ধূপগুড়ি পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে একটি প্লাস্টিকের গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল সোমবার দুপুরে। জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে তীব্র আতঙ্ক ছড়ায়। কালো ধোঁয়ার বিশাল শিখায় কার্যত ঢেকে যায় ধূপগুড়ি শহরের একটি অংশ। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও, গোডাউনের সমস্ত মালপত্র ভস্মীভূত হয়ে গেছে এবং পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জানা যায়, গোডাউনটিতে প্লাস্টিকের ক্যারেট এবং কাগজের কার্টুন বিপুল পরিমাণে মজুত ছিল। দাহ্য বস্তু মজুত থাকায় মুহূর্তেই আগুন বিধ্বংসী আকার ধারণ করে। আগুনের লেলিহান শিখা এতটাই ছড়িয়ে যায় যে তা নেভাতে দমকল কর্মীদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে দমকলের দুইটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। পরবর্তীতে আগুনের ভয়াবহতা দেখে পার্শ্ববর্তী ময়নাগুড়ি থেকেও আরও একটি ইঞ্জিন আনা হয়। দমকল কর্মীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় প্রায় তিন ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোডাউনের ভেতরে একটি টোটোতে চার্জ দেওয়ার সময় প্রথমে আগুন লাগে। সেখান থেকেই দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। গোডাউনের গেট বন্ধ থাকায় স্থানীয়রা প্রথমে ভেতরে প্রবেশ করে আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে পারেননি। মূহুর্তেই আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে গোডাউন দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে।
এই বিধ্বংসী আগুনে গোডাউনে মজুত সমস্ত মালপত্রই সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। এছাড়াও, গোডাউনের পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ায় বাড়িটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘটনাস্থলে দমকল বাহিনীর আধিকারিক রিন্টু কুমার সরকার জানান, প্রাথমিকভাবে পুরো গোডাউন ভস্মীভূত হয়েছে। তিনি আশঙ্কা করছেন, চার্জে বসানো টোটোর ব্যাটারির ওভারহিট হওয়ার কারণেই এই আগুনের সূত্রপাত। তিনি আরও বলেন, দমকলের তৎপরতায় পার্শ্ববর্তী বাড়িতে ছড়িয়ে পড়া আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
গোডাউন মালিক উত্তম ভৌমিক বলেন, "আগুনের তীব্রতায় সব শেষ হয়ে গেল। ১০-১২ বছর থেকে এখানে চটের বস্তা, প্লাস্টিকের ক্যারেট এবং কার্টুন মজুত ছিল।"
ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উত্তম ভৌমিক নামে এক ব্যক্তি প্রায় ১০ থেকে ১২ বছর ধরে এই জনবহুল এলাকায় গোডাউনটি চালাচ্ছিলেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গোডাউনে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা বলতে কিছুই ছিল না। একাধিকবার জনবহুল এলাকা থেকে গোডাউনটি সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হলেও তা করা হয়নি। এর আগেও একবার আগুন লেগেছিল, যা স্থানীয়রা নিভিয়ে দিয়েছিলেন। এদিনের এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন বিপর্যয় এড়াতে জনবসতি এলাকায় বিপজ্জনক গোডাউনগুলির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন।
Comments :0