিকিৎসক ও নার্সদের মনোবল ভেঙে যায়। যা পরোক্ষে স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষতি করে।’’
ঘটনার জেরে হাসপাতাল চত্বরে আতঙ্ক ও ক্ষোভের মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা জোরদারের আবেদন জানিয়েছেন। ঘটনাটির তদন্তে নেমেছে পুলিশ ও স্বাস্থ্য দপ্তর।
Comments :0