মুক্তধারা
বই
অচেনার আনন্দ সন্ধানে
ভবানীশংকর চক্রবর্তী
অচেনার আনন্দ পাবার লোভে মানুষের ভ্রমণবিলাস ।তার জন্য পৃথিবী ঘুরে বেড়াবার দরকার নেই।বিভূতিভূষণ তাই বলেছেন।কিন্তু তাই বলে ভ্রমণবিলাসী মানুষ দূরদূরান্তে ঘুরে বেড়াবে না ,এমন তো নয়। ঘুরে বেড়ায় মনের আনন্দে ।কেউ কেউ সেই আনন্দ বৃত্তান্তকে লিপিবদ্ধ করে গড়ে তোলেন ভ্রমণ সাহিত্য।সম্প্রতি প্রকাশিত নন্দিনী সরকার-এর 'ভুবনজোড়া আলোয় ঘোরা' বইটি এরকমই একটি ভ্রমণবৃত্তান্ত ।নন্দিনী নিজে তো ভ্রমণবিলাসী নিশ্চয়ই ।তাঁর ভ্রমণ অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির চারুকথা পাঠকের মনেও সেই তৃষ্ণা জাগায়।বইটির 'আমার কথা'য় নন্দিনী লিখেছেন- 'কখনো পাহাড়, কখনো নদী,কখনো বনের কোণে হাসা'।ভ্রমণের আনন্দঘন হাসিই তাঁর বইটির প্রতিপাদ্য ।ভ্রমণের সামগ্রিক বিবরণকে তিনি তিনটি পর্যায়ে বিন্যস্ত করেছেন- আন্তর্জাতিক,এ দেশে এবং কাছে পিঠে। যদিও এমন বিন্যাস যে খুব জরুরি ছিল, এমন নয়।আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আছে তিন পর্বে বাংলাদেশ ভ্রমণের কাহিনি ।
দ্বিতীয় পর্যায়ে ভারতভ্রমণ কথা।আর তৃতীয় পর্যায়ে বর্ণিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের কথা।নন্দিনীর ভাষা খুব সহজ।স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেরিয়ে এসেছে তাঁর ভ্রমণানন্দ কথা হয়ে।পর্বে পর্বে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও স্থাপত্য শিল্পের চমৎকার বর্ণনা।তারই একটু নমুনা-
'সুন্দর ছবির মতো রাস্তায় একটু এগিয়ে পৌঁছে গেলাম গোবিন্দজির মন্দিরে।অনেকটা এলাকা নিয়ে গড়ে ওঠা সাদা রঙের বিশাল বৈষ্ণব মন্দির।বাগান,নাটমন্দির নিয়ে সুন্দর করে সাজানো।দুটি সোনার পাতে মোড়া tomb আছে এই মন্দিরের।এখানে পূজিত হন একাধারে রাধাকৃষ্ণ ও অপরদিকে জগন্নাথ,বলরাম,
সুভদ্রা ।'
কমলেন্দু সরকার-এর প্রাককথন, অধ্যাপক তপনকুমার ঘোষ-এর মুখবন্ধ ও কয়েকটি রঙিন ছবি পাঠকদের বাড়তি পাওনা।
বইটির কমনীয় ও অনুভবী প্রচ্ছদ করে দিয়েছেন শ্যামসুন্দর গুই।কাগজ ও বাঁধাই মনোগ্রাহী।মাঝে মাঝে মুদ্রণ প্রমাদ চোখে পড়ে ।সব মিলিয়ে একটি ছিমছাম সংস্করণ।ভ্রমণ বিলাসীরা শুধু নয়,সকল রুচির পাঠক বইটি পড়ে আনন্দ পাবেন।
ভুবনজোড়া আলোয় ঘোরা
নন্দিনী সরকার
বনসৃজ পাবলিকেশন
১২এফ,কার্তিক চন্দ্র নিয়োগী লেন,
কলকাতা- ৭০০০৩৫
দাম- ২০০ টাকা
Comments :0