টাকা দিতে এসেছিলেন ডিসি নর্থ। আমরা তখন কী করব, ভিডিও তুলে রাখব? সে সময়ে আমাদের পক্ষে সম্ভব। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন প্রমাণ দিতে, কিভাবে এর প্রমাণ দেব?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বক্তব্যে ফের তীব্র খেদ জানিয়ে এভাবেই সরব হয়েছে আর জি কর হাসপাতালে নির্যাতিত চিকিৎসক ছাত্রীর পরিবার। তাঁরা বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী এই আন্দোলনকে গলা টিপে হত্যা করতে চাইছেন।
সোমবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি করেন যে নির্যাতিতার পরিবারকে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। পরিবারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন যে এমন অভিযোগ তুললে প্রমাণ দিতে হবে।
পরে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে অসত্য বলেছে নির্যাতিতার পরিবার।
নির্যাতিতার কাকিমা বলেন , ‘‘মুখ্যমন্ত্রী দেখা করতে এসেছিলেন। কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুর জন্য ক্ষতিপূরণ প্রাপ্য জানিয়েছিলেন। তাঁকে বলা হয়েছিল যে মেয়ে বিচার পেলে ওঁর দপ্তরে গিয়ে টাকা নিয়ে আসা হবে।’’
কাকিমা বলেন, ‘‘আমরা সত্যি বলছি। বারবার বলছি ডিসি নর্থ টাকা নিয়ে এসেছিলেন। তখন আমাদের মনের যা অবস্থা আমরা কি ভিডিওগ্রাফ করে রাখব? আমাদের এখন বলছেন প্রমাণ দিতে হবে। উনি বারবার পরিবারকে দায়ী করছেন কেন?’‘
এদিন সুপ্রিম কোর্টেও পরিবারের পক্ষে টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ রখারা চেষ্টা প্রসঙ্গে অভিযোগ জানান পরিবারের পক্ষে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। প্রধান বিচারপতি বলেন যে এই অভিযোগ মূল মামলা, অর্থাৎ, ধর্ষণ-খুনের মামলার সঙ্গেই যুক্ত থাকবে। সুপ্রিম কোর্ট যে স্ট্যাটাস রিপোর্ট দেবে তাতে এই বিষয়টিও তদন্তের আওতায় আসবে।
রাজ্যের মানুষকে প্রতিবাদ ছেড়ে উৎসবে ফেরার আহ্বানও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার কাছে অমানবিক মনে হচ্ছে এমন আহ্বান। কারণ আমি তো মেয়ের মা। আমি তো সন্তান হারিয়েছি, তাই আমার অমানবিক মনে হচ্ছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘গোটা দেশের মানুষ যদি ভাবে উৎসবে ফিরবে তাহলে তাঁরা ফিরতেই পারেন। কিন্তু তাঁরাই আমার মেয়েকে নিজের পরিবারের সদস্য বলে মনে করছেন। তাঁরা যদি উৎসবে ফিরতে পারেন আমার কিছু বলার নেই। আমার বাড়িতেও দুর্গাপুজো হতো, মেয়ে ঘরে করত। কিন্তু আমার বাড়িতে আর কোনদিন দুর্গাপুজোর আলো জ্বলবে না। আমার ঘরের বাতি নিভে গেছে। আমি কী করে মানুষকে বলব উৎসবে ফিরতে?' মায়ের প্রশ্ন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারে যদি এমন ঘটনা ঘটত তাহলে কি উনি একথা বলতে পারতেন?‘‘
নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী এই আন্দোলনকে গলা টিপে হত্যা করতে চাইছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার মেয়েকে যেভাবে গলা টিপে মারা হয়েছে, প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে, ঠিক সেভাবে মমতা ব্যানার্জিও আন্দোলনের গলা টিপে হত্যা করতে চেয়েছেন। কারণ, আন্দোলনটা থেমে গেলে উনি নিজের জায়গায় ভালোভাবে টিকে থাকতে পারবেন।' তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু যতদিন না বিচার পাবো ততদিন আমরা পথে থাকব, আন্দোলনে থাকব।'
সুপ্রিম কোর্ট এদিন জুনিয়র ডাক্তারদের মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে কাজে ফিরতে বলেছে। মুখ্যমন্ত্রীও কাজে যোগ দিতে বলছেন। এই প্রসঙ্গে নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘ডাক্তাররা যদি নিজেদেরকে নিরাপদ না মনে করেন তাহলে তাঁরা কিভাবে কাজে যোগ দেবেন?’’
R G KAR FAMILY
ভিডিও তুলে রাখব? মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে তীব্র খেদ পরিবারের
×
Comments :0