রবিবার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া শাকিল আহমেদ। সেই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ২৪ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। ধারাবাহিক চাপের মুখে পুলিশ অবশেষে বাধ্য হয়েছে ১জনকে আটক করতে। পুলিশ সূত্রে খবর, আটক করা হয়েছে ঘাতক গাড়িটিকেও। কিন্তু সুনির্দিষ্ট ভাবে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি কিংবা ব্যক্তিদের এখনও চিহ্নিত করা যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তারই প্রতিবাদে নিউটাউনের বিশ্ববাংলা গেটের সামনে অবস্থান শুরু করেছেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। সোমবারের এই ঘটনার খবর বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হয় গণশক্তির ডিজিটালের পর্দায়।
কিন্তু ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও সুনির্দিষ্ট ভাবে কেন কাউকে চিহ্নিত করা গেল না? কেন এখনও ঘাতক গাড়িটির চালককে গ্রেপ্তার করতে পারল না পুলিশ? এই প্রশ্ন তুলে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ নিউটাউনের বিশ্ববাংলা গেটের সামনে অবস্থান শুরু করেছেন পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল করে বিশ্ববাংলা গেটের সামনে আসেন পড়ুয়ারা। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সরাসরি অভিযোগ, এই ঘটনার সঙ্গে প্রভাবশালী যোগ থাকতে পারে। তাই পুলিশ গাড়ির মালিককে আড়াল করতে চাইছে। তাঁর পরিচয় সামনে আনতে চাইছে না। নিছক ১ ব্যক্তিকে আটক দেখানো হচ্ছে। তাঁদের দাবি, ঘটনায় জড়িত গাড়িটির মালিকের নাম প্রকাশ্যে আনতে হবে পুলিশকে। যতক্ষণ না পুলিশ তাঁদের দাবি মানছে, ততক্ষণ তাঁরা অবস্থান চালাবেন বলে জানাচ্ছেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ পড়ুয়ারা।
ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিনে নিউটাউনে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের সামনে বেপরোয়া গতির বলি হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের স্নাতক স্তরের পড়ুয়া শাকিল আহমেদ। অভিযোগ, গাড়ির ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সার্ভিস রোডে ছিটকে পড়েন শাকিল। গুরুতর জখম অবস্থায় সেখানেই ১৫ মিনিটের মতো পড়ে ছিলেন শাকিল। তাঁর সহপাঠিরা খবর পেয়ে, তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু প্রাণে বাঁচানো যায়নি মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরের এই পড়ুয়াকে। সহপাঠির মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসতে রবিবার বিকেল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান ও দফায় দফায় পথ অবরোধ শুরু করেন আলিয়ার ছাত্র-ছাত্রীরা।
পুলিশ এবং রাজারহাট নিউটাউন বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চ্যাটার্জি একাধিকবার অবস্থান তুলতে গিয়েও ব্যার্থ হন। পড়ুয়াদের অভিযোগ, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে শাকিলের ময়নাতদন্তের পরে তাঁঁর দেহ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আনতে বাধা দেয় পুলিশ। শাকিলের পরিবারকে হুমকি দিয়ে তাঁর দেহ সরাসরি মুর্শিদাবাদের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এই ঘটনায় ক্ষোভের আগুনে কার্যত ঘি পড়ে।
Comments :0