পাহাড়ের বাগিচা শ্রমিকদের বোনাস ফয়সলায় সমস্ত বড় ধরনের আন্দোলন থেকে সাময়িকভাবে সরে আসলেও, সরকারের এডভাইসারি জারি করে ১৬ শতাংশ বোনাস ঘোষণার বিরোধিতায় এবং ন্যায্য ও সম্মানজনক বোনাসের দাবিতে উৎসবের মাঝেও শ্রমজীবী অংশের মানুষের আন্দোলনে তাদের পাশে থাকবে শ্রমিক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ। সাময়িকভাবে সমস্ত বড় ধরনের লড়াই আন্দোলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিয়াকামান মজদুর ইউনিয়ন সহ ৮ টি শ্রমিক সংগঠন। ফলে সোমবার ঘোষিত বড় ধরনের আন্দোলন কর্মসূচি থেকে সরে আসলেন শ্রমিকেরা। সোমবারে প্রস্তাবিত শিলিগুড়ি সংলগ্ন দাগাপুরের শ্রমিক ভবনের সামনে ধরনা বিক্ষোভ বাগানে বাগানে অবস্থান কর্মসূচি কর্মবিরতি ও অর্থনৈতিক অবরোধ আগামী ৬ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলির তরফে। রবিবার আটটি শ্রমিক সংগঠন পাহাড়ের বাগিচা শ্রমিকদের বোনাস মীমাংসায় বৈঠকে বসেন। বৈঠক থেকে সর্বসম্মতিক্রমে আপাততভাবে ন্যায় ও সম্মানজনক বোনাসের দাবিতে আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে চা শ্রমিক নেতা সমন পাঠক বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলনকে আমরা সম্মান জানাই। আমরা শ্রমিক শ্রেণির পাশে আছি থাকবো। তাই ন্যায্য বোনাসের দাবিতে আন্দোলন আছে, আন্দোলন থাকবেই। রাজ্য সরকারের শ্রম দপ্তরের তরফে ৫ অক্টোবর একটি চিঠি এসেছে। শ্রমিকদের আন্দোলনের চাপে পড়ে আগামী ৬ নভেম্বর কলকাতায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকতে বাধ্য হয়েছে শ্রম দপ্তর। মালিক পক্ষের তরফদারি করে বোনাস মীমাংসায় রাজ্য শ্রম দপ্তরের এডভাইসারি জারি করে ১৬ শতাংশ হারে বোনাস ঘোষণা কোনভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। আমাদের দাবি এক কিস্তিতে কুড়ি শতাংশ হারে এবার উৎসব ভাতা দিতে হবে পাহাড়ের বাগিচা শ্রমিকদের। পাহাড়ের চা শ্রমিকদের আন্দোলনের জেরে রাজ্য সরকারের জারি করা অ্যাডভাইসারির ওপর আরো একবার আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। এটাকে শ্রমিক শ্রেণির জয় বলেই মনে করছি আমরা। শ্রমিক শ্রেণির জেদের কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছে সরকার। আগামী ৬ নভেম্বর শ্রম দপ্তরের পক্ষে কলকাতায় বোনাস মীমাংসায় বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে উৎসবের মরশুমে আন্দোলন সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আন্দোলনের ধরনের বদল ঘটানো হয়েছে। আগামী ৬ নভেম্বর কলকাতার বৈঠকে যোগদানের আগে প্রায় ৫০ হাজার চা শ্রমিকের কাছে গিয়ে গন স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান করা হবে। শ্রমিকদের মতামত গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি আটটি শ্রমিক সংগঠন ছাড়াও অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনগুলির সাথে যোগাযোগ করে তাদের মতামত নিয়ে বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
Comments :0