আমডাঙার তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানকে খুন করেছে তৃণমূল কর্মীরা, এমনটাই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাটের সামনে বোম মেরে খুন করা হয় আমডাঙার পঞ্চায়েত প্রধান রূপচাঁদ মণ্ডলকে।
কে এই রূপচাঁদ?
এলাকার ‘ডন’ বলেই পরিচিত তিনি। এক সময়ণ বোম বাঁধতে গিয়ে নিজের একটা হাত হারিয়েছেন রূপচাঁদ মণ্ডল। তার মৃত্যুর পর ভয়ে ভয়ে হলেও অনেকে বলতে শুরু করেছেন গত কয়েক বছরে এলাকার শেষ কথা হয়ে উঠে ছিলেন তিনি। যে কোন ধরনের অসামাজিক কাজ কর্মের সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি। এক এলাকাবাসীর কথায়, ‘জমি মাফিয়া ছিল রূপচাঁদ। জমি দখল থেকে শুরু করে তোলাবাজি শেষ কথা ছিল রূপচাঁদ।’
তৃণমূলের অভ্যন্তরের খবর বিধায়ক রফিকুর রহমানের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোক এই রূপচাঁদ মণ্ডল। ২০১৮ সালে আমডাঙা পঞ্চায়েত সিপিআই(এম) দখল করলেও বোর্ড গঠন করতে দেওয়া হয়নি। সিপিআই(এম) নেতা আহমেদ আলি খান সহ ১১৫ জনের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সময় গোটা এলাকা জুড়ে সিপিআই(এম) নেতা কর্মীদের ওপর হামলা চালায় রূপচাঁদ মণ্ডলের বাহিনী।
আমডাঙা পঞ্চায়েত নিজের দখলে রাখার জন্য দলের দলের নির্দেশকে অমান্য করে দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরোধীতা করে পঞ্চায়েত প্রধান হন রূপচাঁদ। সেই সময় বিধায়ক অভিযোগ করেন যে টাকার বিনিময় রূপচাঁদ পঞ্চায়েত সদস্যদের ভোট কিনেছে।
উল্লেখ্য এবারও গায়ের জোড়ে আমডাঙার পঞ্চায়ের দখল করেছে তৃণমূল। ভোট গননার দিন ১২টা বুথে এগিয়ে থাকা সিপিআই(এম) প্রার্থীদের জোর করে হারিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মৃত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর শুক্রবার থমথমে গোটা এলাকা। পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার হয়েচেন একজন। যিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি তৃণমূলেরই কর্মী।
গতকাল সন্ধ্যায় হাটের সামনে চায়ের দোকানে বসে ছিলেন রূপচাঁদ। সেখান থেকে গাড়িতে ওঠার সময় তার গাড়ি লক্ষ করে বোম মারা হয়। নিজেকে বাঁচাতে গাড়ির নীচে আশ্রয় নেন তিনি। কিন্তু কাঁধে বোমের স্প্লিন্টার লাগায় আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে আমডাঙা গ্রামীন হাসপাতালে পরবর্তী সময় বারাসাতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষনা করা হয়।
এদিন দুপুরে তৃণমূল নেতার দেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হলে সোনাডাঙা মোড়ে দেহ রেখে দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তার অনুগামীরা। পুলিশ এসে আশ্বাস দিলে সেই বিক্ষোভ তারা তুলে নেন।
Comments :0