SITARAM YECHURY CONDOLENCE TALKATORA

সীতারাম ইয়েচুরি যা করেছেন, করেছেন দেশের জন্য: রাহুল

জাতীয়

শনিবার তালকাটোরা স্টেডিয়ামে কমরেড সীতারাম ইয়েচুরির স্মরণসভায় রাহুল গান্ধী।

‘‘ নির্বাচনের আগে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ গড়তে কংগ্রেসের সঙ্গে অন্য দলগুলির যোগ সূত্র ছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি। তিনি যা করেছেন, দেশের জন্য করেছেন। ’’
শনিবার দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে স্মৃতিচারণে একথা বলেছেন কংগ্রেস নেতা এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। চলছে স্মরণসভা। বক্তব্য রেখেছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা, ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝি, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য এবং কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও। 
বিজয়ন বলেন, ‘‘মার্কসবাদের প্রতি তাঁর গভীর প্রজ্ঞা সহজ ভাবে বোঝাতে পারতেন। সংসদে তাঁর ভুমিকা ছিল প্রশংসা যোগ্য। ভারতের গণতন্ত্র,সংবিধান বাঁচাতে ‘ইন্ডিয়া ব্লক’ তৈরি করা হয়েছিল। তা গঠনে তাঁর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আছে।’’ তিনি বলেন,
‘‘শ্রমিক-কৃষকের পক্ষে সংগ্রামে লাগাতার ভূমিকা নিয়ে গিয়েছেন তিনি। শাসক শ্রেণিগুলির আক্রমণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম সংগঠিত করেছেন।’’
রাহুল বলেন, ‘‘আমার কাছে সীতারাম ইয়েচুরি একজন বন্ধু যিনি রাজনৈতিক ভাবে আমাকে সাহায্য করতেন। যেদিন থেকে আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু সেদিন থেকে ইয়েচুরিকে কাছ থেকে দেখেছি। যিনি অন্যের কথা শুনতেন। আমাদের কথা শুনতেন, আমাদের বোঝাতেন তিনি কোন মতাদর্শের প্রতিনিধিত্ব করছেন। ইউপিএ এবং ইন্ডিয়া গঠনের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি ছিলেন ইয়েচুরি। কংগ্রেসের সঙ্গে অন্য দলগুলির যোগসূত্র ছিলেন। তিনি যা করেছেন দেশের ভালোর জন্য করেছেন।’’ 
রাহুল বলেন, ‘‘তিনি আসতেন আমার মায়ের কাছে। শেষ যে বার এসেছিলেন সেদিন শরীর ভালো ছিল না। সেদিন বলেছিলাম আপনি এখান থেকে বাড়ি যাবেন না, সরাসরি হাসপাতালে যাব চিকিৎসার জন্য। তারপর আমার বন্ধুকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার আর কোন সুযোগ হয়নি আমার।’’
রাহুল বলেন, ‘‘যেদিন ইয়েচুরিজীর পুত্র প্রয়াত হন সেদিন তাঁকে ফোন করেছিলাম কিন্তু কোন কথা বলতে পারিনি, চুপ করেছিলাম। তারপর যেদিন তিনি প্রয়াত হন সেদিন তাঁর স্ত্রীকে কী বলব, কি ভাবে পাশে থাকব বুঝতে পারিনি। 
দেশের স্বার্থ মাথায় রেখে সব সময় কাজ করেছেন সীতারাম ইয়েচুরি। যখনই বিজেপি আরএসএস নিয়ে আমার সাথে কথা বলেছেন তখনই বার বার বলেছেন এরা যা করছে তাতে দেশে শেষ হয়ে যাবে। প্রতিরোধ করতে হবে।’’
খাড়গে বলেন, ‘‘সীতারাম ইয়েচুরি শুধু কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ছিলেন তা নয়, সবার নেতা ছিলেন। ইন্ডিয়া গঠনের তার বড় ভূমিকা ছিল। সোনিয়া গান্ধীর সাথে বার বার দেখা করে ইন্ডিয়া নিয়ে আলোচনা করতেন। ইন্ডিয়ার প্রথম বৈঠকে তিনিই সবার আগে ছিলেন। তাকেই প্রথম ডেকে এই মঞ্চ গঠনের কাজ শুরু হয়। ’
ফারুক আবদুল্লা বলেন, ‘‘বিরোধী চিন্তা বা রাজনীতির অনুগামীদের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক ছিল সীতারামের। চেষ্টা করতেন সবাইকে আলোচনায় যুক্ত করার।’’ তিনি বলেন, ‘‘জ্যোতি বসু প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের এই অবস্থা হতো না। আজ যে শক্তি আসীন, দেশকে যেভাবে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে, নেতৃত্বের কাছে আবেদন, আসুন এক হই এই শক্তিকে পরাস্ত করি, দেশকে বাঁচাই।’’ 
তিনি বলেন, ‘‘কাশ্মীরের ভোট ফেলে আমি এসেছি কারণ দেশকে বাঁচাতে হবে। পড়শিদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করতে হবে। সীতারামের সব থেকে বড় দিক ছিল কী ভাবে ভারতের ঐক্য বজায় থাকবে তার প্রয়াস চালানো। এই ‘ভারত ভাবনা’ ভাঙতে উদ্যত শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে হবে। তবেই সব থেকে বড় শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হবে সীতারামের প্রতি।’’  
কানিমোঝি বলেন, ‘‘ভয়হীন জীবন কাটিয়েছেন কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি। দেশের ঐক্যবদ্ধতা, সার্বভৌমত্ব, অখন্ডতার জন্য লড়াই করেছেন। এই নির্বাচন শুধুমাত্র জেতার জন্য ছিল না। দেশকে বাঁচানোর জন্য ছিল। মতপার্থক্য হলে সীতারাম ইয়েচুরি তা মিটিয়েছেন।’’

Comments :0

Login to leave a comment