Student Killed in Bardhaman

কেতুগ্রামে চলন্ত বাসে ছাত্রীকে কুপিয়ে খুন

জেলা

মঙ্গলবার কেতুগ্রামে চলন্ত বাসে ছাত্রীর গলায় ধারালো অস্ত্রের কোপে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে নাবালিকার। ভয়ঙ্কর এই খুনের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ভর দুপুরে লোকজন ভর্তি বাসের মধ্যে গলায় ছুরি চালিয়ে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুল পড়ুয়ার গলার নলি দু-ফাক করে দেবার ঘটনা দেখে বাসের প্রত্যক্ষদর্শীরা সিউরে উঠেছেন। এই নিয়ে প্রায় এক মাসের মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলায় জোড়া খুনের ঘটনা ঘটলো। দুটি খুনই গলার নলি কেটে দেওয়া হয়। প্রথমটি আদিবাসী তরুণীকে খুন করা হয় শক্তিগড়ের নান্দুরে তাঁর বাড়ির সামনে গলার নলি কেটে। দ্বিতীয় খুন মঙ্গলবার ভর দুপুরে বাসের মধ্যে যাত্রীদের সামনে ঠিক সেই একই কায়দাতে কেতুগ্রামে গলার নলি কেটে। এই না বালিকা খুনের ঘটনার সাথে জড়িত তারই গ্রামের এক যুবকের নাম সামনে এসেছে। এদিন কেতুগ্রামের ধানের জমি থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। 
মঙ্গলবার ভর দুপুরে কেতুগ্রাম থানার কোমরপুড়ে এই ভয়ঙ্কর খুনের ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনায় আতঙ্কিত বাস যাত্রীরা। মৃত স্কুল পড়ুয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায় ছাত্রীর নাম জ্যোতি খাতুন, বাড়ি কাটোয়া থানার হরিপুর গ্রামে। সে কাটোয়ার একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। অভিযুক্ত বাবু সেখও হরিপুরের বাসিন্দা। কেরালায় কাজ করতো। মঙ্গলবার কেতুগ্রামের আন্নাগ্রামে মাসির বাড়ি থেকে কাঁদরা ব্লক অফিসে এসেছিল জ্যোতি খাতুন নামে ওই ছাত্রী। ব্লকের কাজ শেষ করে মাসির সঙ্গেই বাসে চড়ে আন্না গ্রামে ফিরছিল। সেই বাসেই আগে থেকে উঠে বসেছিল আততায়ী বাবু শেখ। সে বসেছিল একেবারে ছাত্রীর পেছনের সিটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, আচমকাই বাবু ছুরি বের করে জ্যোতির গলায় পেছন থেকে ছুরি চালিয়ে দেয়।
মৃত ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা যায় অভিযুক্ত বাবু সেখ ৬ মাস আগে কেরলা থেকে গ্রামে এসে জ্যোতির পিছু নেয়। ক্রমাগত তাকে উত্তপ্ত ও ফলো করতে থাকে। স্কুল, টিউশন যেখানেই জ্যোতি যেত সেখানেই চলে যেত বাবু। গত ১৫ দিন আগে জ্যোতির বাড়ি গিয়ে বাবু শেখ হুমকি দিয়ে আসে ‘আমার সঙ্গে বিয়ে না দিলে ওঁকে বাঁচতে দেবো না’। সম্প্রতি মাসির বাড়িতে এসেছিল জ্যোতি। সেখানেও সে পৌঁছে যায়। এদিন  যখন মাসির সঙ্গে জ্যোতি ব্লক অফিসে গিয়েছিল সেখানেও সে হাজির হয়। কিন্তু ফেরার পথে জ্যোতি কিংবা তার মাসি লক্ষ্য করেনি যে কখন  তাদের পেছনের সিটে এসে বসেছে খুনী। কাঁদরা থেকে বাসটি যখন কোমরপুরের কাছে আসে তখনই খুনী জ্যোতির গলায় ছুরি চালিয়ে দেয়। বাসের যাত্রীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন অভিযুক্ত। বাসেই  রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে কিশোরী। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছড়িয়ে পড়ে বাসে।গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে প্রথমে কেতুগ্রাম থানা সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পূর্ব বর্ধমানে কেতুগ্রামে নাবালিকা খুনের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িযেছে শুধু নয় এই ঘটনায়  বাস যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্তের খোঁজ শুরু করে পুলিশ এদিন বিকালে কেতুগ্রামের এক ধান জমি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

Comments :0

Login to leave a comment