প্রবীর দাস
‘চড় মারলেও কথা বলত না, এতটাই শান্তশিষ্ট ছিল সে। ওর শত্রু তাহলে কী করে থাকবে?’
পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী অধিকার মঞ্চের নেতৃবৃন্দকে বলছিলেন আশিস মণ্ডল। তাঁকে মামা বলে ডাকতো আদিবাসী ওই ছাত্রী। তারই হাত পা বাঁধা দেহ পুকুরে ভাসতে দেখা গিয়েছে।
আশিস মণ্ডল প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক হরিদাস মণ্ডলের ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর ঘোষপুরের এই মণ্ডল বাড়িতেই থাকত আদিবাসী ওই ছাত্রী এবং তার মা ও ছোট বোন। ওদের মেয়ের মতো করে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করছিলেন।
মেয়ের হাত পা বাঁধা মৃতদেহ পুকুরে ভাসতে দেখার পর থেকে শোকে ভেঙে পড়েছেন মা, ঠাকুমা, মামা। কথার মধ্যেই ডুকরে কেঁদে উঠছেন।
এদিন পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী অধিকার মঞ্চের নেতা ধনঞ্জয় মাহাতো, সুবিমল সর্দার, অরুণা মাহাতো, রাধারানি সর্দার, রবীন মাহাতো, অমর মাহাতো সলিল মুনিয়ান, সৌম্য শেখর পণ্ডিত সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ যান মৃত আদিবাসী ছাত্রীর বাড়িতে। কথা বলেন মা ও ঠাকুমার সাথে। কথা বলেন আশিস মণ্ডলের সঙ্গে। আইনি সহায়তা দিতে প্রস্তুত পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী অধিকার মঞ্চ। বসিরহাট জেলা পুলিশ সুপার ডাঃ হোসেন মেহেদী রহমান জানান, তদন্ত চলছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর্ব শুরু হয়েছে। এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
রবিবার জাতীয় মহিলা কমিশনের তিন প্রতিনিধিদল যান কালিনগরে। তাঁরা ছাত্রীর পরিবারের সাথে কথা বলেন। এছাড়া আদিবাসীদের বিভিন্ন সংগঠন কালিনগরে যায়। দেখা করে আদিবাসী ওই ছাত্রীর পরিবারের সাথে এবং শাস্তির দাবিতে মিছিল করে। অন্যদিকে এদিন রাজ্য ফরেন্সিকের তিনজনের প্রতিনিধি দল যায় ঘটনাস্থলে। যেখান থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল আদিবাসী ছাত্রীর মৃতদেহ। সেখান থেকে ফরেন্সিক দল নমুনা সংগ্রহ করে।
শনিবার মৃত আদিবাসী ছাত্রীর পরিবার সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছিল ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এরপর যখন ছাত্রীর পরিবার ন্যাজাট থানায় লিখিত অভিযোগ জানায় সেখানে শুধুমাত্র খুনের অভিযোগ করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, শনিবারের ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ করার কয়েক ঘন্টার মধ্যে কী এমন ঘটলো যে একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে মৃত ছাত্রীর পরিবার শুধুমাত্র খুনের অভিযোগ করল?
Comments :0