Panchayat vote 2023

তৃণমূল ভোট লুট করতে এলে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ হবে

জেলা

 জনজোয়ার দেখল মালদহ। রবিবার।
এদিন পার্টির উদ্যোগে ৩টি সভা হয় জেলায়— কালিয়াচক ২নং ব্লকের উত্তর লক্ষ্মীপুরে, রতুয়া ২নং ব্লকের সম্বলপুরে এবং চাঁচলে। তিনটি সভাতেই অনেক মানুষের জমায়েত হয়েছিল। ছাত্র, যুবরা ছিলেন চোখে পড়ার মতো। সম্বলপুরের সভায় ২০০ তৃণমূলকর্মী মীনাক্ষী মুখার্জির উপস্থিতিতে লাল ঝান্ডা হাতে নেন।
তিনটি সভায় রাজ্যের যুব আন্দোলনের নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন,‘‘২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৎকালীন পরিবহণ মন্ত্রী, যিনি এখন বিজেপি নেতা, বলেছিলেন যারা বিরোধী শূন্য করবে সেইসব পঞ্চায়েতকে ৫ কোটি টাকা দেওয়া হবে। শাসক দলের কর্মীরা প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তায় ভোট কেন্দ্র ও গণনা কেন্দ্র লুট করে কার্যত বিরোধী শূন্য পঞ্চায়েত গঠন করে। সেই নেতারা এখন গণতন্ত্র, অবাধ ভোটের কথা বলছে? তৃণমূল এবং বিজেপি, কোনও দলেরই এই বিষয়ে কথা বলার অধিকার নেই। তবে এবার বিষয়টা এত সহজ হবে না। বামফ্রন্ট ও গণতান্ত্রিক শক্তি প্রথম থেকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে পথে আছে। বামফ্রন্ট কর্মীদের এই সব লুটেরাদের প্রতিরোধ করতে হবে। যারা ভোট লুট করতে আসবে তারা পায়ে হেঁটে এলেও যাতে অ্যাম্বুলেন্স করে ফেরত যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। আর প্রশাসন লুটেরাদের মদত দিলে তাদেরও ছেড়ে কথা বলা হবে না।’’
মুখার্জি বলেন, তৃণমূলকর্মীরা যেভাবে বোমাবাজি করছে, গুলি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করছে তা আড়াল করতে চাইছে পুলিশ। একজন তৃণমূল নেতা আগ্নেয়াস্ত্র সহ ধরা পড়লে এবং ছবি প্রকাশ্যে এসে গেলে তাকে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হয় পুলিশ। বলে কী দরকার ছিল আগ্নেয়াস্ত্র দেখাবার? আমাদের আর কিছু করা সম্ভব নয় গ্রেপ্তার করা ছাড়া। ভোট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যে খুন শুরু হয়ে গেছে। শুধু বিরোধী দলের নেতা কর্মীরা নয়, তৃণমূলীরাও খুন হচ্ছে। এদের পরিবারের শূন্যতা কি টাকা দিয়ে পূরণ করা সম্ভব? পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে। ভোটের সময় তা সে প্রচারে হোক, ভোটের দিন বা গণনার দিন যদি তৃণমূল কোনরকম গোলমাল করে, ভোট লুট করে তবে দায় শুধু তৃণমূলীদের নয়, দায় সম্পূর্ণ ভাবে পুলিশের। পুলিশের বেতন জোগায় মানুষ। মানুষের করের টাকায় তা দেওয়া হয়। সিভিক ভলান্টিয়ারদের উদ্দেশে তিনি বলেন,‘‘আমরা জানি আপনারা সামান্য বেতনে কাজ করেন। মনে রাখবেন উচ্চ আদালত নির্দেশ দিয়েছে সিভিকদের দিয়ে ভোটের কোন কোন কাজ করানো যাবে না। ভুলেও কোনও ভোট বা গণনা কেন্দ্রের আশেপাশে যাবেন না। তা সে সিভিকের পোশাক হোক বা অন্য পোশাক হোক। আপনারা যেমন ফটো তুলতে পারেন আমরাও পারি। কেউই রেহাই পাবেন না। আমাদের ছেলেদেরও বলছি ক্যামেরা নিয়ে থাকতে।’’
রাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ১৯৭৭ থেকে বামফ্রন্ট সরকারের পদক্ষেপগুলিও তিনি তুলে ধরেন।
তিনটি সভায় পার্টির মালদহ জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন,‘‘বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে মালদহে নদী ভাঙ্গন রোধে, রাস্তাঘাট উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া হয়েছিল। সেতু নির্মাণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছিল সেই সময়ে। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছিল। কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। শাসক দলের ভোট ও গণনা কেন্দ্র লুটের চেষ্টাকে বামফ্রন্ট কর্মীদের রুখতে হবে অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে।’’
উত্তর লক্ষ্মীপুরে সভাপতিত্ব করেন পার্টিনেতা মজিবুর রহমান। আসরাউল হক, শেফালী খাতুন, জেলা পরিষদের প্রার্থী নৈমুদ্দিন শেখ বক্তব্য রাখেন।  
সম্বলপুরের সভা পরিচালনা করেন পার্টিনেতা কুন্তল চ্যাটার্জি। সঞ্চালনা করেন ভুবন কুমার। উপস্থিত ছিলেন দেবজ্যোতি সিনহা, রেজাউল করিম, কাইসুল হক, জহুর আলম, সুশান্ত সিংহ, মোজাফার হোসেন। মালদহ জেলা গণনাট্য শাখা গণসঙ্গীত পরিবেশন করে। চাঁচলে সভাপতিত্ব করেন নিমাই সাহা। সভায় বলেন পার্টিনেতা জমিল ফিরদৌস, প্রণব দাস, প্রণব চৌধুরি, আরজাউল হক, মানোয়ারুল আলম, হারুণ অল রসিদ, মিনারুল হোসেন, সহদেব দাস।

Comments :0

Login to leave a comment