মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন শিবসেনার নেতা একনাথ শিন্ডে। মঙ্গলবার রাজ্যপাল কাছে গিয়ে নিজের ইস্তফা পত্র দেন শিন্ডে। এদিন তার সাথে ছিলেন দুই উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এবং অজিত পাওয়ার। কিন্তু নতুন সরকারের মুখ্যমন্ত্রীকে হবে তা নিয়ে জল্পনা চলছে এখনও।
সদস্য সমাপ্ত মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছে এনডিএ। মহারাষ্ট্রে ২৮৮টি আসনের মধ্যে ২৩২টিতে জয়ী হয়েছে এনডিএ। বিজেপি একা পেয়েছে ১৩২, শিব সেনা ৫৭ এবং এনসিপি ৪১। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি নিজের হাতে রাখতে চাইছে ক্ষমতার রাশ। সেই ক্ষেত্রে ফড়নবিশকে ফের মুখ্যমন্ত্রী করতে পারেন তারা। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীত্ব নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া শিবসেনা। ইতিমধ্যে ‘বিহার মডেল’কে হাতিয়ার করেছে তারা। বিহারে নীতিশের জেডিইউ বিজেপির থেকে কম বিধানসভায় আসনের নিরিখে। কিন্তু বিজেপি সর্ববৃহত দল হলেও মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন নীতিশ কুমার। সেই ক্ষেত্রে শিবসেনা দাবি করতে শুরু করেছে যে বিহারের মতো মহারাষ্ট্রেও বিজেপির থেকে কম আসন পাওয়া শিবসেনার পরিদীয় নেতা একনাথ শিন্ডেকেই মুখ্যমন্ত্রী করা হোক।
শিব সেনার দাবি একনাথ শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালিন সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের ফলে লোকসভা ভোটে ধাক্কা কাটিয়ে উঠে এই জয় ছিনিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অজিত পাওয়ারের এনসিপি কার দিকে ঝুঁকে থাকে সেটাই এখন দেখার। গত মন্ত্রিসভায় শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী থাকলেও উপ-মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন দুজন বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এবং এনসিপির অজিত পাওয়ার। সূত্রের খবর অজিত ও তার দল ঝুঁকে আছে বিজেপির দিকে।
মহারাষ্ট্র বিজেপির অন্দরে আওয়াজ উঠতে শুরু করেছে ফড়নবিশকে পূর্ণ সময়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করার। তাদের কথায় গত সরকারের সময় সংখ্যা গরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও ফড়নবিশ যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিয়েছিল তাতে এবার তার মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত এবং তা পূর্ণ সময়ের জন্য।
আর এই পরিস্থিতিতেই বিজেপির গলায় কাঁটার মতো বিঁধছে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পাওয়া। কয়েক মাস আগে কেন্দ্রে সরকার বিজেপি সরকার গঠন করেছে শরিকদের ওপর ভরসা করে। মহারাষ্ট্রেও একই ছবি দেখা যাচ্ছে। বিজেপি মহারাষ্ট্রে পেয়েছে ১৩২টি আসন। সংখ্যা গরিষ্ঠতার জন্য দরকার আরও ১৪টি আসন। আর একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য এনসিপি, শিব সেনার ওপর ভরসা রাখতে হচ্ছে বিজেপিকে। আর এই সুযোগেই মুখ্যমন্ত্রীত্ব নিয়ে বিজেপির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে শিব সেনা।
মহারাষ্ট্রের এই পরিস্থিতি পাঁচ বছর আগের কথা মনে করাচ্ছে অনেককে। ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ জয়ী হলেও তৎকালিন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব থ্যাকারের সাথে মুখ্যমন্ত্রীত্ব নিয়ে বিজেপির জটিলতা তৈরি হওয়ায় জোট ভেঙে যায়। কংগ্রেস এনসিপি এবং শিবসেনা নিয়ে তৈরি হয় ‘মহা বিকাশ অগধি’। উদ্ধবের নেতৃত্বে সরকার গঠন হলেও তা বেশিদিন টেকেনি।
একনাথ শিন্ডে সহ কয়েকজন শিবসেনা বিধায়ককে নিজেদের দিকে টেনে সরকার ফেলে দেয় বিজেপি। পরবর্তী সময় অজিত পাওয়াকে দিয়ে এনসিপি ভাঙিয়ে নিজেদের দিকে টেনে নেয় বিজেপি।
Maharashtra
ইস্তফা দিলেন শিন্ডে, নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে হবে তা নিয়ে চলছে জল্পনা
×
Comments :0