জানা অজানা | নতুনপাতা
মহাকাশের খাবার
তপন কুমার বৈরাগ্য
মহাকাশ একদিন আমাদের কাছে রহস্যের বস্তু ছিল।আজ আমরা মহাকাশে পৌঁছে গেছি।সেখানে স্পেস স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। মানুষ মহাকাশে গিয়ে গবেষণা করছেন এবং অনেক রহস্যের
উদঘাটন করতে সমর্থ হচ্ছেন।মহাকাশকে মানুষ প্রায় হাতের মুঠোয় নিয়ে আসতে চলেছে । আজ আমরা গর্বিত সুনিতা উইলিয়ামসকে নিয়ে।যিনি ৮দিনের জন্য মহাকাশে গিয়ে
মহাকাশযানের গন্ডগোলের জন্য ২৮৬দিন পর পৃথিবীর মাটিতে ফিরে আসেন। অসীম মনের শক্তি না থাকলে কখনো এরকম খারাপ পরিস্থিতিকে জয় করা যায় না।মহাকাশে তাঁদের জন্য
খাবার পাঠানো হয়েছে।তারপর নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা তাঁদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছেন।মহাকাশের জয়যাত্রা শুরু হয়েছিল লাইকা নামক একটা কুকুরকে
মহাকাশে পাঠিয়ে।আমাদের দেশের কল্পনা চাওলার দেহ এখনো মহাকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে। সুনিতা উইলিয়ামস ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের ১৯শে সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর বাবার নাম দীপক পান্ডে।যিনি ছিলেন একজন ভারতীয়। ৬০বছর বয়েসে সুনিতার এই দুঃসাহসিক অভিযান কখনো ভুলবার নয়।মহাকাশে থেকে তাদের প্রতিদিন শরীর চর্চা করতে
হয়েছে এবং বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হয়েছে।দুঃশ্চিন্তায় তাঁদের সময় কেটেছে। পৃথিবী থেকে কোনো বস্তুকে পৃথিবীর বাইরে যেতে হলে তার মুক্তিবেগের মান সেকেন্ডে১১.২ কিমি হতে হবে।তাই একটা মহাকাশযানের কি অসম্ভব গতিবেগ তা কল্পনার অতীত। সুনিতা উইলিয়াম প্রথম মহাকাশ অভিযান শুরু করেছিলেন ৯ই ডিসেম্বর--২০০৬ খ্রিস্টাব্দে,দ্বিতীয় অভিযান শুরু করেছিলেন ১৪ই জুলাই ২০১২খ্রিস্টাব্দে,তৃতীয় অভিযান শুরু করেছিলেন ৫ই জুন ২০২৪খ্রিস্টাব্দে । প্রথম যখন পৃথিবী থেকে মহাকাশ অভিযান শুরু করা হয়েছিল তখন নরম খাবার মহাকাশে নিয়ে যাওয়া হতো।এই খাবারগুলো
টুথপেস্টের মতো টিউবে প্যাক করা থাকতো। বর্তমানে একটা মহাকাশযানে থাকে চুলা সহ পূর্ণ রান্নাঘর।মহাকাশে কোনো কিছু হাতছাড়া হলেই সেগুলো ভেসে বেড়াবে।তাই মহাকাশযাত্রীদের কোলে আটকে রাখতে হয় ভেলক্রো ফাস্টেনার নামক ট্রেগুলোকে। মহাকাশে ক্যালোরিযুক্ত খাবারের প্রয়োজন অনেক বেশি। একজন মহাকাশযাত্রীর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে ২৫০০ক্যালোরি থেকে৩৮০০ক্যালোরিযুক্ত খাবারের প্রয়োজন। মহাকাশে হাড়ের ক্ষয় ,পেশির ক্ষয়ের সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। একজন মহাকাশযাত্রীকে প্রতিদিন ২ঘন্টার মতন ব্যায়াম করতে হয়। একটা মহাকাশযানে ৫৩০গ্যালনের মতন পরিষ্কার জলের ওয়াটার ট্যাঙ্ক থাকে।এই জল খাওয়ার সাথে সাথে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য ব্যবহার করা হয়।একজন মহাকাশযাত্রীকে মহাকাশে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন
থাকতে হয়।এই জল মহাকাশযাত্রীদের ঘাম ও মূত্রকে পরিশ্রুত রাখে।জল দিয়ে স্যুপ,ক্যাসারোল এবং অন্যান্য সুষম খাদ্য তৈরি করা হয়।অনেক সময় বেসিক ফুড সাপ্লাই করা হয়।মহাকাশে হজমের সমস্যা দেখা দেয়। ঠিকসময় মতন স্বল্প পরিমাণ খাবার মহাকাশযাত্রীদের গ্রহণ করতে হয়।মহাকাশযাত্রীরা সুস্বাদু খাবারের দিকে এখন ঝোঁক দিয়েছেন।ব্রেকফ্রাস্ট হিসাবে স্ট্রবেরির মতো ফ্রিজে শুকনো ফলও গ্রহণ করেন।প্যাকেটজাত খাবারে তাঁরা প্রয়োজন মতো জল ঢেলে তাঁরা সেই খাদ্য গ্রহণ করেন। মহাকাশ হলো পৃথিবীর বাইরে অবস্থিত প্রসারিত স্থান। এটি কম ঘনত্বের হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের প্লাজমা দিয়ে
গঠিত। সম্পূর্ণ একটা অন্য পরিবেশ।তাই মহাকাশে যাবার আগে মহাকাশযাত্রীকে ভালোভাবে সবরকমের অভিজ্ঞতা অর্জন করে মহাকাশে পাড়ি দিতে হয়।
Comments :0