বাংলা-সিকিম সীমান্তের তারখোলা এলাকায় তিস্তা নদীর ওপর নবনির্মিত অস্থায়ী সেতু ভেঙে পড়ল। মঙ্গলবার এই বেইলি সেতু দুর্ঘটনায় এক শ্রমিক তলিয়ে গেছেন খরস্রোতা তিস্তা নদীতে। তলিয়ে যাওয়া শ্রমিকের নাম গুলাম সারোয়ার (২৬)।
সেতু দুর্ঘটনায় আরো তিনজন শ্রমিক গুরুতর জখন হয়েছেন। জখম শ্রমিকেরা হলেন আনাল আলি, তালিব আলি ও আনিয়া আকবর। অন্যান্য শ্রমিকেরা উদ্ধার কাজে নেমে পড়েন।
আহত শ্রমিক তালিব আলি বলেন, ‘‘আমরা প্রায় ১৫জন শ্রমিক একসাথে কাজ করছিলাম। হঠাৎ করেই হুড়মুড়িয়ে সেতুটি ভেঙে পড়লো। চোখের সামনে আমাদেরই সহকর্মী তিস্তার জলে তলিয়ে গেল।’’
দ্রুত জখম শ্রমিকদের উদ্ধারের পর কালিম্পঙ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। মৃত ও জখম শ্রমিকদের প্রত্যেকেই আসামের বাসিন্দা বলে জানা যাচ্ছে। যদিও তারখোলা এলাকায় বেইলি সেতু দুর্ঘটনায় তিস্তায় তলিয়ে যাওয়া নিখোঁজ শ্রমিকের কোন খোঁজ মেলেনি। তলিয়ে যাওয়া শ্রমিকের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, জাতীয় জলবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা এনএইচপিসি—র তরফ থেকে একটি বেসরকারি সংস্থাকে বাংলা—সিকিম সীমান্তের তারখোলা এলাকায় তিস্তা নদীর ওপর অস্থায়ী ব্রেইলি সেতু তৈরীর কাজের বরাত দেওয়া হয়েছিলো। বৃহস্পতিবার এই সেতুটির উদ্বোধনের কথা ছিলো। উদ্বোধনের দু’দিন আগে এদিন সকাল প্রায় দশটা নাগাদ তারখোলা এলাকায় আচমকাই সেতু ভেঙে পড়ে।
বর্ষার আগে অস্থায়ী লোহার সেতু তুলে নিয়ে স্থায়ীভাবে তারখোলা এলাকায় সেতু তৈরির করার কথা ছিলো।
কালিম্পঙের জেলা শাসক বালসুব্রমণ্যম পি বলেছেন, ‘‘দুর্ঘটনার খবর পেয়েছি। আধিকারিকদের খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।’’
২০২৩’র ৩ অক্টোবর রাতে ভারি বর্ষণে উত্তর সিকিমের চুংথামে লোনাক হ্রদে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ ভেঙে যায়। তিস্তা নদীতে হড়পা বানে বাংলা—সিকিম সংযোগের ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারখোলা এলাকার সেতু তিস্তা নদীর প্রবল জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত হয়। পরবর্তী সময়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার লক্ষ্যেই জাতীয় জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থা এনএইচপিসি লোহার অস্থায়ী এই সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়।
সেতু নির্মাণকাজে বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার সুপারভাইজার সন্দীপ প্রধান জানান, ‘‘সেতুর উদ্বোধনের দু’দিন বাকি ছিল। শেষ দিনের কাজ করছিলো শ্রমিকেরা। কথা ছিলো বর্ষার আগে সেতুটি তুলে নেওয়া হবে।’’
Comments :0