Primary TET

টেট পরীক্ষার্থী কমে অর্ধেক, দায়ী নিয়োগে বিরতিও

রাজ্য

ধীমান রক্ষিত


 

বহু দেরি করে প্রাথমিকের টেট হবে ১০ ডিসেম্বর। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ টেট নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে কোন বিষয়ের জন্য কী কী সিলেবাসে থাকবে। পাশাপাশি প্রশ্ন কেমন হবে, সেটিও বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পর্ষদ। 

সিলেবাস জানানোর পাশাপাশি কেমন ধরনের প্রশ্নপত্র থাকবে, তাও জানানো হয়েছে। প্রত্যেকটি বিষয় ধরে ধরে মডেল প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে পর্ষদের পক্ষ থেকে। টেটের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। প্রাথমিকের টেটকে কেন্দ্র করে এ বার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কড়া করতে চলেছে পর্ষদ।

পর্ষদ জানিয়েছে, মোট ১৫০ নম্বরের টেট হবে। প্রশ্নপত্র থাকবে ১৫০টি। কোনরকম নেগেটিভ মার্কিং থাকছে না। প্রথম ভাষা ও দ্বিতীয় ভাষার প্রশ্ন পত্র ছাড়া বাকি প্রত্যেকটি প্রশ্নপত্রই বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে করা হবে। আড়াই ঘণ্টা ধরে হবে এই পরীক্ষা। পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, 'চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট ও পেডাগগি' থেকে ৩০টি প্রশ্ন থাকবে। প্রথম ভাষা থেকে ৩০টি প্রশ্ন দ্বিতীয় ভাষা থেকে ৩০টি, অঙ্ক থেকে ৩০, এবং পরিবেশবিদ্যা থেকে ৩০টি করে প্রশ্ন থাকবে।

কিন্তু নজিরবিহীনভাবে এবারের টেটের পরীক্ষার্থী কমে গেছে। প্রায় অর্ধেক পরীক্ষার্থী এবার গতবারের তুলনাশ।

গতবার টেটের আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ৬ লক্ষ ৯০ হাজার। এবার কমে তা দাঁড়িয়েছে ৩ লক্ষ ১০ হাজারের কাছাকাছি। যদিও পর্ষদের দাবি, ‘‘২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে যে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল সেখানে ডিএলএড এবং বিএড প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সকল যোগ্য প্রার্থী আবেদন করতে পেরেছিলেন। এ বছর শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ডি এল এড উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরাই শুধু আবেদন করতে পারবেন। তাই আবেদনের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে।’’ 

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর অনলাইনের মাধ্যমে টেটের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল এবং ৪ অক্টোবর আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। প্রায় ১১হাজার শূন্যপদের জন্য টেট হবে বলে জানা যাচ্ছে।

এবার যেহেতু বিএড উত্তীর্ণ প্রার্থীরা প্রাথমিকের টেট দিতে পারবে না, তার জন্যই কমছে প্রাথমিকের টেট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। 

এই যুক্তি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের। তবে এর অন্য কারণ রয়েছে। ২০১৬সাল, ২০১৭সাল ও ২০২২ সালের প্রাথমিকে নিয়োগ পরীক্ষা হয়ে গেলেও এখনও এই তিনটি সালের নিয়োগ হয়নি। ফলে টেট দিলে আদৌও নিয়োগ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। এর কারণেও টেটের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে বলে বিশেষজ্ঞ মহলের মত।

রাজ্যের টেট দেওয়ার জন্য ডিএলএড ডিগ্রির প্রয়োজন। বেসরকারি মতে, বর্তমানে রাজ্যে প্রায় ৭ লক্ষের বেশি ডিএলএড ডিগ্রিধারী রয়েছেন। উচ্চ প্রাথমিক, নবম থেকে দ্বাদশের শিক্ষকতার পরীক্ষায় যোগ্যতামান বিএড। শিক্ষার অধিকার আইন কার্যকর হওয়ার নিয়োগ পরীক্ষায় এই যোগ্যতামান বাধ্যতামূলক রয়েছে। রাজ্যের যদি ৭ লক্ষের বেশি ডিএলএড ডিগ্রিধারী থাকে তাহলে তার এক তৃতীয়াংশও কেন এবারের টেটের জন্য আবেদন করলেন না। তাছাড়াও আরো একটি বিষয় সামনে এসেছে। রাজ্যের প্রায় ৮ হাজারের বেশি প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক স্কুল বন্ধ হতে চলেছে। এই স্কুলগুলি বন্ধ হলে শিক্ষকের চাহিদা কমতে বাধ্য।

Comments :0

Login to leave a comment