নতুনপাতা
বইকথা
দেড় ডজন গপ্পো
প্রদোষকুমার বাগচী
তোমাদের জন্য এবার একটা ছাগলছানা ও ষাঁড়ের গল্প বলছি। ছাগলছানাটি ষাঁড়কে দেখে মনে করল যে ওটাও একটা ছাগল হবে কারণ ওর তার মতই সিং আছে। কিন্তু সে কি করে অত বড় হলো এটাই তাকে ভাবিয়ে তুলল। সে তখন জানতে চাইলো যে কি করে সে অত বড় হয়েছে? উত্তরে ষাঁড়টি ছাগলটিকে বলল সে কেবল ঘাষ খেয়ে বড় হয়েছে। তখন ছাগলটিও সেই ঘাস খেতে চাইল। তাই ষাঁড়টি তাকে সেখানে নিয়ে গেল যেখানে সে ঘাস খায়। এত ভালো ঘাস দেখে ছাগলছানাটি সেদিন এত বেশি খেল যে সে আর বাড়ি যেতে পারলো না। কাছেই একটা গর্তে ঢুকে পড়ল রাত কাটাবে বলে। ওটা একটা শিয়ালের গর্ত ছিল। এদিকে রাতে শিয়ালটা এলে গর্তের দিকে তাকিয়ে ভাবল ওটা বুঝি রাক্ষস খোক্কস হবে। জিজ্ঞাসা করল গর্তের ভেতরে কে? ছাগলটার বুদ্ধি ছিল খুব। বলল— সিংহের মামা আমি নরহরি দাস/ পঞ্চাশ বাঘে মোর এক এক গ্রাস।এই কথা শুনে ভয় পেয়ে শিয়াল বাঘমামার কাছে গিয়ে বলল, সর্বনাশ হয়েছে নরহরি দাস এসেছে। ও এক এক গ্রাসে পঞ্চাশ বাঘ খেতে চায়। বাঘ রেগে নরহরি দাসকে জব্দ করতে শিয়ালকে নিজের লেজের সঙ্গে বেঁধে নিয়ে গর্তের সামনে চলে গেল। ওখানে যেতেই ছাগলটি বলে উঠল দশটি বাঘের কড়ি দিলুম আর একটা বাঘ নিয়ে এলিরে শিয়াল! এই শুনে বাঘও ভয়ে পালিয়ে গেল।আর ভাবল শিয়ালটাই শয়তান। এদিকে বাঘের লেজের সঙ্গে বাঁধা ছিল বলে পাথরের ধাক্কা ও কাটার আঁচড় খেয়ে দফা রফা হয়ে গেল শিয়ালটির। এভাবে শিয়ালের সেদিন ভারি সাজা হয়েছিল। রাত পেরোলে ছাগলছানা বাড়ি ফিরে এলো। কেমন লাগলো গল্পটি?
এটা হলো প্রথম গল্প। এর নাম ‘নরহরি দাস’। পরের গল্পের নাম বাঘমামা আর শিয়াল ভাগ্নে’। এই গল্পে ঐ শিয়ালটাই বাঘমামাকে জব্দ করেছিল। কি করে করেছিল তোমরাই পড়ে নিও। খুব মজা পাবে গল্পটি পড়ে।
অবশ্য বইটির সব কয়টি গল্পই মজার। একবার হাতে নিয়ে দেখো। পড়তে শুরু করলে আর ছাড়তে পারবে না। বইটিতে অন্যান্য আরও কয়েকটি গল্পের নাম বলছি— বোকা জোলা আর শিয়ালের কথা, কুঁজো বুড়ির কথা, উকুনে বুড়ির কথা— এই রকম দেড় ডজন গল্প আছে বইটিতে। এক ডজন মানে বারোটা। তাহলে দেড় ডজন মানে যে কতো সেটা আর তোমাদের বলে দিতে হবে না। সব শেষের গল্পেও আমরা দেখছি এখানেও একটা শিয়ালের গল্প আছে। শিয়ালটি খুব বুদ্ধিমান। সে একবার এক সওদাগরের চুরি হয়ে যাওয়া ঘোড়া বুদ্ধির বলে সওদাগরকে তা পাইয়ে দিয়েছিল। কিভাবে? সেকথঅ আর বলবো না। তোমরাই দেখে নিও। তখন বুঝতে পারবে যে বইটি কত ভালো আর মজাদার। কে লিখেছে জানো? উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। তিনি যে কে ছিলেন সেকথা পরে একদিন নাহয় বলব। এখন তো কোনও লাইব্রেরিতে গিয়ে দেড়ডজন গল্পের বইটি হাতে তুলে নাও। তারপর তোমাদের সঙ্গে নাহয় আবার কথা হবে।
দেড় ডজন গপ্পো
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। আদিত্য প্রকাশনালয়, ২৮/১ জাস্টিস মন্মথ মুখার্জি রো, কলকাতা— ৭০০ ০০৯।
Comments :0