CENSUS PEOPLE'S DEMOCRACY

জনগণনার দাবি ‘পিপলস ডেমোক্র্যাসি’-র সম্পাদকীয়তে

জাতীয়

বিজ্ঞানসম্মত পরিসংখ্যানকে ঘৃণা করছে দেশের সরকার। এই দৃষ্টিভঙ্গির শিকার জাতীয় জনগণনা। তিন বছর কেটে যাওয়ার পরও জানানো হয়নি কবে হবে এই কাজ। গুরুতর প্রভাবও পড়ছে জনতার জীবনে। প্রায় ১১ কোটি নাগরিক খাদ্যের অধিকার আইনের আওতায় আসতে পারছেন না।
জাতীয় জনগণনা বা ‘সেন্সাস’করার দাবিতে এই মর্মে সরব হয়েছে সিপিআই(এম)। পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপত্র ‘পিপলস ডেমোক্র্যাসি’-র আগামী সংখ্যার সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘‘দেশের সব গণতান্ত্রিক অংশ এবং বিরোধীদের এই দাবিতে সরব হওয়া জরুরি।’’ 
সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘‘এর আগেও বিভিন্ন সমীক্ষা হয় চেপে দেওয়া হয়েছে অথবা মাপকাঠি বদলে বিকৃত করা হয়েছে।’’ বলা হয়েছে, ‘‘রাজনীতি এবং নীতি নির্ধারণে যুক্তিবাদ বিরোধী কার্যক্রমকে মদত দিচ্ছে আরএসএস-বিজেপি। তার পিছনে রয়েছে হিন্দুত্ববাদী দৃষ্টিভঙ্গি। জনগণনা না করানোর পিছনেও একই কারণ কাজ করছে।’’ 
উদাহরণ দিয়েছে সম্পাদকীয়। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সমানে বলে চলেছেন যে ২০৪১ সালে রাজ্যে মুসলিমদের সংখ্যা হিন্দুদের ছাড়িয়ে যাবে। সম্পাদকীয় বলেছে, ‘‘কোনও তথ্য বা প্রমাণ ছাড়াই এই দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু এই প্রচারকে সামনে রেখেই মুসলিম বিরোধী আইন পাশ করা চলছে।’’ 
দেশে শেষ জাতীয় জনগণনার রিপোর্ট প্রকাশ হয় ২০১১’তে। দশ বছর অন্ত জনগণনার ফল প্রকাশ হচ্ছে ব্রিটিশ শাসনের সময় থেকে। কিন্তু বিজেপি জোট সরকার কোভিডের কারণ দেখিয়ে জনগণনা বন্ধ করে রেখেছে। হিসেব অনুযায়ী ২০২১ সালেই জনগণনার রিপোর্ট প্রকাশ করার কথা। তিন বছর পরও হদিস নেই কবে বের হবে এই রিপোর্ট, সমীক্ষার কাজই বা হবে কবে।
জনগণনার না হওয়ার সমস্যা দেখিয়ে সম্পাদকীয় বলেছে, ‘‘এই রিপোর্ট কেবল জনতার সংখ্যা দেখায় না। আবাস, কৃষিতে যুক্ত বিভিন্ন শ্রেণি বা খেতমজুরদের হিসেবও দেয়। গ্রামে এবং শহরে জনসংখ্যার কত অংশ বাস করছে পাওয়া যায় তার হিসেবও। কোন ভাষায় কতজন কথা বলে, তফসিলি জাতি বা আদিবাসী সম্পর্কেও বিশদ তথ্য দেয় জনগণনা।’’ 
খাদ্য সুরক্ষা আইনে গ্রামে ৭৫ শতাংশ এবং শহরে ৫০ শতাংশকে আওতায় আনা হয়েছে। এই উপভোক্তা ঠিক হয় সেন্সাসের নিরিখে। আগের সেন্সাসে ৮১.৫ কোটি এই আইনের আওতায় ছিল। জনসংখ্যা বৃদ্ধির অনুমিত হার বিচারে ৯৩ কোটির আওতায় আসা উচিত। কিন্ত নতুন ১১ কোটি বাইরে থাকছে জনগণনা না হওয়ায়। 
সম্পাদকীয় মনে করিয়েছে, আসন পুনর্বিন্যাস এবং সংসদ ও বিধানসভায় নারীদের সংরক্ষণ আইনের প্রয়োগও জনগণনার ওপর নির্ভর করে রয়েছে। 
সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘‘প্রশাসনিক সীমা পরিবর্তন বন্ধ রাখার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২৪’র জুনে। জনগণনার জন্য এই পরিবর্তন স্থগিত রাখা দরকার। সেক্ষেত্রে মেয়াদ বাড়ানো দরকার ছিল, কিন্তু তা করা হয়নি।’’ বলা হয়েছে, ‘‘কেন্দ্রীয় বাজেটেও জনগণনার জন্য উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ করা হয়নি।’’

Comments :0

Login to leave a comment