এসআইআর’র কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই সমস্যায় পড়েছেন শবর জনজাতির মানুষরা। আর তাদের সমস্যা নিয়ে জেরবার সেই বুথের ভারপ্রাপ্ত বিএলওরা। অনেক শবর বাড়ির পুরুষেরাই পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে অন্যত্র চলে গেছেন। কোথায় ভোটার কার্ড আছে, কোথায় আধার কার্ড আছে পরিবারের লোকজন সেটাও জানেন না। বিএলও কেই ফোন করে সমস্ত কিছু জোগাড় করতে হচ্ছে। তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও কয়েকজন ভোটার পরিযায়ী শ্রমিক হওয়ায় তাদের হাতে ফ্রম তুলেই দিতে পারেনি পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের ২৭২নম্বর বুথের বিএলও।
পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের ২৭২ নম্বর বুথ। পুরুলিয়া এক নম্বর ব্লকের অকরবাইদ গ্রাম। এই বুথে মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ১৬জন। তার মধ্যে ৭৫ জন ভোটার শবর জনজাতি পরিবারের। মূলত সেই জনজাতি ভোটারদের নিয়েই সমস্যায় পড়েছেন বিএলও। বুথের অন্যান্য জায়গায় কাজ ঠিকমতো এগিয়ে গেলেও শবর পরিবার গুলিকে নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন বিএলও। প্রায় প্রত্যেকদিন এই গ্রামে এসে তাদের এমুনারেশন ফর্ম বিলি করতে এলেও তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পারিযায়ী শ্রমিক ভিন রাজ্যে রয়েছেন। তাদের ফর্ম দেওয়া যাচ্ছে না। তাদেরকে ফোন করে আসার জন্য বলা হলেও তাঁরা ফিরে আসবেন কি না তা জানা নেই বিএলওর। এছাড়াও একাধিক ভোটারের নামের সাথে তাঁর স্বামীর নামের মিল নেই। অনেকের আবার আধার কার্ডও নেই। আধার কার্ড না থাকার সমস্যা ছাড়াও কাগজ পত্র ঠিক না থাকায় ফর্ম দেওয়া হলেও তা পূরণ করতে অসুবিধা হচ্ছে। শবর পাড়ার বাসিন্দা বৈশাখী শবর জানিয়েছেন, বাড়ির পুরুষেদের সংখ্যা এখন কমে গেছে। কেউ গেছে বর্ধমানে ধান কাটতে। কেউ গেছে ইঁটভাটায় কাজ করতে। ধান কাটার কাজ শেষ হওয়ার পর তারা ধান ঝাড়াইয়ের কাজ করেই তবেই ফিরবেন। সুন্দরী শবর নামে আরেক মহিলার বক্তব্য নামই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আধার কার্ড হয়নি। পরিবারের কোন ছেলেদেরই নাম নেই। অনেকের আবার আধার কার্ডের এবং ভোটার কার্ডের নাম পরিবর্তন হয়ে গেছে। রমা শবরের বক্তব্য কেউ গেছে চেন্নাই, কেউ গেছে গুজরাটে। কোন উপায় নেই। ফোন করে কথা বলার পরেও তাঁরা আসছেন না। চেন্নাই থেকে বা গুজরাট থেকে আসাও সম্ভব নয়। ওই বুথের বিএলও পীযুষ কান্তি ষড়ঙ্গী জানিয়েছেন, অনেকে আবার ফর্ম নিয়ে গিয়েও এখনও জমা দেননি। মহিলাদের বাপের বাড়ির ডিটেলস নেই। কারুর আবার বাবার নাম জানা থাকলেও মায়ের নাম জানা নেই। অন্য জায়গা থেকে আনাও সম্ভব হচ্ছে না। কাগজপত্র কোন কিছুই নেই এদের কাছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ভারপ্রাপ্ত বিএলও।
BLO in Purulia
মিলছে না এপিক, সরব গ্রামে নাজেহাল বিএলও
×
Comments :0