EAST BENGAL

ডুরান্ডের শুরুতেই জয় হাতছাড়া ইস্টবেঙ্গলের!

খেলা

durand cup mohun bagan indian football bangladesh army east bengal bengali news

মরশুমে প্রথমবারের জন্য রবিবার মাঠে নামল ইস্টবেঙ্গল। ২০২৩ ডুরান্ড কাপে প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ আর্মি। সেই ম্যাচের দুই অর্ধে দেখা মিলল দুই ইস্টবেঙ্গলের। আর এই পার্থক্যের ফলেই জয় অধরা রইল লাল হলুদের। ম্যাচ শেষ হল ২-২ গোলে। ম্যাচ শেষে লাল হলুদের হেড কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত বুঝলেন, শুধু কথার কথা নয়, বাস্তবের মাটিতেও নিজের কোচিং কেরিয়ারের কঠিনতম অ্যাসাইনমেন্টটি নিয়ে ফেলেছেন তিনি। 

এদিন ম্যাচ শুরুর বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকেই যুবভারতীর বাইরে ছিল লাল হলুদ সমর্থকদের ভিড়। ফ্ল্যাগ উড়িয়ে প্রিয় দলকে সমর্থন, টিফো, স্কার্ফ এবং লাল হলুদ জনতার উন্মাদনা নজর কাড়ল বারবার। কিন্তু জয় এল কই

প্রথমার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণে ঝড় তোলে ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের ৬ মিনিটে, সিভেরিওর হাতে বল লাগার দরুণ গোল বাতিল হয় লাল হলুদের। তবে সমর্থকরা কিন্তু বরাবর সাপোর্ট করে গেছেন তাঁদের প্রিয় দলকে। গ্যালারি থেকে বারবার স্লোগান উঠল ‘ইস্টবেঙ্গল-ইস্টবেঙ্গল’ বলে। 

দল ডুরান্ড কাপের প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমেছে। স্বভাবতই, সাপোর্টারদের মধ্যে উৎসাহ এবং উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু হাসিমুখে ফেরা হলনা তাঁদের। ম্যাচের ২৩ মিনিটে, সুযোগ নষ্ট করেন নন্দকুমার। তবে হরমনজোৎ সিং খাবরা এবং নাওরেম মহেশ মাঠ জুড়ে খেলেন। বলা যেতে পারে, বেশ সপ্রতিভ ছিলেন গোটা ম্যাচে। 

এরমধ্যেই ম্যাচের ৩২ মিনিটে পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। পেনাল্টি থেকে দলকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন নবাগত বিদেশি মিডফিল্ডার সল ক্রেসপো। 

এর কিছুক্ষণ পর, গুইতের শট দুর্দান্ত সেভ করেন বাংলাদেশ আর্মির গোলরক্ষক আশরাফুল রানা। একের পর এক আক্রমণে তখন দিশেহারা বাংলাদেশ। তার কয়েক মিনিট পরে সিভেরিওর শট একটুর জন্য বাইরে না গেলে, ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। 

ফার্স্ট হাফের অতিরিক্ত সময়ে, দুরন্ত হেডে গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন সিভেরিও। এদিনের ম্যাচে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ছিল খাবরার হাতে। তাঁর ভাসানো ক্রস থেকেই গোল করেন সিভেরিও।  প্রথমার্ধ শেষ হয় ২-০ ফলাফল নিয়ে। 

এই দাপটের পরিস্থিতি বজায় ছিল দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম স্পেলেও। ছোট ছোট পাসে খেলে আক্রমণ গড়া শুরু করে ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠ এবং আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়রা। বাংলাদেশ আর্মির খেলোয়াড়রা আক্রমণে উঠলেও, একবারও মনে হয়নি গোলের দরজা খুলতে পারবেন তাঁরা। 

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের বয়স যখন ৫৭ মিনিট, নিশু কুমারের ভলি বারপোস্টের ওপর দিয়ে একটুর জন্য বাইরে যায়। তার কয়েকমুহূর্ত পর আবার সিভেরিওর মিস। ম্যাচের ৬২ মিনিটে, তিনটি পরিবর্তন করেন ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাত। সল ক্রেসপোর বদলে মাঠে আসেন বোরহা হেরেরা, গুইতের জায়গায় মোবাসির এবং সিভেরিওর বদলে আসেন ভিপি সুহের। 

কিন্তু এর কিছু পরেই তাল কাটে। অহেতুক ফাউল করে সরাসরি লালকার্ড দেখেন নিশু কুমার। রক্ষণভাগে হঠাৎ করে তৈরি হয় শূন্যতা। তারফলে কার্লেস কুয়াদ্রাতের যাবতীয় পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। পরিস্থিতি সামলাতে মাঠে নামানো হয় নাবগত অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্ডার জর্ডন এলসেকে। তিনি রবিবারই কলকাতায় পা রেখেছেন। 

ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সের শূন্যস্থান ব্যবহার করে ক্রমে পরিস্থিতির রাশ নিজেদের হাতে নিতে শুরু করে বাংলাদেশ আর্মি। সেকেন্ড হাফ শেষের একটু আগে, ৮৮ মিনিটে বাংলাদেশ আর্মির হয়ে প্রথম গোলটি করেন শাহারিয়ার ইমন। সংযুক্ত সময়ের ৫মিনিটের মাথায় বাংলাদেশ আর্মির হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন মিরাজ। এই গোলের সুবাদেই জয় অধরা থেকে গেল ইস্টবেঙ্গলের। বলা যেতে পারে, শেষ কয়েকমুহূর্তের ঝড়েই খেই হারাল ইস্টবেঙ্গল। 

Comments :0

Login to leave a comment