বই | মুক্তধারা
কার্ল মার্কসের ক্যাপিটাল
প্রদোষকুমার বাগচী
কার্ল মার্কসের মহত্তম ও বৃহত্তম কর্মকৃতি হিসাবে ক্যাপিটালের কথাই আলোচিত হয়। বিগত দেড়শো বছর ধরে মানুষের চিন্তা ও কর্ম জগতে এই বইয়ের বিস্ময়সৃষ্টিকারী প্রভাব। ইতিহাসের অর্থনৈতিক ও বস্তুবাদী ব্যাখ্যায় ধনতান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থার স্বরূপই উন্মোচিত হয়নি এই বইয়ে, মার্কসীয় অর্থনৈতিক চিন্তার মর্মবস্তু ও পুঁজিবাদী ব্যবস্থার পরিণতির কথাও উঠে এসেছে । মার্কস যদি এই বইয়ের আগে ও পরে আর কোনও বই নাও লিখতেন, তাহলেও সামগ্রিক বিচারে বিদ্যাবুদ্ধির ঐশ্বর্য ও চিন্তার শ্রেষ্ঠত্বে তাঁর অবস্থান কোনোকালেই কারো চেয়ে কম হতো না এতটুকু। কিন্তু এই বইয়ের কথা শুনেছেন যত জন, পড়েছেন তার অনেক কম এবং বুঝেছেন তার চেয়েও অনেক কম সংখ্যক মানুষ। অবশ্য তার কারণ আছে। হেগেলের লজিক না পড়ে বিচ্ছিন্নভাবে ক্যাপিটালের প্রথম ভাগ বোঝা বেশ শক্ত। লেনিনও একবার বলেছিলেন সেকথা। একারণেই এই বইয়ের একটি সাধারণ ব্যাখ্যার প্রয়োজন। ১৮৬৭ থেকে ১৮৮৩-র মধ্যে প্রকাশিত হয়েছিল তিন খন্ডের এই বই। মানুষের চেতনা ও কর্মে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সৃষ্টিকারী এই বইটির তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতা, তুলে ধরা হয়েছে ২৫৬পৃষ্ঠার এই বইয়ে। কিন্তু সেটা বড় কথা নয়। বিষয়বস্তু নির্মাণশৈলী, ও তাঁর মেজাজটিকে যথাযথভাবে তুলে ধরবার চেষ্টা করেছেন লেখক, এখানেই তাঁর কৃতিত্ব। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি। আজকের চাহিদা ও যুগের দাবির কথা মনে রেখেছেন। ১৫০ বছরে প্রযুক্তি অর্থনীতি ও শিল্পে যে পরিবর্তন সংগঠিত হয়েছে সেই পরিবর্তনের নিরিখে মার্কসের ক্যাপিটালকে আধুনিক প্রেক্ষাপটে বিচার করেছেন সহজ সরল ভাষায়, কথার মারপ্যাচে নয়, একেবারে সরাসরি এবং সংক্ষেপে। আজকের তরুণ প্রজন্মের কাছে ডেভিড হার্ভের এই বই মার্কসের মূল বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে তুলবে।
Marx, Capital and the Madness of Economic Reason
David Harvey.
Profile books. 3 Hoford Yard, London. $24.95
Comments :0