Bangla Bachao Yatra

বাংলা বাঁচাও যাত্রার প্রচার প্রস্তুতি তুঙ্গে জলপাইগুড়িতে

জেলা বাংলা বাঁচাও যাত্রা

জলপাইগুড়ি জেলার বর্তমান সামাজিক–অর্থনৈতিক বাস্তব এক গভীর সংকটের প্রতিচ্ছবি। চা বাগানের উপর দাঁড়িয়ে গড়ে ওঠা এই জেলার শ্রমজীবী মানুষের জীবন আজ আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বহু বেশি দুর্দশায় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বহু চা বাগান বন্ধ বা অর্ধ-চালু, অনিশ্চিত মজুরি, অর্ধ-বেতন, রেশন চিকিৎসার সঙ্কটে জর্জরিত চা শ্রমিক সমাজ ক্রমেই জীবনধারণের টানাপোড়েনে বিপর্যস্ত। নদী থেকে বালি পাথর লুটের ফলে কৃষিজমির ক্ষতি, কাজের অভাব, পাহাড়ি নদীর ধারে বেআইনি ক্রাসার স্থাপন সব মিলিয়ে জেলার কৃষক ও কৃষিশ্রমিকদের জীবিকা সঙ্কট গভীর হয়েছে। ভুটান ও সিকিম সীমান্তবর্তী এলাকায় এসব কার্যকলাপ চললেও কেন্দ্রীয় বাহিনী ও গোয়েন্দা দপ্তর নীরব। ফলে বহু মানুষ বাধ্য হচ্ছেন ঝুঁকিপূর্ণ দিনমজুরি, পাথর ভাঙা বা অস্থায়ী শ্রমে যুক্ত হতে।
ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, রাজগঞ্জ কিংবা বনবস্তির বহু শ্রমিক পেটের তাগিদে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বা অন্য দেশে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে চলে যাচ্ছেন। জীবন-জীবিকার খোঁজে যাত্রা শুরু করা অনেক শ্রমিক ফিরছেন লাশ হয়ে। এই বাস্তব আজ জলপাইগুড়ির প্রতিটি গ্রাম, বস্তি ও শ্রমিক লাইনে দৃশ্যমান। এরই মধ্যে বাগড়াকোট চা বাগানে শ্রমিকরা টানা রিলে অনশন চালাচ্ছেন বাগান চালু, ন্যূনতম মজুরি, রেশন, আবাসন ও স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করার দাবিতে। অস্থায়ী শ্রমিকদের স্থায়ীকরণ, কনট্রাক্ট প্রথা রদ ও পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তার দাবিও উঠছে জোরালোভাবে।
এই বহুমুখী বঞ্চনা ও সঙ্কটকে সামনে রেখে ৩০ নভেম্বর জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে অনুষ্ঠিত হবে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’। চা শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, বাগান চালুর নিশ্চয়তা, বালি পাথর মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বন্ধ, কৃষিজমি রক্ষা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, শিক্ষা স্বাস্থ্য, পানীয় জল, রাস্তার উন্নতি এবং শ্রমিকদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এই যাত্রার মূল লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি শহর, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, রাজগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় টোটো প্রচার, মাইকিং, পথসভা, বৈঠকি সভা সব মিলিয়ে শেষ মুহূর্তের প্রচার চলছে জোরকদমে। সদর সংলগ্ন কালিয়াগঞ্জ হাটে সিপিআই(এম)’র উদ্যোগে বাংলা বাচাও যাত্রার যাত্রীদের জন্য আহার সংগ্রহ, অর্থ সংগ্রহ, চাল ডাল সবজি ডিম সহ নানান সামগ্রী সংগ্রহের কর্মসূচিও চলছে।

Comments :0

Login to leave a comment