Purulia

পুরুলিয়ায় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধিদল

জেলা

পুরুলিয়ার মানবাজারের ঘাসতোড়িয়া সারদা শিশু মন্দির শান্তিবন আবাসিক বিদ্যালয়ে ছাত্র খুনের ঘটনার পর পুরুলিয়ায় পরিদর্শনে এলেন রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস সহ শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের বিশেষ প্রতিনিধি দল। পুরুলিয়া শহরের সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসন এবং পুরুলিয়া জেলা শিশু শিক্ষা কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক সারেন ওই প্রতিনিধি দলের সদস্য সদস্যারা। বৈঠকের পর মানবাজারের জবলা এলাকার ঘাসতোড়িয়া সারদা শিশু মন্দির শান্তিবন আবাসিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান যায় ওই প্রতিনিধি দলটি। খতিয়ে দেখেন বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো। চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস বলেন, ‘‘করোনার পরে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এখনো শিশুরা সেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে সম্পূর্ণ মানসিক দিক থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। পুরুলিয়ার ঘটনাকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু তদন্ত চলছে তাই সেই বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করবেন না’’।
জেলা তথা রাজ্যে যে সমস্ত সরকারি বা বেসরকারি আবাসিক বিদ্যালয় গুলি রয়েছে সেগুলি পরিদর্শন করে সবদিক খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘শিশুদের অধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্রে কোনোরকম গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না’’।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য; মানবাজারের সেই স্কুলে ঘটে কয়েকদিন আগেই ঘটেছিল হাড়হিম করা ঘটনা। প্রথম শ্রেণির এক পড়ুয়া সুদীপ মাহাতোর রক্তাক্ত মৃতদেহ স্কুলের অদূরে একটি পুকুড়ের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। তারপরে জিজ্ঞাসাবাদের পরে ওই স্কুলেরই অষ্টম শ্রেণির এক পড়ুয়াকে পুলিশ আটক করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদের সময় সে জানিয়েছিল যে স্কুলের কেউ মারা গেলে একদিন ছুটি পাওয়া যায় এটা জেনে সে পাথর দিয়ে ওই শিশুটিকে খুন করেছিল। পুরুলিয়া মানবাজার সড়কের জবলা মোড় থেকে তিন কিলোমিটার দূরে আবাসিক স্কুল। প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৫১৯ জন পড়ুয়া রয়েছে। যার মধ্যে অনেকেই হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করতো। হোস্টেলে থাকা ১৭৪ জন আবাসিকের মধ্যে বর্তমানে মাত্র পাঁচ জন আবাসিক সেই হোস্টেলে রয়েছে। কারণ তারা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। চরম আতঙ্কে আবাসিক স্কুলে পঠন পাঠন বন্ধ হয়ে গেছে। যারা হোস্টেলে ছিল তাদের অভিভাবকরাও হোস্টেল থেকে বাড়ি নিয়ে চলে গেছেন। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে স্কুলের পঠন পাঠন। এই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ তুলে সুদীপ মাহাতোর বাবা মহানন্দ মাহাতো মানবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ছয় বছরের ওই বালককে চকলেট দেওয়ার নাম করে নির্জন পুকুড়ের দিকে নিয়ে গেছিল অষ্টম শ্রেণির ওই পড়ুয়া। তারপর পাথর দিয়ে মাথায় একাধিকবার আঘাত করেছিল। পরে রক্তমাখা পাথরটি জলে ছুঁড়ে ফেলেও দিয়েছিল। তারপর সেই ছেলেটি ঠান্ডা মাথায় হোস্টেলে এসে পোশাক পরিবর্তন করেছিল। কিন্তু টিফিনের পর কেন ওই পড়ুয়া ক্লাসে অনুপস্থিত ছিল সেদিন সে নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

Comments :0

Login to leave a comment