Job scam protest

চলবে লড়াই, চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ মঞ্চে সিপিআই(এম)

রাজ্য

চাকরি প্রার্থীদের মঞ্চে সিপিআই(এম) নেতা পলাশ দাস। ছবি : মনোজ আচার্য

 যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা লড়াই চালাচ্ছন। বামপন্থীরা লড়াইয়ের পাশে ছিলেন, থাকবেন। রাজ্যের মানুষের থেকে অন্তত এক কোটি সই সংগ্রহ করা হবে। 

শনিবার বিভিন্ন স্তরের চাকরি প্রার্থীদের মঞ্চে এই অবস্থান জানিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পলাশ দাশ। তিনি বলেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ে নির্দিষ্ট দু’টি মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির এজলাস থেকে সরবে। কিন্তু যে নথি এবং প্রমাণের নিরিখে বিচারপতি গাঙ্গুলি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সেগুলি অন্য বিচারপতিদেরও বিবেচনায় থাকবে। তার ওপর ভিত্তি করেই বিচার চলবে।’’ 

এদিন আপার প্রাইমারি, প্রাইমারি, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি, নবম থেকে দ্বাদশের যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে যান দাস। প্ল্যাকার্ডে চাকরিপ্রার্থীরা ব্যানারে লিখেছেন ‘এত দুর্নীতি দেখেও মুখ্যমন্ত্রী চুপ কেন’। আরেকটি প্ল্যাকার্ডে বিচারপতি গাঙ্গুলির এজলাস থেকে মামলা সরানোর নির্দেশে খেদ জানিয়েছেন।

 

সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, দুর্নীতি ও দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি এবং এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের ভূমিকা এবং আরএসএস-বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের স্পষ্ট বোঝাপড়া রাজ্যের সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরবে সিপিআই(এম)। অন্তত এক কোটি রাজ্যবাসীর স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে। 

তৃণমূল সাংসদ এবং মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ওই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের গ্রেপ্তারির পদ জেরার নিরিখে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার গোয়েন্দারা বিচারপতি গাঙ্গুলির এজলাসে তথ্য হাজির করেন। বিচারপতি গাঙ্গুলি পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন যে প্রয়োজনে অভিষেককেও জেরা করা যাবে। এরপরই জেরা ঠেকাতে তুমুল ছুটোছুটি শুরু করেন তৃণমূল নেতা অভিষেক ব্যানার্জি।

 

উল্লেখ্য শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানান অভিষেক ব্যানার্জি। এছাড়া একাধিক তৃণমূল নেতা নিজেদের ফেসবুক, টুইটারে বেলাগাম আক্রমণ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। সেই আক্রমণের মধ্যে দিয়ে তাদের উচ্ছাস ফুটে ওঠে। তৃণমূলের এই আচরনের পরিপ্রেক্ষিতে সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি চোররা উচ্ছসিত। আর যাদের চাকরি লুঠ হয়েছে তারা বিমর্ষ।’’

সুপ্রিম কোর্ট রায়ে নির্দিষ্ট করে অভিষেক সংক্রান্ত মামলাই সরানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমকে। বরিষ্ঠ বিচারপতি এবং সিপিআই(এম) সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্যও শুক্রবার ছিলেন সুপ্রিম কোর্টে। তিনিও রায়ের ব্যাখ্যায় জানান যে অভিষেকের জেরা সংক্রান্ত মামলাই কেবল বিচারপতি গাঙ্গুলির এজলাস থেকে সরানোর কথা বলা হয়েছে রায়ে। লিখিত রায়ে ওই মামলারই উল্লেখ রয়েছে। শীর্ষ আদালত স্পষ্টই জানিয়েছে যে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। একমাত্র বিষয় হয়েছে বিচারপতি গাঙ্গুলির সংবাদ চ্যানেলে সাক্ষাৎকার। বিচার পক্ষপাত দুষ্ট, এমন অভিযোগ তোলার সুযোগ যাতে না থাকে তার জন্যই এই মামলা সরানোর সিদ্ধান্ত।

 

পলাশ দাশ বলেছেন, ‘‘তৃণমূল-বিজেপি যোগসাজশের মদ্যে দিয়ে বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা সম্পর্কেও প্রচার করবে সিপিআই(এম)। কিন্তু আদালতের কাছে বা বাংলার মানুষের কাছে টাকার বিনিময়ে চাকরির এই বিপুল কেলেঙ্কারি উঠে এসেছে ধারাবাহিক আন্দোলনের জন্য। চাকরিপ্রার্থীরা হটে না গিয়ে রাস্তায় বসে রয়েছেন দিনের পর দিন। দোষীদের শাস্তি এবং যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরির পক্ষে রাস্তার এই আন্দোলনই প্রধান ভরসা।’’

 

Comments :0

Login to leave a comment