চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ সহকর্মী নার্সের। গ্রেপ্তার চিকিৎসক। কিন্তু এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন গ্রামবাসীরা।
ঘটনাটি ঘটেছে, বীরভূমের মুরারই ১ নম্বর ব্লকের একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। এলাকার ৩০ টি গ্রামের মানুষ ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে কোন অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক নেই। দুই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের উপর নির্ভরশীল এলাকার মানুষ। রয়েছেন দুই জন নার্স। তারই মধ্যে এক নার্স শনিবার রাতে চিকিৎসক চয়ন মুখার্জির বিরুদ্ধে রামপুরহাট থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের বাড়ি থেকে চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে এই অভিযোগ নিয়ে নানা বিতর্ক দানা বেঁধেছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকার মানুষ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা পরিষেবা নেওয়া আশপাশের গ্রামের বাসিন্দা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা এই অভিযোগের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। স্পষ্ট দাবি করেছেন, চিকিৎসককে ফাঁসানো হয়েছে। নার্সের করা অভিযোগও নানা প্রশ্ন তুলেছে। যেমন অভিযোগে নার্সটি লিখেছেন, অভিযুক্ত চিকিৎসক তাঁকে গত ২০২৩ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি ধর্ষণ করেন এবং চলতি মাসের ১০ তারিখ ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অভিযোগকারিনী কোনও মন্তব্য করতে চান নি।
চিকিৎসকের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের।
রামপুরহাট থানায় গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসার পথে ধৃত চিকিৎসক বলেছেন, ‘‘সাজানো ঘটনা।’’ অপরদিকে খবর জানাজানি হতেই একজোট হয়ে গ্রামেই বিক্ষোভে সামিল হন গ্রামবাসীদের বড় অংশ। মহিলারা বলেন, ‘‘এই চিকিৎসকের দ্বারা মানুষ উপকৃত। বরং ওই নার্সের আচরন ভাল নয়। আমরা চিকিৎসককে হাসপাতালে চাই। নার্সকে নয়। পুলিশ তদন্ত করে আসল সত্য বের করুক।’’ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই চুক্তি ভীত্তিক কর্মী রানা মালেরও দাবি, ‘‘অভিযোগকারী নার্সের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। হয়ত কোনও উদ্দেশ্য পূরণ করতে চেয়েছিল চিকিৎসকের দ্বারা। ডাক্তারবাবু সাড়া না দেওয়ায় এমনটা করেছে। তবে আমরা সব সময় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকি। ডাক্তারবাবুর এমন করতে পারেন বিশ্বাস করি না।’’
মুরারইয়ের ব্লকপ্রাথমিক স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিজিত মণ্ডল জানিয়েছেন, “শনিবার ওই নার্স আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। আমি বিষয়টি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানাই। এরপর আমরা নার্সকে নিয়ে রামপুরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করিয়েছি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে আসল সত্য উদঘাটন করুক।’’ তবে অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি ওই অভিযোগকারিণী। উল্টে পুলিশ ডেকে তাঁর বাড়ির সামনে থেকে সংবাদমাধ্যমকে সরিয়ে দেন।
Comments :0