JANA AJANA — Bertha von Suttner / "anti-war movement" — NATUNPATA - 1 SEPTEMBER

জানা অজানা — তপন কুমার বৈরাগ্য / নতুনপাতা / ১ সেপ্টেম্বর

ছোটদের বিভাগ

JANA AJANA  Bertha von Suttner  anti-war movement  NATUNPATA - 1 SEPTEMBER

জানা অজানা

শান্তির রানি বের্থা ফন সুটনার
তপন কুমার বৈরাগ্য

বের্থা ফন সুটনারের জন্ম ১৮৪৩ সালের ৯ই জুন।
চেক প্রজাতন্তের প্রাগ শহরে তিনি জন্ম গ্রহণ
করেন। ছোটবেলা থেকে দারুণ দুঃখ কষ্টের মধ্যে
তিনি মানুষ হন।১৮৬৭ সাল।আলফ্রেড নোবেল
তখন ডিনামাইট আবিষ্কার করেন।  বের্থা কাজের
সন্ধানে তখন এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
অনেক কষ্টে এক ধনীর সন্তানের গৃহ শিক্ষকের
দায়িত্ব পেলেন।সেখানে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী তাঁর
উপর নিষ্ঠুর ব্যবহার করতেন।তিনি এই কাজের
থেকে অব্যাহতি পাবার চেষ্টা করছিলেন। 
১৮৭৬ সালে আল ফ্রেড নোবেলের একটি
বিজ্ঞাপন তাঁর চোখ পড়ল।তখন সারা পৃথিবী
জুড়ে আলফ্রেড নোবেলের জয়জয়াকার।
আলফ্রেড নোবেল বিজ্ঞাপনে লিখেছেন 
আমার একজন গৃহকর্ত্রীর প্রয়োজন।
সত্ত্বর যোগাযোগ করুন।


বের্থা ফন সুটনার এই সুযোগ হাতছাড়া করতে
চাইলেন না। তিনি চলে এলেন প্যারিসে। ইন্টারভিউ
দেবার পর আলফ্রেড নোবেল তাকেই গৃহকর্ত্রী
হিসাবে নিযুক্ত করলেন। ইতিমধ্যে বের্থা কতকগুলো
ভয়াবহ যুদ্ধের সাক্ষী হয়ে থাকলেন।এই যুদ্ধগুলো
হলো অ্যামিয়েন্সের ফ্রাঙ্কো যুদ্ধ,দ্বিতীয় ইঙ্গ আফগান
যুদ্ধ,ফ্রাঙ্কো প্রুশিয়ান যুদ্ধ। বের্থা দেখলেন এইসব
যুদ্ধের জন্য পরোক্ষভাবে আলফ্রেড নোবেল দায়ী।
তাঁল অস্ত্র কারখানা থেকে যুদ্ধের জন্য প্রচুর
কোটি কোটি টাকা অস্ত্র বিক্রি হচ্ছে। আর নোবেল
ফুলে ফেঁপে উঠছেন।তখন গৃহকর্ত্রী হিসাবে নোবেলের
কাছে বের্থা বেশ সম্মান অর্জন করেছেন। তিনি
একদিন আলফ্রেডকে এই ধ্বংসাত্মক কাজ
থেকে সরে আসতে বললেন।কিন্তু আলফ্রেড
কিছুতেই রাজি হলেন না। বার্থা আলফ্রেডের
মুখ থেকে শুনেছিলেন ১৯৬৪ সালে আলফ্রেড
নোবেলের ভাই এমিল বিস্ফোরণে মারা যান।
যার জন্য দায়ী ছিলেন আলফ্রেড নোবেল।


আলফ্রেড নোবেল বের্থাকে জানান ভাইয়ের
মৃত্যুতেও তিনি একাজ থেকে সরে আসেন
নি।তখন হতাশ হয়ে বের্থা ফন সুটনার গৃহকর্তীর
কাজ ছেড়ে দিলেন।১৮৯১ সালে প্যারিসে তিনি
শান্তিকামী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।শান্তির বার্তা
নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে যান। যুদ্ধের
বিভীষিকা দেখে মানুষ তিতিবিরক্ত।লক্ষ লক্ষ
মানুষ তার সংগঠনে সামিল হয়ে প্রচার করতে
লাগলেন--যুদ্ধবাজ নিপাত যাক।যুদ্ধ নয় শান্তি চাই।
এর ফাঁকে ফাঁকে বের্থা আলফ্রেডকে চিঠি লিখতে
থাকলেন।প্রতিটা চিঠিতে সেই একই বক্তব্য
আপনি মানব কল্যাণে এগিয়ে আসুন।


বার বার চিঠি পাওয়ার পর আলফ্রেড
বুঝতে পারলেন তাঁর আবিষ্কৃত ডিনামাইট
সত্যিই ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি ২৭শে নভেম্বর ১৮৯৬ সালে এক উইল
করে যান।যে অর্থ মানুষের কল্যাণে ব্যবহার
করা।যা নোবেল পুরস্কার হিসাবে দেওয়া হয়
তাঁর মৃত্যুদিন ১০ই ডিসেম্বরে। শান্তির সপক্ষে
প্রথম মানুষের মধ্যে প্রথম বিপ্লব এনেছিলেন
বের্থা ফন সুটনার।১৯০৫ সালে তিনি প্রথম
নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। পয়লা
সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক যুদ্ধ বিরোধী দিবস।
এদিন বের্থা ফনকে বেশি করে মনে করার দিন। 

Comments :0

Login to leave a comment