আন্দোলনকারী কৃষকদের উপর গুলি চালাল হরিয়ানা পুলিশ। জানা যাচ্ছে, পুলিশের গুলিতে ১ কৃষক প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত কৃষকের নাম শুভকরণ সিং বলে জানা গিয়েছে। কৃষকদের উপর এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সারাভারত কৃষক সভা। তীব্র ধিক্কার জানিয়েছে কংগ্রেসও।
কৃষক সংগঠনগুলির বক্তব্য, পাঞ্জাব-হরিয়ানা সীমান্তের খানৌরিতে আন্দোলনকারীদের উপর যথেচ্ছ ভাবে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। চালানো হয় গুলিও। পুলিশের ছোঁড়া গুলি মাথায় এসে লাগে ২১ বছরের শুভকরণের মাথায়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। জানা গিয়েছে, পাঞ্জাবের ভাটিন্ডা জেলার বালোকে গ্রামে তাঁর বাড়ি।
পাটিয়ালার রাজেন্দ্র হাসপাতালের সুপার এইচএস রেখি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আহত অবস্থায় খানৌরি সীমান্ত থেকে ৩জনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে একজন মৃত ছিলেন।
বুধবার সকাল থেকে পাঞ্জাব-হরিয়ানার শম্ভু এবং খানৌরি সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। হাজারে হাজারে কৃষক দিল্লি অভিযানে যাওয়ার জন্য পুলিশের ব্যারিকেডের স্তর ভাঙতে শুরু করেন। কৃষকদের আটকাতে কয়েক দফায় কংক্রিটের গার্ডরেল দিয়ে রাস্তা আটকেছে হরিয়ানার বিজেপি সরকারের পুলিশ। সেই বাধা ঠেলে সামনের দিকে এগোতে ট্র্যাক্টর এবং আর্থ মুভার যন্ত্র নিয়ে আসেন কৃষকরা। এরপর ক্ষেপে ওঠে হরিয়ানা পুলিশ। তীব্র বলপ্রয়োগ শুরু হয় কৃষকদের আটকাতে। তখনই শুভকিরণ সিং প্রাণ হারিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পুলিশি অত্যাচারের প্রসঙ্গে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা(অরাজনৈতিক)-এর নেতা জগজিৎ সিং দাল্লেওয়াল বলেছেন, ‘‘আমাদের সন্তানদের উপর পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ছে, আর আমরা চুপ করে বসে সেই দৃশ্য উপভোগ করব? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা আমাদের সঙ্গে আরেকপ্রস্থ আলোচনা করতে চেয়েছেন। আমরা স্পষ্ট জানাচ্ছি, এমএসপি’র আইনী গ্যারান্টির আশ্বাস না দিলে কোনও আলোচনাই ফলপ্রশু হবেনা।’’
প্রসঙ্গত, সোমবার কৃষকদের সঙ্গে চতুর্থ দফায় আলোচনা হয় কেন্দ্রের। কিন্তু সেখান থেকে কোনও রফাসূত্র বেরোয়নি। কৃষকদের স্পষ্ট দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারকে এমএসপি’র আইনী গ্যারেন্টি দিতে হবে। সেই বৈঠকের পরে বুধবার নজিরবিহীন হামলা চালালো হরিয়ানা পুলিশ।
এই প্রসঙ্গে বুধবার ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের প্রধান রাকেশ টিকায়েত বলেছেন, ‘‘দাবি না মেটা অবধি কৃষকদের আন্দোলন চলবে।’’
টিকায়েত আরও বলেছেন, ‘‘বৃহস্পতিবার সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা বৈঠকে বসবে। সেখান থেকেই আন্দোলনের ভবিষ্যত রূপরেখা উঠে আসবে। একমাত্র আলোচনার টেবিলেই সমাধান খুঁজে পাওয়া সম্ভব। কিন্তু আলোচনার পরিবেশ অগ্রাহ্য করে শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলনরত কৃষকদের উপর কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে গোটা দেশ ব্যথিত। কিন্তু কৃষকরা পিছু হঠবেন না।’’
Comments :0