CRIME AGAINST WOMEN IN BENGAL

পরপর নারীনিগ্রহ কোচবিহারে, ক্ষোভের মুখে উপপ্রধানের ভাইকে গ্রেপ্তার পুলিশের

রাজ্য জেলা

violence against women crime against women in west bengal bengali news

জয়ন্ত সাহা

 

ফের বৃহস্পতিবার নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটলো মাথাভাঙা শহর লাগোয়া কান্দুরারটারিতে। গ্রাম্য বিবাদ বলে চালাতে গিয়েও পার পেল না তৃণমুল। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে এই নারী নিগ্রহের ঘটনায়ও তৃণমুল জড়িত। দেখা গিয়েছে, পুলিশের সামনেই ঘটনা ঘটেছে নারী নিগ্রহ। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।

কান্দুরারটারি এলাকাটি মাথাভাঙা শহর লাগোয়া হলেও জায়গাটি হাজরাহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর মাথাভাঙা মহকুমা জুড়ে তৃণমুলের লাগামহীন সন্ত্রাস চলছে। কান্দুরারটারির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত এই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের ভাই ও তার সঙ্গীরা। 

তৃণমূলের তরফে একবার বলা হয়েছে ঘটনায় দলের যোগ নেই। বার বলা হয়েছে যে গ্রাম্য বিবাদের জেরে এই ঘটনা। কিন্তু ক্ষোভ তীব্র হওয়ায় শুক্রবার অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মাথাভাঙা থানা। বলা হয়েছে মহিলার ওপর হামলায় প্রধান অভিযুক্ত এরশাদ আলি সহ দু’জনকে শুক্রবার পুলিস গ্রেপ্তার করেছে। উভয় পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

উপপ্রধান হাসেম আলি যদিও সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ঘটনার সময় ওই জায়গায় ছিলেন না। মহিলা অন্যের জমি দখল করতে যাওয়ায় গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে বচসা হয়েছে। তাঁর ভাই ঘটনায় জড়িত নয়। 

শুক্রবার আহত মহিলা হাসপাতালের বেডে শুয়ে বলেন, ‘‘উপপ্রধানের ভাই এলাকায় সব বিষয়েই মাতব্বরী করেন। তিনিই এলাকার শেষ কথা, এরকম প্রকাশ্যেই বলেন। তবুও এমন হবে ভাবিনি। ভিডিও না ছড়িয়ে পড়লে গ্রাম্য বিবাদ বলে বিষয়টিকে ধামাচাপা দিয়ে দিত ওরা।’’ 

আতঙ্কিত মহিলা বলেন, ‘‘সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে দুই নাবালক সন্তান নিয়ে কী করে থাকব!’’

সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে উপপ্রধানের ভাই মহিলাকে জোরে ধাক্কা মারছে। মহিলা দূরে ছিটকে পড়েছেন। বন্দুক কাঁধে এক পুলিশকর্মী আক্রান্তকে রক্ষা না করে আক্রমণকারীকে টেনে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। 

গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির জেলা সম্পাদিকা শিবানী পাল ও সভানেত্রী শিখা আদিত্য বলেন, জেলার কোথাও নারীদের নিরাপত্তা নেই। মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যে তাঁর দলের কর্মীদের হাতেই মহিলারা বারে বারে নিগৃহীত হচ্ছেন। বাদ যাচ্ছে না স্কুল পড়ুয়া কিশোরীরাও।

লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর প্রথমে মাথাভাঙার রুইডাঙ্গায় এক মহিলাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। বুধবার শিতলকুচি থানার মহিষমুড়িতে বিজয় মিছিল থেকে দুই কিশোরীর ওপর বাজি ছুঁড়ে দেওয়ার ঘটনায় অভিযোগের তির ছিল তৃণমূলের দিকেই। 

এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে মাথাভাঙা শহর লাগোয়া কান্দুরারটারিতে হাজরাহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমুলের উপপ্রধান হাসেম আলি মিয়াঁর ভাই এরশাদ আলি ও তার দলবলের সালিশীর ভিডিও সামনে এসেছে। ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে, জমি সংক্রান্ত এক বিবাদের সালিশীর নামে ওই এলাকার এক মহিলাকে নিগ্রহ করা হচ্ছে। ঘটনায় স্পষ্ট তৃণমুল সন্ত্রাসের পথ ধরেই এলাকায় কর্তৃত্ব কায়েম রাখতে চাইছে।

গুরুতর আহত মহিলাকে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

এদিকে শুক্রবার সকালে তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় সংবাদমাধ্যমকে ডেকে দাবি করেন যে মাথাভাঙার ঘটনায় দলের কোন যোগ নেই। তবে বেলা বাড়তেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে উপপ্রধানের ভাই এরশাদ আলি ও কিনারুদ্দিন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। এরপর অবশ্য তৃণমুলের মুখপাত্র নতুন করে কোন বিবৃতি দেননি।

Comments :0

Login to leave a comment