NOMINATION SCAM

বিদেশে থেকে মনোনয়ন! কারচুপিতে ফের সরব সেলিম

রাজ্য

মিছিল করে বামপন্থীদের মনোনয়ন জমার ছবি।

আট ঘন্টায় ৪০ হাজারের বেশি মনোনয়ন জমা দিয়েছে তৃণমূল। সোমবার মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘তৃণমূলের যেই মনোনয়ন জমা পড়েছে শেষের দিকে তার অধিকাংশের কোন ‘হার্ড কপি‘ নেই। চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলছি এগুলির সব ‘সফট কপি’ কপি জমা পড়েছে।’’ 

সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘‘প্রমাণ দিয়ে দিতে পারবো যে এমন কয়েক জনের মনোনয়ন জমা পড়েছে যারা এখন বিদেশে আছে। কিন্তু তাদের মনোনয়ন জমা পড়েছে বিডিও এসডিও’র কাছে।’’ 

মনোনয়ন জমা নিয়ে বিপুল কারচুপির অভিযোগে ১৫ জুন থেকে সরব সিপিআই(এম)। নির্বাচন কমিশনের সামনে ওই দিন অবস্থানেই সেলিম বলেছিলেন, শেষ দু’দিনে তৃণমূল যে সংখ্যায় মনোনয়ন জমা করেছে অঙ্কের হিসেবেই তা অসম্ভব। সিপিআই(এম) বলছে, ব্লক দপ্তরে নিজেরা জাজির হয়ে নিয়ম মেনে মনোনয়ন জমা হয়নি বহু ক্ষেত্রে। সিসিটিভি’তে হাজিরার প্রমাণ আদালতে দেখতে চাইলে জারিজুরি ফাঁস হয়ে যাবে। 

এদিনও সেলিমের অভিযোগ, কাগজপত্রে অর্থাৎ ‘হার্ড কপি’-তে মনোনয়ন জমা পড়েনি। ব্লক দপ্তরের কম্পিউটার নথি বা ‘সফট কপি’-তে জমা দেওয়া হয়েছে। অনেকে ব্লক দপ্তরে তো নয়ই এমনকি দেশেও ছিলেন না। অথচ মনোনয়ন তালিকায় নাম আছে।

মারাত্মক এই অভিযোগের কোনও ব্যাখ্যা গত চারদিনে দিতে পারেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কমিশনের তরফে কোনও বিবৃতিতে এই অভিযোগ খারিজও করা হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক প্রার্থীকে ব্লক দপ্তরে হাজির হয়ে নথি জমা দিয়ে ডিসিআর কাটতে হয়। সেটি জমা দিলে তবে মনোনয়ন হবে। অল্প মেয়াদের মনোনয়ন পর্বে প্রথম দিনে বেশিরভাগ জায়গায় সরকারি কর্মীদের বসানোর ব্যবস্থা করতে পারেনি কমিশন। বিরোধী প্রার্থীরা চার-পাঁচ ঘন্টা বসে থেকেছেন। 

তুমুল অন্তর্দ্বন্দ্বের ভয়ে প্রথমদিকে মনোনয়ন জমা দেয়নি তৃণমূল। বিক্ষুব্ধরা যদি ঝামেলা পাকায়, সেই ভয়েই এমন কৌশল বলছেন বিভিন্ন জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। প্রশ্ন উঠেছে শেষ দু’দিনে সত্তর হাজারের বেশি মনোনয়ন কি করে জমা করে ফেলল তৃণমূল। স্থানীয় ব্লক দপ্তগরেও তৃণমূল প্রার্থীদের লম্বা লাইন চোখে পড়েনি।

পঞ্চায়েতের মনোনয়নের প্রথম দিকে তৃণমূল মনোনয়ন দাখিলে বিরোধীদের থেকে পিছিয়ে থাকলেও শেষের দিকে হঠাৎ করে একদিন ৪০ হাজারের বেশি মনোনয়ন জমা দেয় শাসক দল। সেই সময় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল সিপিআই(এম)। এদিন মহম্মদ সেলিম দাবি করেছেন তাঁর কাছে এমন কিছু প্রার্থীর নাম রয়েছে যারা এখন দেশের বাইরে। 

এদিন তিনি বলেন, ‘‘মানুষ এই নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের হাতে ক্ষমতা চাইছে আইন নয়। আইন দেখবে প্রশাসন। ২০১৮ আর ২০২৩ এক নয়। তা তৃণমূল বুঝতে পেরে পুলিশকে ব্যবহার করছে। পুলিশের কাজ অশান্তিকে মদত দেওয়া নয়। যদি তারা তা করতে যায় তবে তাদের মানুষের রোষের মুখে পড়তে হবে যা রাজ্যের জন্য ভালো হবে না।’’ 

নির্বাচন কমিশন এখনও পর্যন্ত কোন কোন বুথ বা অঞ্চল স্পর্ষকাতর তার কোন তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি। এই দিকে আগামীকাল সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে শুনানি হওয়ার কথা। এই প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘নিরাপত্তার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তারা রাজ্য প্রশাসনকে পরিচালনা করবে। কিন্তু এখানে উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে। পক্ষপাত তুষ্ট আচরন করছে কমিশন এবং প্রশাসন। যেখানে মানুষ ভোটে নামবে তাকে স্পর্ষকাতর করতে চাইছে কমিশন এবং পুলিশ। যেখানে গুন্ডা নামবে তাকে শান্তিপূর্ণ বলবে কমিশন।’’

Comments :0

Login to leave a comment