খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার ছিনিয়ে নিতে হবে। সেই লড়াইয়ের প্রস্তুতির জন্য গতর খেটে যারা বেঁচে থাকার লড়াই করেন তাদের সমাবেশ ২০ এপ্রিল। সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের নেত্রী বন্যা টুডু মঙ্গলবার সোদপুর ট্রাফিক মোড়ে একথা বলেন। ২০ এপ্রিল ব্রিগেড সমাবেশ সফল করার ডাক দিয়ে তিনি বলেন, চোরের সরকার আর ডাকাতের সরকার চলছে, রাজ্যে ও দেশে। আদিবাসীরা মাঠে খাটে। তাদের তৈরি চাল শহর ও গ্রামের মানুষ খায়। আদিবাসী খেতমজুররা কি পায়? তিনি বলেন, লাল সরকার যতদিন ছিল আমাদের মনের বল ততদিন ছিল। বামফ্রন্ট সরকার পাট্টা দিয়েছিল এখন তৃনমূল সরকার সেই পাট্টার জমি কেড়ে নিচ্ছে। পাট্টার জমি কেড়ে নেওয়ার সময় বলা হচ্ছে লক্ষী ভান্ডার তো পাচ্ছো। গরিব মানুষের পেটে লাঠি পরছে। এখন সেই লাঠি আমরা টেনে ধরছি।
বন্যা টুডু বলেন, রাজ্যে মেয়েদের কোন নিরাপত্তা নেই। দিনের পর দিন মেয়েরা রাজ্যে নির্যাতিত হচ্ছে। লাল সরকার থাকার সময় মাসে চারবার রেশন দেওয়া হতো, এখন একবার দিচ্ছে। পঞ্চায়েত জেলা পরিষদ সব তৃণমূলের পার্টি অফিস হয়ে গেছে। খেটে খাওয়া মানুষের ঘর হচ্ছে না, ঘর তৈরির টাকা লুট হচ্ছে , দেখা যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী চোর, অথচ সে কথা বলা যাবে না। পুলিশ আর সিভিক দিয়ে অত্যাচার করা হবে। এখন ভয় ভেঙে মানুষ এগিয়ে এসছে তাই, বিজেপি তৃণমূল এখন ভয় পাচ্ছে।
শ্রমিক এবং শিল্প বিরোধী শ্রম কোডের তীব্র প্রতিবাদ করে, সিআইটিইউ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গার্গী চ্যাটার্জি গণ কনভেনশনে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার শ্রম কোডের মধ্যে দিয়ে, শ্রমিকদের অধিকার কেড়ে নেওয়া কে আইনে পরিণত করতে চাইছে। রাজ্যের তৃণমূল সরকার এই শ্রম ও কোডের বিরুদ্ধে কোন কথা বলেনি। দেখা যাচ্ছে রাজ্যে আগে থেকেই শ্রমিক বিরোধী নীতি কার্যকর করা হচ্ছে।
শ্রমিকদের অধিকারের কথা তুলে ধরে, দুলাল চক্রবর্তী বলেন, পানিহাটির কৃতি ছাত্রী অভয়ার ওপর নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড নামিয়ে আনার অপরাধীদের আড়াল করছে রাজ্যের সরকার এবং কেন্দ্রের সরকারও।
২০ এপ্রিল ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের সমাবেশ সফল করার আহ্বান জানিয়ে সিআইটিইউ অনুমোদিত পানিহাটি ট্রেড ইউনিয়ন কোঅর্ডিনেশন কমিটির ডাকে প্রকাশ্য গণ কনভেনশন হয় সোদপুর ট্রাফিক মোড়ে। বন্যা টুডু, গার্গী চ্যাটার্জি,দুলাল চক্রবর্তী ছাড়াও বক্তাদের মধ্যে ছিলেন,অনল চক্রবর্তী,শিবরাম রায়, প্রসেনজিৎ রায়, সঞ্জয় ভট্টাচার্য। মূল প্রস্তাব উত্থাপন করেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য।
পানিহাটি পৌরসভা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন সহ রাজা বিস্কুট, ডাব্লুপিআইএল, এনটিসি, বেঙ্গল কেমিক্যাল, ট্রাক্টর ইন্ডিয়া লিমিটেড, মুরারকা পেইন্টস, আইসিডিএস, মিডডে মিল, জিপিএস ৯৫ পেনশনার, ক্ষুদ্র কুটির শিল্প, দোকান কর্মচারী, পথ পার্শ্বস্থ হকার্স , রেল হকার্স , অটো , জনপদ পরিবহন শ্রমিক, ট্যাক্সি, গিগ ওয়ার্কার্স, এলআইসি এজেন্ট, অটোমোবাইল, মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্ষেত্রগুলির সিআইটিইউ অনুমোদিত শ্রমিক ইউনিয়ন গুলির সদস্যরা এই গণকনভেনশনে শামিল হন।
কনভেনশন পরিচালনা করে সুজিত মজুমদার, শুভাশিস মুখার্জি শিবরাম রায়, অজিত রায়, বাবলা গুহ, কনিকা দাস কে নিয়ে গঠিত সভাপতি মন্ডলী ।
বক্তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রমজীবী মানুষের জীবন সংগ্রামের উপর নেমে আসা যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেন। রাজ্য সরকার কিভাবে শোষণ নিষ্পেষণকে মদত দিচ্ছে সে কথা তুলে ধরেন বক্তারা। ২০ এপ্রিল ব্রিগেড সমাবেশ এবং ২০ মে দেশব্যাপি ধর্মঘট সফল করার জন্য সমস্ত শ্রমজীবী মানুষের ঐক্য গড়ে তোলার উপর জোর দেন বক্তারা।
Comments :0