Jaynagar Minor Rape and Murder Case

জয়নগরের নাবালিকা ছাত্রীর নির্মম হত্যায় ফাঁসির সাজা

রাজ্য জেলা

অনিল কুণ্ডু- বারুইপুর

জয়নগরের নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনে দোষী সাব্যস্ত মোস্তাকিন সরদারের ফাঁসির সাজা ঘোষণা করল বারুইপুর মহকুমা আদালত। 
চলতি বছরের ৪ অক্টোবর চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রীর মৃতদেহ মেলে জয়নগর এবং কুলতলির সীমান্তবর্তী কুন্দখালি-গোদাবর এলাকায় একটি জলায়।  ৯ বছর বয়সী ওই বালিকাকে ধর্ষণের পরে খুন করা হয়। ওই ছাত্রীটি নিখোঁজ হয়েছিল তার আগের দিন বিকেলে। দেহ পাওয়া যায় গভীর রাতে। বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একটি জলাজমি থেকে নিখোঁজ ছাত্রীর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ৯ বছরের ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ করেছেন ছাত্রীর পরিবার।
ঘটনার প্রতিবাদে পথ অবরোধ, বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে জয়নগর, কুলতলির বিভিন্ন এলাকা। ঝাঁটা, লাঠি হাতে পুলিশকে তাড়া করে ছিলেন গ্রামবাসীরা। প্রতিবাদীদের সামনে ছিলেন মহিলারা। বিক্ষোভকারীদের হটাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে, বেপরোয়াভাবে লাঠি চালায়। পালটা পুলিশের বিরুদ্ধে ইটবৃষ্টি হয়। পুলিশ শূন্যে গুলি ছোঁড়ে। চাপে পড়ে চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুন করার ঘটনায় অভিযুক্ত মোস্তাকিন সরদারকে ওই দিন গভীর রাতে জয়নগর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরেরদিন ধৃত মোস্তাকিন সরদারকে বারুইপুর আদালতে হাজির করা হলে পুলিশের আবেদন অনুযায়ী বিচারক তাকে ৭ দিন পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দেন। জয়নগর থানার পুলিশ ধৃতের বিরুদ্ধে খুন,  তথ্যপ্রমাণ লোপাট, অপহরণসহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে। সিট গঠন করে ৭ অক্টোবর তদন্ত শুরু করে পুলিশ৷ বারুইপুর আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয় ৩০ অক্টোবর৷ শুরু হয় বিচার৷ সাক্ষ্য দেন ৩৬ জন৷ সব পক্ষের বক্তব্য শুনে ও তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে ৫ ডিসেম্বর আদালত মুস্তাকিনকে দোষী সাব্যস্ত করে। শুক্রবার সেই ঘটনায় ৬১ দিনের মাথায় দোষী সাব্যস্ত মোস্তাকিন সরদারকে ফাঁসির সাজা শোনালেন বারুইপুরের ফাস্ট অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জাজেস কোর্টের বিচারক সুব্রত চ্যাটার্জি।
গত ৪ অক্টোবর কুলতলি থানার কুন্দখালি গোদাবর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি গ্রামের বাসিন্দা চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রী দুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল টিউশন পড়তে। জয়নগর থানার মহিষমারি এলাকায় টিউশন পড়ে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। সন্ধ্যা হলেও ওই ছাত্রী বাড়ি না ফেরায় পরিবারের তরফে মহিষমারি পুলিশ ক্যাম্পে অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে তাঁদের জয়নগর ও কুলতলি থানায় অভিযোগ জানাতে বলা হয়। রাতে পরিবারের তরফে জয়নগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। মহিষমারি ও কৃপাখালি জয়নগর  ও কুলতলি থানার সীমান্ত এলাকা। নিহত ছাত্রীর বাড়ি কুলতলি থানা এলাকায়। ঘটনা ও মৃতদেহ উদ্ধার হয় জয়নগর থানা এলাকায়। এদিন আদালত চত্বরে নির্যাতিকার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন এই রায়ে তাঁরা খুশি হয়েছেন।

Comments :0

Login to leave a comment