শীত কাঁপুনি ধরালো দক্ষিণবঙ্গে। উত্তরবঙ্গকে হারিয়ে এবার দক্ষিণবঙ্গের পুরুলিয়া শীতের লড়াইয়ে বাজিমাত করে দিল। উত্তরে কালিম্পঙে যেখানে পারদ ৮ ডিগ্রিতে নেমেছে, সেখানে পুরুলিয়ায় শুক্রবারের তাপমাত্রা নেমে হলো ৬.২ ডিগ্রি। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি, জাঁকিয়ে শীত পড়েছে দার্জিলিঙ, কালিম্পঙ সহ উত্তরবঙ্গের জেলাতে। দার্জিলিঙে এদিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৪ ডিগ্রিতে।
পারদের ক্রমাগত নেমে যাওয়াতে শামিল হয়েছে কলকাতাও। কল্লোলিনীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক ধাক্কায় ২ ডিগ্রি কমে শুক্রবার ১০.৯ হতেই ভাঙল বৃহস্পতিবারের মরশুমের শীতলতম দিনের রেকর্ড। যেভাবে পারদ নামছে তাতে কলকাতায় একক সংখ্যার তাপমাত্রা পৌঁছানো হয়তো শুধু সময়ের অপেক্ষা। পূর্ব ভারতের সঙ্গে উত্তর থেকে মধ্য ভারতে দারুণ কাঁপুনি ধরেছে। দিল্লি, উত্তর প্রদেশকে হারিয়ে এদিন শীতলতম দিনের তকমা জিতে নিল রাজস্থান। বিকানেরে এদিন তাপমাত্রা শূন্যে নেমে গেছে। পূর্ব মধ্য প্রদেশের নওগঙয়ে পারদ নেমেছিল ০.২ ডিগ্রিতে। দিল্লি আয়ানগরে ভোরের তাপমাত্রা ছিল ১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শীতের এই বহর আরও দু’দিন। এরপরে কিছুটা হলেও বাড়বে কলকাতার তাপমাত্রা। এদিন মহানগরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা এই সময়ের গড় সর্বোচ্চ থেকে ৩ ডিগ্রি কম। তাই দিনের শুরু থেকে ঠান্ডার প্রকোপ ভালোই দেখা গেছে। কলকাতার এদিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা এই সময়ের গড় সর্বনিম্ন থেকে ৩ ডিগ্রি কম। অস্বাভাবিক পারদ পতনের জেরে ভোর থেকেই রাস্তার ধারে বসে আগুন পোহাতে দেখা যাচ্ছে মানুষকে।
এ মরশুমে রাজ্যে শীতের দাপট দেখাচ্ছে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো। পুরুলিয়ায় এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঠেকেছে ৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। শনিবার এই তাপমাত্রা আরও কমার আশঙ্কা। বাংলায় দ্বিতীয় শীতলতম শহর বর্ধমান। সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এদিন নেমেছে ৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তৃতীয় স্থানে বাঁকুড়া ও শ্রীনিকেতনের তাপমাত্রা। এখানকার তাপমাত্রা নেমেছে ৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই সঙ্গে মুকুটমণিপুরে ৮.৩, পানাগড়ে ৮.৪, আসানসোলে ৮.৪, আমতায় ৮.৮, ঝাড়গ্রামে ৯.০, ধূলাগড়ে ৯.০, কলাইকুণ্ডায় ৯.২, মুর্শিদাবাদে ৯.৪, উলুবেড়িয়ায় ৯.৫, মগরায় ৯.৫, হাওড়া ৯.৫, খড়গপুরে ৯.৬, আন্দুলে ৯.৮, কল্যাণীতে ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পারদ নামতে বেশ জবুথবু দশা দেখা গেছে। এসব জায়গায় আগামী কয়েকদিন পারদ পতন অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।
আলিপুর হাওয়া অফিস সূত্রে জানাচ্ছে, কলকাতার পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের আকাশ বেলা অবধি কুয়াশায় ঢাকা থাকবে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকাশ পরিষ্কার হবে। সূর্যের দেখা মিলতেই দিনের কামড় আরও বাড়বে। দিনভর কনকনে উত্তরে হাওয়ার দাপটের জন্য রোদের তাপ গায়ে লাগছে না। সকালে লেপ ছেড়ে বের হওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ছে। শীতের খেজুরের রস পাওয়া কঠিন হলেও নলেন গুড় আর পিঠে খাওয়া শুরু হয়ে গেছে। শীতকাতুরে বাঙালির এবছর হয়তো জাঁকিয়ে শীত উপভোগ করার সুযোগ মিলতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের কোনও সম্ভাবনা নেই দক্ষিণবঙ্গে।
Winter
শীতের দাপটে ত্রাহি অবস্থা দক্ষিণবঙ্গে
×
Comments :0